নিজের উচ্চতা নিয়ে খুশি নন? আরও লম্বা হতে চান? তার জন্য হিল জুতো পরার প্রয়োজন নেই। ডায়েট ও শারীরিত কসরত করার ধারও ধারছেন না কমবয়সিরা। তাই সহজ পন্থা অস্ত্রোপচার। উচ্চতা বৃদ্ধির অস্ত্রোপচারও হচ্ছে এখন। বহু মানুষ সে স্রোতে গা ভাসাচ্ছেন। উচ্চতা বৃদ্ধির এ হেন অস্ত্রোপচারের নাম ‘লেগ লেনদেনিং সার্জারি’ বা ‘হাইট গ্রোথ সার্জারি’। পায়ের হাড় কেটে লম্বা হওয়ার এই অস্ত্রোপচার যেমন খরচসাপেক্ষ, তেমনই যন্ত্রণাদায়ক। আদৌ কি তা নিরাপদ?
লম্বা হতে ছুরি-কাঁচি চালাতে হবে পায়ে
খোদার উপর খোদকারি করার মাশুল ভয়ঙ্কর হতে পারে। ব্রিটেনের ‘ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিস’ (এনএইচএস) জানিয়েছে, লম্বা হওয়ার এই পদ্ধতি মোটেই সহজ নয়। যথেষ্টই জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ। অস্ত্রোপচার করতে হলে ঊরুর হাড় ফিমার বা টিবিয়ার একটা অংশ কেটে ফেলা হয়। এ বার ফাঁকা জায়গায় বসিয়ে দেওয়া হয় চৌম্বকীয় দণ্ড বা পিন। অনেক সময়ে তার দিয়েও জুড়ে দেওয়া হয় হাড়। তার পর সেখানে বসানো হয় একটি ডিভাইস। এর কাজ হল হাড়ের কাটা অংশকে আরও প্রসারিত করে সেখানে নতুন হাড় তৈরি করা। পাশাপাশি, নতুন কোষও তৈরি করা। এই ধরনের অস্ত্রোপচারকে বলা হয় ‘অস্টিয়োটমি’। অস্ত্রোপচার সময়সাপেক্ষ ও দীর্ঘ দিন ধরে তার প্রক্রিয়া চলে।
গবেষকেরা জানাচ্ছেন, জন্মগত ভাবে পায়ের কোনও সমস্যা থাকলে বা পায়ের হাড়ের গঠনে ত্রুটি থাকলে এই ধরনের অস্ত্রোপচার করা হয়। তবে নিছক লম্বা হওয়ার কারণে হাড়ের স্বাভাবিক গঠন ও বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে বাধা দিলে তাতে হিতে বিপরীতই হতে পারে।
কী কী সমস্যা হতে পারে?
প্রথমত, কাটা জায়গায় হাড় ও পেশির বৃদ্ধি ঠিক মতো না-ও হতে পারে। তাতে পা ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে।
দ্বিতীয়ত, দুই পায়ের দৈর্ঘ্য সামঞ্জস্যপূর্ণ না-ও হতে পারে। একটি পা ছোট ও অন্য পা বেশি লম্বা দেখাবে।
তৃতীয়ত, অভিজ্ঞ হাতে অস্ত্রোপচার না হলে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে। এতে পক্ষাঘাত হওয়ার আশঙ্কাও থাকবে।
অস্টিয়োটমি অস্ত্রোপচারের পরবর্তী পর্যায় আরও যন্ত্রণাদায়ক। অস্ত্রোপচারের পর প্রথম তিন থেকে চার মাস ঠিকমতো হাঁটাচলাই করা যাবে না। যত দিন না কাটা জায়গায় নতুন হাড় গজাবে, তত দিন হুইলচেয়ারে বন্দি থাকতে হতে পারে। হাড়ের বৃদ্ধি যখন হবে, তখন নিদারুণ যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে। কিছু ক্ষেত্রে পেশিতে টান ধরা ও স্নায়ুর অসাড়তাও দেখা দিতে পারে। এই ধরনের অস্ত্রোপচারের খরচ ৫০ লাখের বেশি। তাই কৃত্রিম উপায়ে উচ্চতা বৃদ্ধির চেষ্টা না করে বরং শারীরিক কসরতের উপরেই জোর দিতে বলছেন গবেষকেরা।