হৃত্বিক রোশন হোন বা টাইগার শ্রফ কিংবা জন আব্রাহাম— তারকাদের সুঠাম গড়ন পুরুষ, মহিলা নির্বিশেষে নজর কাড়ে সকলেরই। শাহরুখ হোন বা আমির খান, বিভিন্ন সিনেমায় তাঁদের ‘সিক্স প্যাক’ দেখে শরীরচর্চায় বাড়তি উৎসাহ পেয়েছেন অনেকেই। মেদহীন সুঠাম গড়ন, সিক্স প্যাকের আকর্ষণে ওজন নিয়ে ব্যায়াম করার প্রবণতাও বাড়ছে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে। তাঁদের সকলেই যে জিমে যাচ্ছেন, তা কিন্তু নয়। সমাজমাধ্যমের দৌলতে ভিডিয়ো দেখে কেউ কেউ বাড়িতেই জিমের মতো যন্ত্রপাতি এনে শরীরচর্চাও করছেন। নিজের মতো করে ওজনও তুলছেন।
আরও পড়ুন:
প্রশ্ন হল, দীর্ঘ দিন ভারী ওজন নিয়ে শরীরচর্চা করলে কি মাংসপেশি, হাড়ের ক্ষতি হতে পারে? এমনটা যে হয়, মনে করেন অনেকেই। তবে ফিটনেস প্রশিক্ষক বিনোদ চন্না বলছেন অন্য কথা।
মুম্বইয়ের এই ফিটনেস প্রশিক্ষককে লোকে চেনেন অম্বানী পরিবারের দৌলতে। এক সময় অনন্ত অম্বানী এবং নীতা অম্বানীর ওজন কমানোর দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। সে কাজে সাফল্য তাঁকে বিশেষ পরিচিতি দেয়। বি টাউনের শিল্পা শেট্টি, অর্জুন রামপাল, বিবেক ওবেরয়, জন আব্রাহাম-সহ অনেক তারকাই বিনোদের মতামত নিয়ে শরীরচর্চা করেন।
বিনোদ তাঁর নিজস্ব ওয়েবসাইটে জানাচ্ছেন, ওজন নিয়ে শরীরচর্চার ভুলভ্রান্তি এবং ভুল ধারণার কথা। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, সঠিক নিয়ম মেনে যদি ওজন তোলা যায়, তা হলে তা কোনও ভাবেই বিপজ্জনক নয়। কিন্তু কী সেই নিয়ম? বিনোদের পরমার্শ—
· ওজন নিয়ে শরীরচর্চা মাংসপেশির শক্তিবৃদ্ধি করে। সুঠাম গড়নের জন্যও তা সহায়ক। তবে তারও নিয়ম আছে। যিনি নিয়মিত শরীরচর্চা করেন না, তিনি আচমকা বেশি ওজন নিয়ে কসরত গেলেই পেশিতে চোট পেতে পারেন। ৫ কেজি ওজন নিয়ে শরীরচর্চা শুরু করে কেউ ১০০ কেজিতেও পৌঁছতে পারেন। তবে তা করতে হবে ধাপে ধাপে নিয়ম মেনে এবং অত্যন্ত ধীর গতিতে। ১০ দিনের মধ্যেই ১০ কেজি থেকে ৪০-৫০ কেজি বা তার বেশি ওজন তুলতে গেলেই বিপদ হতে পারে।
· সরঞ্জামের ভার বৃদ্ধি হলে পুষ্টিতেও বদল জরুরি। বেশি ওজন তোলার জন্য মাংসপেশি, হাড়ও মজবুত হতে হবে। না হলে সেই ভার সামলানো শরীরের জন্য কঠিন হবে। বিনোদ সতর্ক করছেন, ডায়েটে বিশেষ নজর না দিয়ে আচমকা নিজের ক্ষমতার বাইরে ওজন তুলতে গেলে হাড়ের ক্ষতি হতে পারে।
· দীর্ঘ সময় ধরে ওজন নিয়ে ব্যায়ামও ক্ষতিকর হতে পারে, যদি নিয়ম না মানা হয়। ১০০ কেজি ওজন তোলার জন্য পেশিও মজবুত হওয়া দরকার। ১০০ কেজি ওজন তোলার মতো শক্তি প্রয়োজন। বিষয় হল, শরীরচর্চা বন্ধ হলেও দু’তিন দিন পর্যন্ত নিজে থেকে ক্যালোরি বা শক্তি ক্ষয় হতে থাকে। সে কারণে পেশিকে নিজের শক্তি সঞ্চয়ের জন্য বিশ্রাম দেওয়া জরুরি। আর দরকার পরিমাণ মতো খাবার। তালিকায় থাকা দরকার, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজ।
নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলে কিন্তু প্রচলিত ধারণাও সত্যি হতে পারে। শরীরচর্চার অনুপাতে পুষ্টির অভাব হলে শরীরের ক্ষতি হবে, জানাচ্ছেন বিনোদ।