Advertisement
E-Paper

ফিটনেস ট্র্যাকারে ঘুমের বিশ্লেষণ থেকে তৈরি হতে পারে মনের উদ্বেগ, আপনি কি ‘অর্থোসমনিয়া’র শিকার?

ফিটনেস ট্র্যাকার ঘুমের সময়সীমা জানিয়ে দেয়। কিন্তু তাকে বেশি গুরুত্ব দিলে ব্যক্তি ‘অর্থোসমনিয়া’য় আক্রান্ত হতে পারেন।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৫ ১০:২০
Obsessing over sleep trackers also known as Orthosomnia could be ruining your rest

প্রতীকী চিত্র। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ফিটনেস ট্র্যাকারের ব্যবহার দৈনন্দিন জীবনকে সহজ করেছে। হাঁটা, রক্তচাপ, হৃৎস্পন্দন, ঘুমোনোর সময়সীমা-সহ ব্যক্তির দৈনন্দিন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত নানা তথ্য এই ধরনের তথ্য এখন হাতের মুঠোয়।

একটি সমীক্ষায় জানা যাচ্ছে, প্রাপ্তবয়স্ক আমেরিকানদের প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষ কোনও ফিটনেস ট্র্যাকারের মাধ্যমে প্রতি দিন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করেন। মূলত স্মার্টওয়াচ বা মোবাইলের অ্যাপ থেকে এই ধরনের তথ্য জানা যায়। ভারতেও গত কয়েক বছরে ফিটনেস ট্র্যাকরের ব্যবহার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, রাতে ব্যক্তি কত ক্ষণ ঘুমোচ্ছেন, তা অনেক সময় বহু মানুষের মনের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করছে। বিষয়টিকে বলা হয় ‘অর্থোসমনিয়া’।

‘অর্থোসমনিয়া’ কী?

চিকিৎসাবিজ্ঞানে অপেক্ষাকৃত নতুন শব্দবন্ধ অর্থোসমনিয়া। বিষয়টিকে সহজ ভাবে ব্যখ্যা করা যেতে পারে। ধরা যাক, কোনও ব্যক্তি প্রতি দিন কত ক্ষণ ঘুমোচ্ছেন, তা স্মার্টওয়াচের মাধ্যমে জানতে পারেন। এখনকার স্মার্টওয়াচে ঘুমের বিভিন্ন স্তর বিশ্লেষণ করে তথ্য জানা সম্ভব। কোনও দিন ঘুম কম হলে তাঁর মনে প্রশ্ন তৈরি হয়। কখনও কখনও কম ঘুমের জন্য তাঁর মনে উদ্বেগ জন্ম নেয়। ফলে প্রতিনিয়ত স্মার্টওয়াচের থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আদর্শ ঘুমের (দিনে অন্তত ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা) পিছনে ধাওয়া করেন তিনি। প্রতিনিয়ত ঘুম সম্পর্কিত তথ্য যাচাই বা তার ফলে মনের মধ্যে উদ্বেগের পরিস্থিতিকে বলা হয় ‘অর্থোসমনিয়া’।

Obsessing over sleep trackers also known as Orthosomnia could be ruining your rest

ঘুম সম্পর্কিত তথ্য মনে উদ্বেগ তৈরি করতে পারে। ছবি: সংগৃহীত।

বার্মিংহাম মেডিক্যাল হসপিটালের অধ্যাপক রেবেকা রবিন্স এই প্রসঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘দিনের পর দিন, এক ভাবে ঘুম সম্পর্কিত তথ্য বিশ্লেষণ করা অনেক সময়েই ব্যক্তির পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। সেই তথ্য তাঁকে বিচলিত করতে পারে। প্রাপ্ত তথ্য পরবর্তী রাতে ব্যক্তির ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।’’ এই রকম পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হলে, কেউ কেউ আবার অনিদ্রার শিকার হতে পারেন। কারণ প্রতিনিয়ত তাঁদের মনের মধ্যে ‘‘আমার ভাল ঘুম হচ্ছে না’’— এই ভাবনা তাড়া করে।

ইনসমনিয়া বনাম অর্থোসমনিয়া

ইনসমনিয়া এবং অর্থোসমনিয়ার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। ইনসমনিয়া বা অনিদ্রা একটি রোগ। তার ফলে ব্যক্তি রাতে ঘুমোতে পারেন না। অনেক সময়ে সারা রাত জেগেই কাটাতে হয় তাঁকে। অন্য দিকে অর্থোসমনিয়া হল, ফিটনেস ট্র্যাকার থেকে প্রাপ্ত ঘুম সম্পর্কিত তথ্যকে অধিক গুরুত্ব দেওয়ার প্রবণতা।

কী করা উচিত

দেখা গিয়েছে, অর্থোসমনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি যত বেশি তাঁর ঘুমকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন, তত বেশি তিনি আরও খারাপ পরিস্থিতির শিকার হন। তাই চিকিৎসকেরা এ ক্ষেত্রে কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন।

১) যাঁরা এ রকম সমস্যার শিকার, তাঁদের ক্ষেত্রে রাতে ফিটনেস ট্র্যাকার না পরে ঘুমোলে উপকার পাওয়া যেতে পারে।

২) যাঁরা ঘুম সম্পর্কিত তথ্য জানতে ইচ্ছুক, তাঁরা এক দিন অন্তর রাতে স্মার্টওয়াচ ব্যবহার করতে পারেন। তার ফলে মনের মধ্যে তুলনার ইচ্ছে তৈরি হবে না।

৩) স্মার্টওয়াচে বা মোবাইল অ্যাপে সপ্তাহে ৭ দিনের পরিবর্তে সেই দিনের ঘুম সম্পর্কিত তথ্যে চোখ রাখা উচিত। সারা সপ্তাহের তথ্য মনের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

৪) রাতে ঘুমোনোর আগে মোবাইল, টিভি বা স্মার্টওয়াচ— যে কোনও রকম বৈদ্যুতিক ‘টেক’ থেকে দূরে থাকা উচিত। বই পড়া, গান শোনা বা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথোপকথন ঘুমোতে সাহায্য করতে পারে।

৫) কম বা বেশি ঘুম হলে, তা নিয়ে অহেতুক উত্তেজিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। কেন ঘুম কম বা বেশি হয়েছে, সেই প্রশ্নটি নিজেকে করা উচিত। সমাধানও নিজের থেকেই বেরিয়ে আসবে।

sleep Sleeping Tip Fitness Tracker Tension Health Tips
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy