নিজেকে সুস্থ-সচল রাখতে নিয়মিত কার্ডিও করতেন তিনি। ছবি: সংগৃহীত
একটা গোটা প্রজন্ম তাঁর গানে শুনে প্রেমে পড়েছিল। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গুরুদাস কলেজের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নজরুল মঞ্চের উপচে পড়া ভিড়ও তিনি মাতিয়ে রেখেছিলেন তাঁর সুরের জাদুতেই। ‘হম, রহে ইয়া না রহে কাল...’ মাইক্রোফোন হাতে গান ধরতেই দর্শকের উল্লসিত চিৎকারে ফেটে পড়েছিল গোটা অ়ডিটোরিয়াম। এই উল্লাস শুধু মঞ্চে থাকা গায়কের মুগ্ধ করা গায়কীর জন্য। তিনি যে বলিউডের নেপথ্য গায়ক কৃষ্ণনাথ কুনাথ— সকলের প্রিয় কেকে। কিন্তু মঙ্গলবার সন্ধেয় গোটা ছবিটা এ ভাবে এক নিমেষে বদলে যাবে কে জানত! অনুষ্ঠান শেষে মধ্য কলকাতার এক বিলাসবহুল হোটেলে ফিরতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন কেকে। চিকিৎসকদের প্রাথমিক ধারণা হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে কেকের। তবে সঠিক কারণ জানা যাবে ময়নাতদন্তের পর।
অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, অনিয়মিত খাওয়াদাওয়া, প্রবল মানসিক চাপ থেকেই মূলত জন্ম নেয় হৃদ্রোগ। দর্শকের প্রত্যাশা পূরণের চাপ সব শিল্পীরই থাকে। কেকেরও নিশ্চয় ছিল। কিন্তু কেকের প্রাত্যহিক জীবনযাপন যথেষ্ট স্বাস্থ্যকর ছিল। নিজেকে অত্যন্ত শৃঙ্খলায় বেঁধে রেখেছিলেন। কোনও ভাবে সংক্রমিত হয়ে পড়তে পারেন এই আশঙ্কায় কোভিডের সময়ে কোনও লাইভ অনুষ্ঠান করতে চাননি তিনি। এর থেকে বোঝা যায় তিনি যথেষ্ট শরীর সচেতন।
৫৪ বছরেও যেমন স্বতঃস্ফূর্ত মঞ্চ মাতিয়ে রাখতেন ভিতর থেকে ফিট না হলে এমনটা সম্ভব হত না। নিজেকে সুস্থ-সচল রাখতে নিয়মিত কার্ডিও করতেন তিনি। ট্রেডমিলে হাঁটতেন। বাইসেপস্ করতেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন পায়ের ব্যায়াম করতেন তিনি। কাজের চাপ থাকলেও নিজেকে সব সময় চিন্তামুক্ত রাখার চেষ্টা করতেন। অবশ্য সূত্রের খবর, চাপ কাটাতে মাঝেমাঝে ধূমপানও করতেন তিনি।
শরীরচর্চার পাশাপাশি খাওয়াদাওয়াতেও বিধিনিষেধ মেনে চলতেন। সকাল শুরু করতেন ২-৩ গ্লাস গরম জল খেয়ে। তার পর একটু বেলা বাড়লে জলখাবারে থাকত ডিম সেদ্ধ, মরসুমি ফল। কোনও দিন থাকত দুধ কর্নফ্লেক্স কিংবা ওটমিল। দুপরে তিনি হালকা খাবার খেতেন। সব্জি সেদ্ধ, স্যালাড থাকত তাঁর দুপুরের খাবারে। কেকে এমনিতে স্বল্পাহারী। রুটি, ডাল এবং সব্জি দিয়েই রাতের খাওয়া সারতেন তিনি। মদ্যপান করতেন না বলেই জানিয়েছেন তাঁর নিকট বন্ধুরা। পরিমিত জীবনযাপন করেও কি হার্ট অ্যাটাক হল তাঁর? নাকি মৃত্যুর পেছনে রয়েছে অন্য কোনও কারণ— ভাবাচ্ছে তাঁর অসংখ্য অনুরাগীকে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy