প্রাপ্তবয়স্করাই যে কেবলমাত্র কাজের চাপে মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন, এই ধারণা এখন অতীত। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, শিশু এবং কিশোরেরাও এখন দৈনিক পড়াশোনা এবং অন্যান্য কাজের চাপে ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারে। আবার অনেক সময়েই অভিভাবকদের ভয়ের কারণে ছোটরা তাদের সমস্যার কথা স্পষ্ট করে ভাষায় ব্যক্ত করতে পারে না। এর ফলে অল্প বয়সেই বাচ্চার নানা সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। তাই সন্তানকে নজরে রাখতে হবে।
আরও পড়ুন:
এখন ছোট বাচ্চাদেরও পড়াশোনার চাপ বাড়ছে। স্কুলের বাইরে কোচিং সেন্টার রয়েছে। পাশাপাশি বহু অভিভাবকই এখন বাচ্চাদের একাধিক খেলাধুলোর প্রশিক্ষণ ক্লাসে ভর্তি করে দেন। সব মিলিয়ে অনেক সময়ে ছোট বয়সে তাদের শরীর এবং মনের উপরে অত্যধিক চাপ সৃষ্টি হয়। অথচ শিশু নিজ মুখে না বললেও একাধিক লক্ষণ দেখলে তার সমস্যার কথা বোঝা সম্ভব। এই প্রসঙ্গে শিশুরোগের চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পাল বাচ্চাদের মধ্যে ৭টি লক্ষণ প্রসঙ্গে সতর্ক করলেন।
১) চোখের অবস্থান: অনেক সময়ে ছোটরা বিশ্রাম করলেও, তাদের মনের মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে চিন্তার স্রোত তৈরি হয়। এ ক্ষেত্রে তারা যদি এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে তাকে, তা হলে বুঝতে হবে কোনও সমস্যা তাদের তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে।
২) হাসির অভাব: ছোটরা হাসি-মজা করে বাড়ি মাতিয়ে রাখে। কিন্তু চনমনে বাচ্চা যদি হঠাৎ চুপচাপ হয়ে যায়, তা হলে তার সঙ্গে খোলা মনে কথা বলা উচিত।
৩) হাই তোলা: ঘুমাতে যাওয়ার আগে ক্লান্তির বহিঃপ্রকাশ হিসাবে হাই তোলা স্বাভাবিক। কিন্তু নিয়মমাফিক খাবার খাওয়ার পরেও বাচ্চা যদি ক্রমাগত হাই তোলে, তা হলে বুঝতে হবে সে ক্লান্ত। শরীরে পুষ্টির অভাব হচ্ছে কি না, তা জানতে কোনও চিকিৎসকের সঙ্গেও পরামর্শ করা যেতে পারে।
৪) ঘুমের অভাব: অনেক সময় দেখা যায় বাচ্চাটি মাঝেমধ্যেই রাত্রে ঘুমোতে পারছে না। বুঝতে হবে পড়াশোনা এবং খেলাধুলো থেকে তার মাথায় চাপ সৃষ্টি হয়েছে। তার ফলেই তার ঘুমে ব্যাঘাত ঘটছে।
৫) খিটখিটে স্বভাব: বাচ্চারা বড়দের নানা ভাবে জ্বালাতন করে থাকে। তবে অকারণে যদি কোনও বাচ্চা বিরক্তি প্রকাশ করে বা খিটখিটে হয়ে যায়, তা হলে সাবধান হওয়া উচিত। একই সঙ্গে তারা যদি শরীরে একাধিক বা কোনও ব্যথার দিকে ইঙ্গিত করে, সেটাও কিন্তু অধিক ক্লান্তির বহিঃপ্রকাশ হতে পারে।
৬) খাবারের সময়: সাধারণত বাচ্চারা অনেকটা সময় নিয়ে খাবার খায়। খাবার না খাওয়ার জন্যও তাদের নানা বাহানা তৈরি থাকে। কিন্তু কোনও বাচ্চা যদি হঠাৎ করে প্রতি দিন দ্রুত খাবার খাওয়া শেষ করে, তা হলে বুঝতে হবে, তার মনের মধ্যে অন্য কোনও কাজের লক্ষ্যমাত্রা বা তাড়া রয়েছে।
৭) শখ-শৌখিনতা: প্রত্যেক বাচ্চারই নিজস্ব শখ-শৌখিনতা থাকে। কেউ ছবি আঁকে, কেউ বই পড়তে ভালবাসে। কারও খেলনা বিশেষ প্রিয়। কখনও প্রিয় জিনিসগুলি যদি তারা ব্যবহার বন্ধ করে দেয় সেটিও তাদের ব্যস্ততার অন্যতম লক্ষণ হয়ে উঠতে পারে।