Advertisement
E-Paper

ডান-বাঁ বোঝেন না কৃতি, রাস্তার মাঝে ছেড়ে দিলে হারিয়ে যাবেন, কোন রোগে ভুগছেন বলি নায়িকা?

দিগ্‌ভ্রম হয় তাঁর। ডান-বাঁ গুলিয়ে যায়। কৃতির মতো ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এই রোগ আরও বেশি সমস্যার। আপাত ভাবে খুব সাধারণ অসুখ বলে মনে হলেও রোজ এই সমস্যার সঙ্গে বোঝাপড়া করা আদপে সহজ নয়।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২৫ ১১:৩১
দিকনির্দেশ বুঝতে অসুবিধা হয় কৃতি সেননের।

দিকনির্দেশ বুঝতে অসুবিধা হয় কৃতি সেননের। ছবি: সংগৃহীত।

তিনি ‘পরমসুন্দরী’। তিনি জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী। তাঁর অনুরাগী ও অনুগামীর সংখ্যা আকাশছোঁয়া। কিন্তু সেই ভক্তরা জানেনই না, কৃতি সেনন বিশেষ রোগের শিকার। আপাত ভাবে খুব সাধারণ অসুখ বলে মনে হলেও রোজ এই সমস্যার সঙ্গে বোঝাপড়া করা আদপে সহজ নয়।

দিগ্‌ভ্রম হয় তাঁর। ডান-বাঁ গুলিয়ে যায়। কৃতির মতো ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এই রোগ আরও বেশি সমস্যার। বলিউডের নায়িকার কথায়,‘‘আমার ব্যাপারে কেবল একটি জিনিসই জানেন না আমার অনুরাগীরা। তা হল, আমার দিকের জ্ঞান নেই। আমার বন্ধুরা সে সব নিয়ে মস্করা করে ভীষণ। এমনকি কোনও একটিই জায়গায় যদি আমি ৫০ হাজার বারও যাই, তা-ও চিনতে পারব না। কোথাও কখনও কোনও মাঝরাস্তায় ছেড়ে দিলে আমি হারিয়ে যাব। সেই মুহূর্তে আমি বুঝেই উঠতে পারি না, কোন দিকে যেতে হবে। আসলে আমি যখন অনেকের সঙ্গে রাস্তায় হাঁটি, তখন কেবল তাঁদের অনুসরণ করি। নিজে চিনে কোথায় যাইনি।’’

রাস্তাঘাটে কেউ কেউ দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে যান কেন?

রাস্তাঘাটে কেউ কেউ দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে যান কেন?

ছোটবেলায় রোজের যাতায়াতের রাস্তার ক্ষেত্রেও একই সমস্যায় ভুগতেন কৃতি। বাড়ি থেকে স্কুলের রাস্তা পুরোপুরি চিনে ফেলতেও অনেকখানি সময় লেগেছে তাঁর। খ্যাতনামী হওয়ার পর হয়তো দেশের রাস্তায় তত বেশি হাঁটা হয় না, কিন্তু বিদেশের রাস্তায় হেঁটে হেঁটেই ঘোরেন তিনি। কত বার যে লন্ডনে গিয়েছেন, তা হাতে গোনা যাবে না। অথচ সেখানেও যদি তাঁকে একা রাস্তায় রেখে আসা হয়, তিনি দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে যাবেন।

দিক্‌নির্ণয় করার ক্ষমতা কারও কারও কম হয় কেন?

দিগ্ভ্র‌মের সমস্যা হওয়ার বেশ কিছু কারণ থাকে। আলোচনা করলেন স্নায়ুরোগ চিকিৎসক এবং নিউরো রিহ্যাবিলিটেশন বিশেষজ্ঞ সুপর্ণ গঙ্গোপাধ্যায়। চিকিৎসকের কথায়, ‘‘একাধিক কারণে এই সমস্যা দেখা যায় মানুষের মধ্যে। প্রথমত, বয়স্কদের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের বিভিন্ন রোগের কারণে এটি ঘটতে পারে। দ্বিতীয়ত, যাঁরা রাস্তাঘাটে তত বেরোন না, তাঁদেরও দিক বুঝতে অসুবিধা হতে পারে। তৃতীয়ত, অনেকেই রাস্তায় চলার সময়ে মনোযোগ দেন না বলে দ্রুত দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে যেতে পারেন। চতুর্থত, জিপিএস বা ডিজিটাল ম্যাপ ব্যবহার করতে করতে মানুষের মস্তিষ্ক নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে। ফলে এই ধরনের সমস্যা আরও দেখা যাবে।’’

কিন্তু যদি স্নায়ু এবং মস্তিষ্কের বিজ্ঞানের দিক থেকে বলা হয়, তা হলে এর নেপথ্যে মস্তিষ্কের ফ্রন্টাল, টেম্পোরাল লোব এবং হিপোক্যাম্পাসের ভূমিকা রয়েছে বলে জানালেন চিকিৎসক। মস্তিষ্কের এই এলাকায় কম্পাসের মতো প্রক্রিয়া চলে। সেখান থেকেই দিক্‌নির্ণয় করার ক্ষমতা তৈরি হয়। যাঁদের দিক্‌নির্ণয় করার ক্ষমতা প্রখর, তাঁদের মস্তিষ্কের এই এলাকাগুলি তুলনায় বড় এবং বেশি সক্রিয়। সুপর্ণ গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘অনেকের ছোট থেকে ডিজ়লেক্সিয়া বা ডিজ়প্র্যাক্সিয়ার মতো রোগ থাকে বা অন্যান্য মস্তিষ্কজনিত সমস্যাও থাকে। তাঁদের জন্যও দিক নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে যেতে পারে। তাঁদের ক্ষেত্রে চিকিৎসা আলাদা। কিন্তু বাকিরা অনুশীলনের মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে সমাধানের মুক্তি পাওয়ার পথ খুঁজতে পারেন। নানাবিধ উপায় আছে সেখানে। নিজের মস্তিষ্কের মধ্যে মানচিত্র কল্পনা করে, জিপিএস ব্যবহার কমিয়ে, হেঁটেচলে বেড়িয়ে ইত্যাদি উপায়ে দিক নির্ধারণ করার ক্ষমতা ফিরে পেতে পারেন। ক্রমাগত একই ধরনের কাজ করে যেতে থাকলে মস্তিষ্কের অনুশীলন হয়। আর তাতে নিউরোপ্লাস্টিসিটি বাড়তে থাকে। তাতে স্পেশিয়াল রিজ়নিং (নিজের অবস্থান সম্পর্কে জ্ঞান) তৈরি হতে সুবিধা হয়।’’

Kriti Sanon Health Tips Brain Diseases
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy