পেটে ব্যথা যে কোনও কারণেই হতে পারে। তবে ঘন ঘন এই সমস্যা দেখা দিলে অবহেলা না করাই ভাল। ছোটরা অনেক সময়েই বলে, পেটে ব্যথা হচ্ছে। তবে মাঝেমধ্যে ব্যথা হলে তা এড়িয়ে যান অনেক অভিভাবকই। কিন্তু যদি দেখেন, এই যন্ত্রণা নিয়মিত হচ্ছে এবং রাতে শুয়েও পেটে ব্যথায় কাতর হয়ে পড়ছে শিশু, তা হলে বুঝতে হবে সমস্যা সাধারণ নয়। পেটে ব্যথার সঙ্গে বমি— এই দুই লক্ষণ আরও মারাত্মক। হতেই পারে তা প্যানক্রিয়াটাইটিসের লক্ষণ।
শিশুদের জন্য বিপজ্জনক প্যানক্রিয়াটাইটিস
ছোটদেরও যে প্যানক্রিয়াটাইটিস বা অগ্ন্যাশয়ের রোগ হতে পারে, সে ধারণাই নেই অনেকের। তাই পেটে ব্যথা হলে গ্যাসের সমস্যা ভেবে ছোটদেরও নানা ওষুধ খাইয়ে দেন বাবা-মায়েরা। অনেক সময়ে ডায়েরিয়ার সমস্যা ভেবে ভুলও করেন। খেয়াল রাখতে হবে, পেটের উপরের অংশে তীব্র ব্যথা হচ্ছে কি না। শিশু যদি বলে, পেটের উপরে যন্ত্রণা হচ্ছে ও তা পিঠের দিকে ছড়িয়ে পড়ছে, সেই সঙ্গে বার বার বমি হওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেয়, তা হলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়াই ভাল। আরও কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে, যেমন— শিশুর পেট ফুলে যাবে, বারে বারে জ্বর আসবে, খিদে হবে না, হৃৎস্পন্দনের হার বৃদ্ধি পাবে।
আরও পড়ুন:
ছোটদের প্যানক্রিয়াটাইটিস নানা কারণে হতে পারে। পেটে আঘাত লাগলে, হেপাটাইটিস এ বা বি-র সংক্রমণ হলে, সালমোনেল্লার মতো ব্যাক্টেরিয়ার কারণে পেটে বিষক্রিয়া হলে তার থেকে অগ্ন্যাশয়ে প্রদাহ হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক বা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ থেকেও রোগ হতে পারে। সিস্টিক ফাইব্রোসিসের মতো বংশগত রোগ থাকলে, তা থেকেও প্যানক্রিয়াটাইটিস হতে পারে। আবার পিত্তথলিতে পাথর জমে থাকলে তা থেকেও এ রোগ হতে পারে।
বাবা-মায়েরা কী করবেন?
ক্রনিক প্যানক্রিয়াটাইটিসের ক্ষেত্রে ঘন ঘন পেটে ব্যথা হয়। খাবার হজম হয় না, ওজন কমতে থাকে। অন্ত্রে পাচক রস পৌঁছয় না বলে, প্রোটিন বা ফ্যাট জাতীয় খাবার খেলেই পেটের সমস্যা শুরু হয়। রোগ ফেলে রাখলে পিত্তনালি সরু হয়ে যায়। ফলে জন্ডিস হওয়ার ভয়ও থেকে যায়। তাই পেটে অসহ্য যন্ত্রণা হলে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। চর্বি জাতীয় খাবার, যেমন ডিম, দুধ, রেড মিট এড়িয়ে চলতে হবে। তেল জাতীয় খাবার বা ভাজাভুজিও চলবে না।