Advertisement
E-Paper

সকালে কোন সময়ে জলখাবার খেলে বাড়বে আয়ু? পিছিয়ে যাবে বার্ধক্য, ঘড়ি ধরে বলে দিলেন গবেষকেরা

দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে জলখাবার খেলে অকালবার্ধক্য রোধ করা যাবে, এমনটাই দাবি গবেষকদের। সেই সময়টা কখন?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:৩৩
Meal timing shifts with age, new study claims that breakfast timing may predict how long you live

ঠিক কোন সময়ে প্রাতরাশ করলে বার্ধক্য ঠেকিয়ে রাখা যাবে? ছবি: এআই।

ঘুম থেকে উঠতে একটু দেরি হয়ে গেল বলে প্রাতরাশ বাদ! কিংবা ধরুন ভাবছেন, দিনটা শুরু করবেন দুপুরের খাওয়া থেকেই! তাতে কি ওজন কমবে? একেবারেই নয়। বরং সময়ের আগেই বুড়িয়ে যাবে শরীর। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, খাওয়ার পরিমাণ ও সময়ের উপরেই নির্ভর করে শারীরিক কার্যকলাপ। আপনি ঠিক কত দিন বাঁচবেন, কোন কোন অসুখে ভুগবেন, তার সবটাই নাকি নির্ভর করবে ওই সময়ের উপরেই। কী খাচ্ছেন, কতটা এবং কোন সময়ে খাচ্ছেন— এই তিনটি বিষয়ে যদি সঠিক নিয়ম মানা যায়, তা হলে আয়ুষ্কাল বেড়ে যাবে অনেকটাই। বিশেষ করে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে জলখাবার খেলে অকালবার্ধক্য রোধ করা যাবে, এমনটাই দাবি গবেষকদের। সেই সময়টা কখন?

শরীরের একটি ঘড়ি আছে, যাকে বলে ‘বায়োলজিক্যাল ক্লক’। এই ঘড়িটিও ঘণ্টা, মিনিট, সেকেন্ড ধরেই চলে। এই ঘড়ি অনুযায়ীই শরীরের ক্রিয়াকর্ম চলতে থাকে। আমেরিকার মাস জনারেল ব্রিগহ্যাম হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, একজন মানুষ কখন খাবেন, কখন ঘুমোবেন, তা ঠিক করে দেয় ওই ঘড়ি। তাই ওই সময়ের অন্যথা হলেই তখন শরীরের বাকি কাজগুলি এলোমেলো হয়ে যায়। তখনই গোল বাঁধে। যেমন, শরীরের ঘড়ি বলে সকালের জলখাবার খাওয়া উচিত ৭টা থেকে ৯টার মধ্যে। যিনি রাতে তাড়াতাড়ি খেয়ে ঘুমোতে যান, তাঁর সকাল ৮টার মধ্যে প্রাতরাশ সেরে ফেলা উচিত। আবার যিনি সকাল সকাল ভারী শরীরচর্চা করেন, তাঁর শরীরচর্চা শেষ হওয়ার এক ঘণ্টা পরে জলখাবার খাওয়া উচিত। এই সময় ধরে চললে, হজমপ্রক্রিয়া যেমন ঠিক ভাবে এগোবে, তেমনই হরমোনের গোলমাল হবে না। ফলে শরীরের কলকব্জা সক্রিয় থাকবে বহু দিন, পিছিয়ে যাবে বার্ধক্যের সময়। কিন্তু বেশির ভাগ মানুষই এই নিয়ম মানেন না, যে কারণেই নানা অসুখবিসুখ দেখা দেয়।

‘কমিউনিকেশন মেডিসিন’ জার্নালে এই গবেষণার খবর প্রকাশিত হয়েছে। ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকেরাও রয়েছেন এই গবেষণায়। তাঁরা জানিয়েছেন, ২৯৪৫ জন প্রাপ্তবয়স্ককে নিয়ে একটি সমীক্ষা চালানো হয়। অংশগ্রহণকারীদের বয়স ছিল ৪২ থেকে ৯৪। অনেক বয়স্কেরাও ছিলেন। দীর্ঘ সময় ধরে তাঁদের এক দলকে নিয়ম মেনে জলখাবার খাওয়ানো হয়, অন্য দলকে তাঁদের ইচ্ছামতো চলতে দেওয়া হয়। দেখা যায়, যে দলের লোকজন রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমোতে গিয়েছিলেন ও সকাল ৮টার মধ্যে প্রাতরাশ সেরেছেন, তাঁদের শরীরে জটিল কোনও রোগ হয়নি। বরং তাঁদের হৃদ্‌রোগ ও ডায়াবিটিস হওয়ার ঝুঁকি অনেক কমে গিয়েছে। আর যাঁরা অনিয়ম করেছেন, তাঁদের স্থূলত্ব বেড়েছে, হজমের গোলমাল ও হরমোনের সমস্যা দেখা দিয়েছে।

কেমন হওয়া উচিত প্রাতরাশ?

জলখাবার খাওয়ার সময়ে যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই কী খাচ্ছেন, তা-ও জরুরি। ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম, ফাইবার, ভিটামিন ডি-এর মতো গুরুত্বপূ্র্ণ উপাদান প্রাতরাশে রাখতেই হবে। আর রাখতে হবে প্রোটিন। প্রাতরাশে ঠিক কতটা প্রোটিন দরকার, সে বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা নেই অনেকেরই।প্রতি দিন প্রাতরাশে ২৫ থেকে ৩০ গ্রামের মতো প্রোটিন থাকলে ভাল হয়।

এক জন প্রাপ্তবয়স্কের শরীরের প্রতি কেজি ওজন পিছু ০.৮ গ্রাম প্রোটিনের দরকার হয়। যাঁরা ভারী শরীরচর্চা করেন, তাঁরা প্রতি কেজি ওজন পিছু ১.৩ গ্রাম থেকে ১.৬ গ্রাম প্রোটিন খেতে পারেন। বয়স, উচ্চতা, ওজন, কী ধরনের কাজ করেন, কতটা পরিশ্রম করেন, এই সব কিছুর উপরেই নির্ভর করবে দিনে ঠিক কতটা প্রোটিন জরুরি। প্রাতরাশে প্রোটিন অবশ্যই খেতে হবে, কিন্তু মেপে। যাঁরা দু’টি করে ডিমসেদ্ধ খাচ্ছেন, তাঁরা সঙ্গে দুটি রাগি বা বাজরার রুটি ও এক বাটি ফল রাখুন। এতে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ফাইবারের চাহিদা মিটে যাবে। মুগ ডালের ইডলি বা দোসা, পনিরের পুর ভরা দোসা খাওয়া যেতে পারে। ভারী শরীরচর্চা করলে প্রাতরাশে দু’টি ডিম খাওয়া যেতে পারেই। বাদামও রাখতে পারেন পরিমিত পরিমাণে। খেয়াল রাখতে হবে, প্রাতরাশই শক্তির উৎস। সকালের প্রথম খাবারই সারা দিনের শক্তির জোগান দেবে। তাই প্রাতরাশে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার রাখাই উচিত।

Healthy Breakfast Anti Ageing Food
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy