শরীর ভাল রাখতে মধুর জুড়ি মেলা ভার। ওজন কমাতে সকালে অনেকেই ঈষদুষ্ণ জলে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খেয়ে থাকেন। বাড়ির ছোটদেরও মধু খাওয়ানো হয়। বিশেষ করে শীত পড়লে নিয়মিত সকালে এক চামচ করে মধু খান অনেকেই। এতে সর্দি-কাশি বা ঠান্ডা লাগার সমস্যা দূর হয়। মধু খেলে তখনই উপকার হবে, যখন তা খাঁটি হবে। বাজারে অনেক রকম ভেজাল মধু বা প্রক্রিয়াজাত মধু বিক্রি হয়, যার পুষ্টিগুণ নেই বললেই চলে। তাই মধু কেনার সময়ে অবশ্যই যাচাই করে নেবেন।
মধুর চাহিদা যতই বেড়েছে, ততই এর জোগানে এসেছে ভেজাল। নামী ব্র্যান্ডের মধুতেও নানা সময়ে মিলেছে ভেজাল। এমনকি সুন্দরবনের খাঁটি মধুর নামে ভেজাল মেশানো মধুও বিক্রি হয় নানা জায়গায়।
কী কী মেশানো হয় মধুতে?
কর্ন সিরাপ, বিটের রস, চিনি, সুজি মিশিয়ে আসল মধুর মতো ঘনত্ব তৈরির চেষ্টা করা হয়। কিছু ক্ষেত্রে মধুতে গ্লুকোজ়, ফ্রুক্টোজ় ও অ্যামাইনো অ্যাসিডও মিশিয়ে দেওয়া হয়। বিভিন্ন ধরনের খনিজ লবণও মেশানো হয় মধুতে। তাই বাড়িতে যে মধু এনে খাচ্ছেন, তা আসল না নকল, চিনে নেওয়া জরুরি। খাবারে ভেজাল মেশানো আছে কি না, তা জানতে খাদ্যের গুণমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা (এফএসএসএআই)-র বলে দেওয়া কিছু পদ্ধতি আছে। সেগুলি কী কী, জেনে নিন।
খাঁটি মধু চেনার উপায়
জলে পরীক্ষা
এক গ্লাস জলে এক চামচ মধু দিয়ে দেখুন। মধু যদি দলা পাকিয়ে গ্লাসের তলায় গিয়ে জমা হয়, তা হলে সেই মধু খাঁটি। তবে যদি জলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মিশে যায়, তা হলে বুঝবেন, সেই মধুতে ভেজাল মেশানো আছে।
ঘনত্ব পরীক্ষা
খাঁটি মধুর ঘনত্ব অনেক বেশি হয়। চামচ দিয়ে তুললে থকথকে হয়ে চামচে লেগে থাকবে। আঙুলের ডগায় সামান্য মধু নিন। খাঁটি মধু দলা বা পিণ্ডের মতো হয়ে থাকবে, গড়িয়ে পড়বে না। ভেজাল মধু খুব তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে যাবে।
আরও পড়ুন:
শিখা পরীক্ষা
একটি দেশলাই কাঠি বা তুলোর উপর সামান্য মধু মাখিয়ে নিন। এ বার তাতে আগুন ধরানোর চেষ্টা করুন। খাঁটি মধুর আর্দ্রতা কম, সহজেই আগুন ধরবে। ভেজাল মধুতে জল মেশানো থাকে, ফলে আগুন সহজে ধরতে চাইবে না।
তাপের পরীক্ষা
একটি বাটিতে খানিকটা মধু ঢেলে নিন। এ বার কম আঁচে গরম করুন। খাঁটি মধু হলে সোনালি রঙের থকথকে মিশ্রণ তৈরি হবে। সুন্দর গন্ধও বেরোবে। কিন্তু ভেজাল মেশানো থাকলে তাতে বুদবুদ তৈরি হবে, পুড়তে শুরু করবে।
জমাট বাঁধবে
যে মধু শিশিতে রাখছেন, বেশ কিছু দিন পরে দেখবেন, তা জমাট বেঁধে ক্রিস্টাল তৈরি করেছে। খাঁটি মধু হলেই এমন হবে।
ভিনিগার দিয়ে পরীক্ষা
এক চামচ মধুর মধ্যে কয়েক ফোঁটা ভিনিগার মেশান। যদি দেখেন ধোঁয়া বার হচ্ছে, তা হলে বুঝতে হবে, সেই মধু খাঁটি নয়। আসল মধু প্রাকৃতিক ভাবেই অম্ল। কাজেই ভিনিগারের সঙ্গে মিশলে কোনও রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া হবে না।