Advertisement
E-Paper

রাতে ঘরে কত ক্ষণ আলো জ্বালিয়ে রাখেন? যাপনের এই অভ্যাসই নীরবে হার্টের গুরুতর ক্ষতি করছে!

সন্ধ্যার পর কৃত্রিম আলোয় যত বেশি সময় কাটে, হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি ততটাই বাড়তে থাকে। এমনকি, খুব কম আলোতেও শরীরের ভিতরে এমন কিছু পরিবর্তন ঘটে, যা দীর্ঘ মেয়াদে হার্টের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৫ ১৮:৩০
ক্ষতি করছে কৃত্রিম আলো।

ক্ষতি করছে কৃত্রিম আলো। ছবি: সংগৃহীত।

রাত নামার পর কৃত্রিম আলো জ্বালানো অতি সাধারণ বিষয়। কিন্তু হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক গবেষণা জানাচ্ছে, এই অভ্যাসই নীরবে হৃদ্‌যন্ত্রের স্বাস্থ্যের উপর ভয়ানক প্রভাব ফেলতে পারে। গবেষকদের মতে, সন্ধ্যার পর কৃত্রিম আলোয় যত বেশি সময় কাটে, হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি ততটাই বাড়তে থাকে। এমনকি খুব কম আলোতেও শরীরের ভিতরে এমন কিছু পরিবর্তন ঘটে, যা দীর্ঘ মেয়াদে হার্টের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে।

সাম্প্রতিক এই গবেষণাটি করা হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ব্রেন ইমেজিং পদ্ধতি এবং স্যাটেলাইটের সাহায্যে। যেখানে রাতের কৃত্রিম আলোর মাত্রা মাপা হয়। তাতে দেখা গিয়েছে, আলো যত বেশি, মস্তিষ্কের স্ট্রেস-সংক্রান্ত কার্যকলাপও ততখানি বেড়ে যায়। এর সঙ্গে রক্তনালিতে প্রদাহ বাড়ে, আর ধীরে ধীরে হৃদ্‌রোগের সম্ভাবনা স্পষ্ট ভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে।

বৈদ্যুতিক আলোর প্রভাবে হার্টের ক্ষতি।

বৈদ্যুতিক আলোর প্রভাবে হার্টের ক্ষতি। ছবি: সংগৃহীত।

হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের প্রশিক্ষক এবং ম্যাসাচুসেট্‌স জেনারেল হাসপাতালের কার্ডিয়াক পিইটি/ সিটি ইমেজিং ট্রায়ালের প্রধান শ্যাডি আবোহাশেমের মতে, পরিবেশগত কারণ, যেমন বায়ু এবং শব্দ দূষণ স্নায়ু এবং রক্তনালিতে চাপ সৃষ্টি করে হার্টের রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে, ঠিক সে ভাবেই আলোক দূষণও প্রবল ভাবে বেড়ে চলেছে চারদিকে, কিন্তু সেটি কী ভাবে হার্টের উপর প্রভাব ফেলছে, তা নিয়ে তত গবেষণা এখনও হয়নি। তাই আলোক দূষণের প্রভাব সম্পর্কে খানিক অবহেলা লক্ষ করা যায়। তাই এই বিষয়ে তদন্ত করার জন্য আবোহাশেম ৪৬৬ জন প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ, সবল ব্যক্তির তথ্য বিশ্লেষণ করার সিদ্ধান্ত নেন। ৪৬৬ জনেরই বয়স ৫৫ বছরের আশপাশে। সকলকে পিইটি/ সিটি স্ক্যান করানো হয়। তাঁদের বাড়িতে কতখানি কৃত্রিম আলোর ব্যবহার কতখানি, সেটি পরীক্ষা করে দেখেন গবেষকেরা। প্রায় ১০ বছর ধরে এই ব্যক্তিরা গবেষকদের নজরাধীন ছিলেন (২০০৫ সাল থেকে ২০১৮)। হার্ট সংক্রান্ত সমস্যা এবং কৃত্রিম আলোর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব কী ভাবে প্রদাহ বাড়িয়ে তুলছে, সবই পর্যবেক্ষণ করা হয়।

কৃত্রিম আলোর প্রভাবে মস্তিষ্কের ক্ষতি।

কৃত্রিম আলোর প্রভাবে মস্তিষ্কের ক্ষতি। ছবি: সংগৃহীত।

এক দশক ধরে এই পরীক্ষার পর দেখা গিয়েছে, ১৭ শতাংশ অংশগ্রহণকারী হার্টের নানাবিধ রোগের কবলে পড়েছেন। পাশাপাশি, মস্তিষ্কেও ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলছে কৃত্রিম আলো। ধমনিতেও প্রদাহ বৃদ্ধি পাচ্ছে এর ফলে। শরীরের জৈবিক ঘড়ি যখন রাতের অন্ধকারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিশ্রামের প্রস্তুতি নেয়, তখন কৃত্রিম আলো সেই স্বাভাবিক ছন্দটি ভেঙে দেয়। তার ফলেই নিঃশব্দে হার্টের উপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করে। উল্লেখযোগ্য, নিম্নবিত্ত ব্যক্তিদের মধ্যে এই ঝুঁকি বেশি দেখা গিয়েছে। তা ছাড়া যাঁরা এমন জায়গায় বসবাস করেন, যার আশপাশে প্রচুর পরিমাণে কৃত্রিম আলো বা ট্র্যাফিকের বাতি রয়েছে, সেখানেও এই প্রভাব বেশি বলে জানা গিয়েছে।

কী ভাবে নিজেকে রক্ষা করবেন?

বর্তমান যাপনে আলো পুরোপুরি বন্ধ করা কঠিন। কিন্তু কিছু সহজ অভ্যাস অনেকটাই সাহায্য করতে পারে এই সমস্যায়। রইল কয়েকটি কৌশল—

· ঘুমোতে যাওয়ার আগে ঘরের আলো যথাসম্ভব কমিয়ে দিন।

· বাইরে থেকে আলো ঢুকলে মোটা, গাঢ় রঙের পর্দা ব্যবহার করুন।

· ঘুমোনোর অন্তত ৩০–৬০ মিনিট আগে মোবাইল–টিভি ইত্যাদি বন্ধ রাখুন।

· প্রয়োজনে স্লিপ মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন চোখে।

· যে ঘরে ঘুমোন, সেখানে উজ্জ্বল আলোর বদলে হালকা, ম্লান আলো রাখুন।

· পাড়ায় রাস্তার আলোর চারপাশে শেড ব্যবহার করার জন্য আলোচনা করুন, যাতে কৃত্রিম আলোর প্রভাব ততটা না পড়ে।

Heart Diseases Artificial Lights Brain Damage
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy