হেপাটাইটিস নিয়ে আবারও উদ্বেগ বেড়েছে। পুণের নানা জায়গায় এই রোগে আক্রান্ত বহু মানুষ। পুণে মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের (পিএমসি) সূত্রে জানা যাচ্ছে, ভাইরাল হেপাটাইটিসই ছড়িয়েছে পুণেয়। আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। দূষিত জল ও খাবার থেকেই সংক্রমণ মারাত্মক চেহারা নিচ্ছে বলেই মনে করছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। আক্রান্তদের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহের কাজ চলছে।
হেপাটাইটিস নিয়ে এত উদ্বেগ কেন?
‘দ্য ল্যানসেট’ মেডিক্যাল জার্নালে কয়েক মাস আগেই লেখা হয়েছিল, ইউরোপের নানা জায়গায় হেপাটাইটিসের প্রকোপ বেড়েছে। বিশেষ করে হেপাটাইটিস বি ও সি ছড়িয়ে পড়ছে। পুণেতে যে সংক্রমণ ঘটছে তা হেপাটাইটিস এ-র। মূলত লিভারে ভাইরাসের সংক্রমণের ফলেই এই রোগ হয়। এ ক্ষেত্রে চিহ্নিত করা গিয়েছে মোট পাঁচটি ভাইরাস। যা পরিচিত হেপাটাইটিস এ, বি, সি, ডি, ই নামে। হেপাটাইটিস এ এবং ই সংক্রমিত হয় দূষিত খাদ্য এবং পানীয়ের মাধ্যমে। হেপাটাইটিস বি, সি, ডি সংক্রামিত হয় মূলত রক্ত ও দেহরসের মাধ্যমে। ব্লাড ট্রান্সফিউশন এবং একাধিক বার ব্যবহৃত একই ইঞ্জেকশনের সুচ ব্যবহারের মাধ্যমে। এ ছাড়াও সালোঁয় ট্যাটু আঁকার সময়েও সতর্কতার অভাবে এই ভাইরাস দেহে ঢুকতে পারে। সংক্রমিত মায়ের দেহ থেকে শিশুর মধ্যে হতে পারে সংক্রমণ।
আরও পড়ুন:
লক্ষণ কী কী?
যকৃতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল, রক্তে লোহিত কণিকার আয়ু শেষ হলে, তার অন্তর্গত বিলিরুবিনকে দেহ থেকে নিষ্কাশিত করা। হেপাটাইটিস ভাইরাসের ফলে যকৃতের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়। ফলে রক্তে বিলিরুবিনের পরিমাণ বেড়ে যায়। এতে জন্ডিসের উপসর্গ দেখা দেয়।
হেপাটাইটিস হলে লিভারের মারাত্মক ক্ষতি হয়। অনেক রোগী বুঝতেই পারেন না, তাঁরা শরীরে ভাইরাল হেপাটাইটিস বহন করছেন। রোগ ছড়িয়ে পড়ার পরে যখন ধরা পড়ে, তখন অনেক দেরি হয়ে যায়। হেপাটাইটিসের আরও কিছু লক্ষণ হল, পেটে অসহ্য যন্ত্রণা, খিদে কমে যাওয়া, বমি ভাব, পেটখারাপ। শরীরের সমস্ত অস্থিসন্ধিতে ব্যথা হবে, প্রস্রাবের রং গাঢ় হবে, ত্বকে চুলকানি-র্যাশ দেখা দিতে পারে।
কিছু রক্তপরীক্ষা এবং লিভার ফাংশন টেস্টের (এলএফটি) মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা হয়ে থাকে। চিকিৎসায় নিরাময় হয় হেপাটাইটিস। ক্রনিক হেপাটাইটিসের ক্ষেত্রে চিকিৎসা চলবে নিয়মিত। চিকিৎসকের পরামর্শের বাইরে কিছু করা যাবে না। সেই সঙ্গে রোগীর সম্পূর্ণ বিশ্রাম প্রয়োজন। রোগীর পথ্যতেও বিশেষ নজর দিতে হবে।