বিয়ার শরীরের আর্দ্রতা কমিয়ে দেয়। ছবি: সংগৃহীত।
গোটা দেশে কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। অন্তত পরিসংখ্যান তেমনটাই বলছে। চিকিৎসকদের মতে, একটি কারণ হতে পারে দৈনন্দিন জীবনের অনিয়ম। এ ছাড়া অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, জল কম খাওয়ার মতো অভ্যাস কিডনির রোগ ডেকে আনতে পারে। কিডনি সংক্রান্ত সমস্যাগুলির মধ্যে অন্যতম হল পাথর জমা। ওষুধের সাহায্য না কমলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায় হল অস্ত্রোপচার। সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা একেবারে নতুন একটি তথ্য দিচ্ছে। সমীক্ষায় উঠে এসেছে, প্রায় ১ থেকে ৩ শতাংশ ভারতীয় নাগরিকের ধারণা, বিয়ার খেলে নাকি কিডনিতে পাথর জমার সমস্যা কমে যায়। এই ধারণা কি আদৌ সত্যি? বিয়ার সীমিত পরিমাণে খেলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। প্রতি দিন ৩৫০ মিলিলিটার বিয়ার খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে। কিন্তু তার চেয়ে বেশি খেলে তা শরীরের জন্য উপকারী নয় একেবারেই। কিন্তু বিয়ার খেলে কি সত্যিই কিডনিতে পাথর আর জমে থাকে না? চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, বিয়ার মূত্রবর্ধক। এই পানীয় খেলে মূত্রের পরিমাণ বাড়ে। প্রতি দিন সামান্য বা নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে বিয়ার খেলে কিডনির পাথর মূত্রের মাধ্যমে বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বিয়ারের বদলে যে কোনও তরলই একই কাজ করবে। সুস্থ থাকতে বিয়ার কখনও সমাধানের পথ হতে পারে না। এই পানীয় উল্টে শরীরের আর্দ্রতা কমিয়ে দেয়। জলের মাত্রা কমে যায়। ফলে কিডনির পাথর থেকে মুক্তি পাওয়ার বদলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই এই ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে কিডনির পাথর গলাতে ভরসা রাখুন জলের উপর।
শুধু তা-ই নয়, প্রায় ৫০ শতাংশ ভারতীয় কিডনিতে পাথরের হলেও তা অবহেলা করেন। ফলে চিকিৎসা শুরু হতে অনেক দেরি হয়।
কিডনিতে পাথর জমার সমস্যা মহিলাদের তুলনায় তিন গুণ বেশি দেখা যায় পুরুষদের মধ্যে। হালের গবেষণায় উঠে এসেছে তেমনই তথ্য। কিডনিতে পাথর হওয়ার নির্দিষ্ট কোনও কারণ নেই। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ডায়াবিটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে কিডনিতে পাথর জমার আশঙ্কা তৈরি হয়। কিন্তু এই সমস্যাগুলি থাকলেও অনেকে কিডনির রোগ নিয়ে সচেতন নন। ফলে কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে।
আবার অনেকেই মনে করেন, প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট খেলেও কিডনিতে পাথর হতে পারে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এই ধারণার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। প্রোটিন খেলে কিডনিতে এর কোনও প্রভাব পড়বে, কোনও গবেষণাতেই তেমন কিছু উঠে আসেনি। বরং প্রোটিন না খেলে শরীরে আরও অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রতি বছর গোটা দেশে এক-দেড় লক্ষ মানুষ কিডনিতে পাথর জমার সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এই রোগের বাড়বাড়ন্তের নেপথ্যে অনিয়ম ছাড়াও কিছু ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে, তেমনটাই মনে করছে চিকিৎসক মহল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy