তীব্র আলো পড়লে চোখ ধাঁধিয়ে যায়? রাতে গাড়ি চালানোর সময় কোন কোন বিষয় মাথায় রাখবেন?

গাড়ি চালাতে ভালবাসেন। দিন দুয়েকের ছুটি পেলেই বেরিয়ে পড়েন নিরুদ্দেশের পথে। দিনের বেলা, চেনা রাস্তা হলে এক রকম, কিন্তু রাতে গাড়ি চালাতে ভয় পান। বিশেষ করে উল্টো দিক থেকে আসা তুলনায় উঁচু যানগুলি থেকে বিচ্ছুরিত আলোকরশ্মিকে। সেই আলো এমন ভাবে চোখে এসে প্রতিফলিত হয় যে, একেবারে ধাঁধা লেগে যাওয়ার জোগাড়। হাতে গাড়ির স্টিয়ারিং নিয়ে ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলবেন, তা-ও সম্ভব নয়।

রাস্তার অবস্থা, সামনে-পিছনে বা দু’পাশের গাড়ির সঙ্গে দূরত্ব কিংবা তাদের গতিবিধি, বিশেষ কোনও সঙ্কেত চোখের আন্দাজে বুঝতে না পারলে রাতে গাড়ি চালানো মুশকিল। চোখের এই ধরনের জটিলতাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় ‘অ্যাজ়টিগমাটিজ়ম’ বলা হয়। কর্নিয়া বা চোখের লেন্সের আকার সামান্য বিকৃত হলে কোনও একটি নির্দিষ্ট বস্তু বা দিকের প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করা যায় না। ফলে উল্টো দিকে থাকা বস্তুটিকে ঝাপসা দেখায়। এমন অবস্থায় অবশ্যই জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, গাড়ি চালাতে গেলে প্রতিটি ইন্দ্রিয়কে সজাগ রাখতে হয়। চোখের এই ধরনের সমস্যা থাকলে রাতে গাড়ি না চালানোই শ্রেয়। তবে একান্ত যদি চালাতেই হয়, সে ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় জেনে রাখা প্রয়োজন।

১) গাড়ির সামনের কাচ, অর্থাৎ ‘উইন্ডশিল্ড’ পরিষ্কার রাখতে হবে। গাড়ির জানলার দু’পাশে এবং মাথার উপরে যে আয়না থাকে, তার গায়ে ধুলো জমে থাকলেও পিছন থেকে আসা গাড়ির গতিবিধি আন্দাজ করতে সমস্যা হতে পারে।

২) চোখের সুবিধা-অসুবিধা বুঝে গাড়ির হেডলাইটের অবস্থান ঠিক করে নিতে হবে। এক এক জন চালকের উচ্চতা এক এক রকম হয়। সেই বুঝে ঠিক কোথায় আলো ফেললে দেখতে অসুবিধা হবে না, তা ঠিক করে নেওয়া উচিত। উল্টো দিক থেকে আসা গাড়ির আলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কখন আলো ‘আপার’ করতে হবে, আর কখন ‘ডিপার’, তা-ও বুঝে নেওয়া জরুরি।

৩) উল্টো দিক থেকে চোখের উপর তীব্র আলো এসে পড়লেও সমস্যা হতে পারে। তার জন্য ড্যাশবোর্ডের আলো যতটা সম্ভব কমিয়ে রাখতে হবে। উল্টো দিক থেকে আসা গাড়ির আলোর দিকে সোজাসুজি তাকালে চোখ ধাঁধিয়ে যেতে পারে। রাতে গাড়ি চালানোর সময়ে এই সব বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

৪) দীর্ঘ ক্ষণ এক ভাবে গাড়ি চালালে চোখ ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারে। তাই মাঝেমাঝে বিরতি নিয়ে চোখের ব্যায়াম করা যেতে পারে। ঘন ঘন চোখের পলক ফেললেও এই ধরনের সমস্যা অনেকটা এড়ানো যায়। হাতের কাছে ওয়েট টিস্যু রাখতে পারেন। চোখের উপর মিনিটখানেক তা রাখলেও ক্লান্তি দূর হয়। চোখের আর্দ্রতাও বজায় থাকে।

৫) রাতে গাড়ি চালানোর জন্য আলাদা করে চশমা কিনতে পাওয়া যায়। চোখের ‘পাওয়ার’ না থাকলেও প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তেমন চশমা পরা যেতে পারে। এই ধরনের চশমাগুলি উল্টো দিক থেকে আসা আলোর ঔজ্জ্বল্য হ্রাস করতে সহায়তা করে। ফলে চোখের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে না। চোখের ক্লান্তি কাটাতেও সাহায্য করে এই ধরনের চশমা।