Advertisement
E-Paper

বাস-গাড়িতে উঠলেই গা গুলিয়ে ওঠে? ‘মোশন সিকনেস’ দূর হবে এক বিশেষ সুরে, দাবি গবেষণায়

গান শুনেই দূর হতে পারে ‘মোশন সিকনেস’-এর মতো নাছোড় ব্যাধিও। কী ভাবে তা সম্ভব?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৬:৩৯
New study claims, a specific type of Music can heal Motion Sickness

কী ধরনের গানে দূর হবে ‘মোশন সিকনেস’? ছবি: এআই।

পছন্দের সুরে মন ভাল হয়। গানের ধরণ অনুযায়ী কখনও শান্ত হয়, তো কখনও চনমনে হয়। গান শুনিয়ে অসুখ সারানোরও চেষ্টা হচ্ছে এখন, যার নাম ‘মিউজ়িক থেরাপি’। গবেষকদের মতে, তেমন ভাবে শোনাতে পারলে হতাশার রোগী ভুলে যেতে পারেন তাঁর কষ্টের কথা, ব্যথা–বেদনায় ভারাক্রান্ত মানুষ সাময়িক ভাবে হলেও চাঙ্গা হয়ে উঠতে পারেন৷ অনিদ্রার রোগীর চোখে নেমে আসতে পারে শান্তির ঘুম৷ আবার গান শুনেই দূর হতে পারে ‘মোশন সিকনেস’-এর মতো নাছোড় ব্যাধিও।

বাস বা গাড়িতে উঠলেই গা গুলিয়ে ওঠা, বমি পাওয়া মোশন সিকনেসেরই লক্ষণ। গাড়িতে দীর্ঘ ক্ষণ বসে থাকলে প্রবল মাথার যন্ত্রণা বা বমি ভাবের জ্বালায় অস্থির হন অনেকেই। সারা বছর আলাদা করে হজম সংক্রান্ত কোনও সমস্যা না থাকলেও বাস বা ট্যাক্সি একটু গতিতে চললেই অনেকের এমন হয়। আসলে মানুষের শরীরের তিনটি অংশ গতি নির্ণয় করে। চোখ, অন্তঃকর্ণ ও ত্বক। এই তিনটি অংশকেই ‘সেনসরি রিসেপ্টর’ বলা হয়। এরাই এই গতির অনুভূতিকে পাঠিয়ে দেয় মস্তিষ্কে। এই তিন সেনসরি রিসেপ্টরের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে কোনও অসামঞ্জস্য থাকলে তখন ‘মোশন সিকনেস’-এর সমস্যা হয়। আর তা থেকেই গা গোলানো, বমি ভাব, মাথা ঘোরার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। মোশন সিকনেস কাটাতে কেউ লবঙ্গ বা আদা কুচি মুখে রাখেন, কেউ যাত্রাবিরতি নেন, আবার কেউ বমি বন্ধ করার ওষুধ খান। তবে এতে সমস্যার খুব একটা সমাধান হয় না। চিনের হেনান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির গবেষকেরা জানিয়েছেন, সঙ্গীতই মোশন সিকনেস দূর করার একমাত্র দাওয়াই। তবে শুনতে হবে কিছু বিশেষ সুর।

কোন সুরে আছে জাদু?

৩০ জনকে নিয়ে প্রাথমিক ভাবে পরীক্ষাটি করেন বিজ্ঞানীরা। যাঁদের নেওয়া হয়, তাংদের প্রত্যেকেরই মোশন সিকনেসের সমস্যা আছে। অংশগ্রহণকারীদের মাথায় পরিয়ে দেওয়া হয় ‘ইলেক্ট্রোএনসেফ্যালোগ্রাফ ক্যাপ’। এর কাজ হল গানের সুরে মস্তিষ্কের অন্দরে কী কী অদলবদল ঘটছে, তার খুঁটিনাটি তথ্য দেওয়া। গবেষকেরা পাঁচ জন করে ৬টি দলে ভাগ করেন অংশগ্রহণকারীদের। বদ্ধ গাড়িতে বসিয়ে তাঁদের শোনানো হয় নানা রকমের গান ও সুর। দেখা যায়, যাঁরা নরম ও রোম্যান্টিক গান শুনেছিলেন, তাঁদের শারীরিক কষ্ট দূর হয় খুব কম সময়ের মধ্যেই, তবে যাঁরা দুঃখের গান শুনেছেন, তাঁদের তেমন ভাবে কোনও লাভ হয়নি। দুঃখের গান শুনলে অবসাদ বা হতাশা দূর হয়, এমন অনেক গবেষণা আছে। তবে মোশন সিকনেস দূর করার ক্ষেত্রে তার তেমন কোনও ভূমিকা দেখা যায়নি বলেই দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।

গবেষকেরা দেখেছেন, গান বা সুর সোজা গিয়ে হানা দেয় মস্তিষ্কের ‘হাইপোথ্যালামাস’ নামের অংশে, যা কিনা সব আবেগের কেন্দ্র ৷ পছন্দের গানে সেই অংশ উদ্দীপিত হয়৷ প্রচণ্ড শারীরিক যন্ত্রণা হলে বা উদ্বেগে যখন হৃৎস্পন্দন, নাড়ির গতি ও রক্তের চাপ বেড়ে যায় যায়, তখন এমন গানের সুরে তা কমতে শুরু করে। প্রোল্যাকটিন’ নামে এমন এক হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যা শারীরিক কষ্ট উপশম করতে পারে। মনকে শান্ত করে এবং ‘স্ট্রেস হরমোন’-এর ক্ষরণ কমিয়ে দেয়। তবে এই গবেষণা যে সকলের ক্ষেত্রেই সমান কার্যকরী হবে, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, গাড়িতে উঠে আতঙ্কে ভোগার চেয়ে গান শোনা ভাল। তাতে কিছুটা হলেও সমস্যার সমাধান হতে পারে।

Motion sickness Music Therapy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy