ক্যানসার কোষ ছড়িয়ে পড়ার আগে তা ধ্বংস করবে। গোড়া থেকে নির্মূল করবে টিউমার। ক্যানসারের প্রতিষেধক ‘সুপার ভ্যাকসিন’ তৈরির দাবি গবেষকদের। ম্যাসাচুসেটস ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা এমন টিকা তৈরির দাবি করেছেন, যা বেশ কয়েক রকম ক্যানসার প্রতিরোধ করতে পারবে। ইঁদুরের উপর পরীক্ষা করে টিকায় সাফল্য পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
টিকা তৈরি ও তার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনেকগুলি ধাপ থাকে। প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে পশুর শরীরে পরীক্ষা চলে। তার পর তিন ধাপে মানুষের শরীরে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চালিয়ে টিকার কার্যকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা হয়। ‘সুপার ভ্যাকসিন’ বলে যেটিকে দাবি করা হয়েছে, সেটি আপাতত ইঁদুরের উপরেই পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ইঁদুরদের শরীরে মেলানোমা বা ত্বকের ক্যানসার, অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার ও স্তন ক্যানসারের প্রোটিন ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। তার পর টিকার ডোজ় দিয়ে দেখা হয়, টিউমার কোষ তৈরি হতে পারছে কিনা। ২৫০ দিনের ট্রায়ালের পরে দেখা যায়, ইঁদুরদের ৮০ শতাংশের বেশি ক্যানসার-মুক্ত হয়েছে। তাদের শরীরে ক্যানসারের কোষের বিভাজন শুরুই হতে পারেনি।
আরও পড়ুন:
টিকার কাজই হল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে কয়েক গুণ বাড়িয়ে তোলা। শরীরে যদি কোনও বিজাতীয় প্রোটিন ঢোকে, তা হলে শরীর তার নিজস্ব প্রতিরোধ ব্যবস্থা দিয়ে তাকে আটকানোর চেষ্টা করা। ক্যানসারের সময়ে শরীরের নিজস্ব কোষগুলিই শত্রুর মতো আচরণ করে। সেগুলির অনিয়ন্ত্রিত বিভাজন শুরু হয়ে যায়। ফলে টক্সিন তৈরি হতে থাকে। এই প্রক্রিয়াকে থামাতে হলে দু’টি জিনিসের প্রয়োজন— অ্যান্টিবডি ও ইমিউনোসাইট। ইমিউনোসাইট হল সেই সব কোষ, যারা অ্যান্টিবডি তৈরি করে শরীরের প্রতিরোধ শক্তিকে বাড়িয়ে তোলে। এই ইমিউনোসাইট কোষগুলিকে সক্রিয় করে তুলতেই টিকা বা প্রতিষেধক তৈরি হয়। নতুন টিকাটি সেই কাজই খুব দ্রুততার সঙ্গে করতে পারবে বলে দাবি করা হয়েছে। গবেষকদের আরও দাবি, টিকা দেওয়ার পরে শরীরের প্রতিরোধ শক্তি এতটাই বেড়ে যাবে যে, ক্যানসারের প্রোটিন ছড়াতেই পারবে না। টিকার মধ্যে এমন উপাদান ভরে দেওয়া আছে, যা টিউমার কোষ তৈরিই হতে দেবে না। তবে মানুষের শরীরে টিকাটির প্রয়োগের পরেই তার কার্যকারিতা সম্পর্কে আরও নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যাবে বলে জানা গিয়েছে।