সকালে ঘুম থেকে উঠেই দাঁত মাজা প্রাত্যহিক রুটিনের অংশ। কেউ অল্প সময়ের মধ্যেই বিষয়টি সেরে ফেলেন। কেউ কেউ আবার দীর্ঘ সময় ধরে দাঁত মাজেন। দাঁত মাজতে মাজতেই হয়তো চলে আশপাশের মানুষদের সঙ্গে গল্প। আবার কেউ হয়তো দাঁত মাজতে মাজতে সকালের প্রয়োজনীয় কাজ সেরে নিতে পছন্দ করেন। অনেক ক্ষণ ধরে দাঁত মাজার অর্থ, মুখের মধ্যে টুথপেস্টের উপস্থিতি। কিন্তু মুখের মধ্যে বেশি ক্ষণ ধরে টুথপেস্টের ফেনা থাকলে অজান্তেই নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
মুখের ভিতরের অংশ অত্যন্ত নরম এবং সংবেদনশীল। তাই অল্পেই কোনও সমস্যা হতে পারে। দাঁত মাজতে গেলে চাই টুথপেস্ট। কিন্তু মুখের মধ্যে বেশি ক্ষণ ধরে পেস্টের ফেনা থাকলে তা থেকে সমস্যা হতে পারে। দন্ত্যচিকিৎসক শিলাদিত্য চক্রবর্তী বললেন, ‘‘টুথপেস্টের মধ্যে সোডিয়াম লরাইল সালফেট নামক একটি উপাদান থাকে, যা থেকে ফেনা তৈরি হয়। এটি বেশি ক্ষণ উপস্থিত থাকলে মুখের মধ্যে অস্বস্তি হতে পারে। অনেক সময়ে তা থেকে মুখের মধ্যে জ্বালার অনুভূতিও শুরু হতে পারে।’’ মুখের মধ্যে টুথপেস্টের ফেনা বেশি ক্ষণ থাকলে অনেক সময়ে তা মুখের মধ্যে লালা সৃষ্টিতে বাধা দিতে পারে। ফলে মুখের ভিতরের অংশে শুষ্ক ভাব অনুভূত হতে পারে।
আরও পড়ুন:
মুখের মধ্যে টুথপেস্টের ফেনা বেশি ক্ষণ থাকলে দীর্ঘকালীন পরিস্থিতিতে তা থেকে দাঁতের এনামেলের ক্ষতি হতে পারে। তাই বেশি ক্ষণ ধরে দাঁত মাজা উচিত নয়। শিলাদিত্য বললেন, ‘‘টুথপেস্টের ফেনার মধ্যে দাঁত পরিষ্কার করার উপাদান থাকে। দাঁত শক্ত, কিন্তু মাড়ি বা জিভ তো নরম। তাই বেশি ক্ষণ মুখের মধ্যে পেস্ট থাকলে তা থেকে পরবর্তী সময়ে আলসারও তৈরি হতে পারে।’’ টুথপেস্টের মধ্যে অবস্থিত বিভিন্ন উপাদান থেকে কারও কারও আবার মুখের মধ্যে অ্যালার্জি সৃষ্টি হতে পারে। শিলাদিত্যের কথায়, ‘‘বেশি ক্ষণ দাঁত মাজলে এনামেল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তখন দাঁতে শিরশিরে ভাব অনুভূত হতে পারে।’’
ছোটদের মধ্যে অনেক সময়েই টুথপেস্ট গিলে ফেলার প্রবণতা দেখা যায়। তার ফলে পেটখারাপ হতে পারে। আবার বেশি ক্ষণ ধরে দাঁত মাজলে পেটের মধ্যে অল্প অল্প করে টুথপেস্টের কণা জমা হতে পারে। এর ফলে দীর্ঘ সময় ধরে দেহের অস্থিতে ফ্লুয়োরাইড জমা হলে স্কেলেটাল ফ্লুরোসিস সৃষ্টি হয়। শিলাদিত্য জানালেন, এর ফলে দীর্ঘ সময় পর তা দেহের অস্থির ক্ষতি করতে পারে।
কত ক্ষণ দাঁত মাজা উচিত?
শিলাদিত্যের মতে, দিনে অন্তত দু’বার দাঁত মাজা উচিত। কিন্তু সেই সময় যেন দু’মিনিট অতিক্রম না করে, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। দাঁত মাজার ক্ষেত্রে নরম ব্রিসল যুক্ত ব্রাশ ব্যবহার করা উচিত। শিলাদিত্যের কথায়, ‘‘ব্রিসল নরম হলে দাঁতের এনামেলের ক্ষতি কম হবে। পাশাপাশি, ব্রিসল শক্ত হলে মাড়ি বা মুখের ভিতরের অন্যান্য অংশ থেকে রক্তপাত হতে পারে।’’ খুব চাপ দিয়ে যেন দাঁত মাজা না হয়, সে দিকেও লক্ষ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।