আম আদমি পার্টির (আপ) সাংসদ রাঘব চড্ঢার জীবনে ব্যস্ততার শেষ নেই। দলের নানা দায়িত্ব থেকে সাংসদের কর্তব্য পালন, রাজনীতিক রাঘব চড্ঢার জীবনে সব সময়ই ব্যস্ততা তুঙ্গে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে রাঘব বলেছেন, তিনি চা খেতে ভীষণ ভালবাসেন। আর নির্বাচনের ব্যস্ততার মাঝে তিনি সারা দিনে ৮-১০ কাপ চা-ও খেয়ে ফেলেন কখনও কখনও। চা-প্রেমী রাঘব বলেন, ‘‘নির্বাচনের সময় কাজের চাপে ৮-১০ কাপ চা খেয়ে নিই। তবে বছরের অন্য সময় সারা দিনে ৩-৪ কাপ চা খাই।’’
সারা দিনে রাঘবের ঘন ঘন চায়ের কাপে চুমুক দেওয়া আদৌ কতটা স্বাস্থ্যকর, সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। অনেকেরই অফিসে কাজের ফাঁকে বারে বারে চায়ের কাপের দিকে হাত চলে যায়। কাজের একঘেয়েমি কাটাতে, ক্লান্তি দূর করতে ঘন ঘন লিকার চা খাওয়ার অভ্যাস ছাড়া যায় না। দিনে ৫-৬ কাপ বা তার চেয়েও বেশি চা খেয়ে ফেলেন অনেকে। এই অভ্যাস কি আদৌ স্বাস্থ্যকর?
অনেকেই ভাবেন, দুধ-চিনি ছাড়া চা মানে তা খুবই স্বাস্থ্যকর। অতএব যত খুশি খেয়ে ফেললেও ক্ষতি নেই। তা কিন্তু একেবারেই নয়। পুষ্টিবিদদের মতে, লিকার চায়ের পুষ্টিগুণ অনেক। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ লাল চায়ে ফ্ল্যাভোনয়েডস, ফাইটোকেমিক্যাল, অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি উপাদান থাকে, যা শরীরের জন্য ভাল। যদি লিকার চায়ে আদা, দারচিনি বা মধু মিশিয়ে খাওয়া যায়, তা হলে এর পুষ্টিগুণ আরও বাড়ে। তবে এতে কিন্তু ক্যাফিনও থাকে। তাই অতিরিক্ত খেয়ে ফেললে তা শরীরে ক্ষতিই করবে। দিনে যদি পাঁচ কাপ বা তার বেশি লিকার চা খেতে শুরু করেন, তা হলে প্রতি দিন শরীরে ২৮০-৩০০ মিলিগ্রাম বা তার বেশি ক্যাফিন ঢুকবে। তখন ক্লান্তি দূর হওয়ার বদলে তা আরও বাড়বে। পাশাপাশি উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, মাথা যন্ত্রণা, অনিদ্রার সমস্যা দেখা দেবে। অতিরিক্ত ক্যাফিন হজমের সমস্যা, রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে। এর প্রভাবে হৃৎস্পন্দনও বিগড়ে যেতে পারে।
তা হলে সারা দিনে কত কাপ চা খাওয়া স্বাস্থ্যকর? পুষ্টিবিদ রুজুতা দিবেকরের মতে, সীমিত মাত্রায় ২-৩ কাপ চা সারা দিনে খাওয়া যেতেই পারে। তবে শুধু কাপের হিসেব রাখলেই চলবে না, শরীরের কথা ভেবে চা খেতে হবে নিয়ম মেনে।
খালি পেটে চা নয়
রুজুতার মতে, খালি পেটে চা খাওয়ার অভ্যাস সবচেয়ে অস্বাস্থ্যকর। খালি পেটে চা খেলে হৃৎস্পন্দন, রক্তচাপ, এমনকি, শ্বাসপ্রশ্বাসের হার বেড়ে যায়। দুর্ভাগ্যবশত এই অবস্থাটাকেই ঘুমের ঘোর কাটছে ভেবে অনেকেই ভুল করেন। কিন্তু আদতে বিষয়টি ক্ষতি করছে শরীরের। রুজুতার পরামর্শ, এর বদলে সকালে ঈষদুষ্ণ জলও খেতে পারেন।
চায়ের সঙ্গে ‘টা’ বাছুন সতর্ক হয়ে
দিনের যে সময়েই চা খান, তার সঙ্গে নোনতা খাবার যেমন পকোড়া, চানাচুর, নোনতা বিস্কুট বা যে কোনও বিস্কুট, চিপ্স, আলুভাজা, তেলেভাজা, ইত্যাদি খাবেন না। রুজুতার মতে, চায়ের সঙ্গে ময়দা, চিনি আর নানা রকম অস্বাস্থ্যকর তেল দিয়ে তৈরি বিস্কুটও খাওয়া ঠিক নয়। হার্টের সমস্যা বা ডায়াবিটিসের সমস্যা থাকলে এই অভ্যাস অবিলম্বে এড়িয়ে চলা দরকার।
সময় বুঝে চা খান
বিকেল ৪টের পর চা খেতে বারণ করছেন রুজুতা। তিনি জানাচ্ছেন, চায়ে থাকা ক্যাফিন আমাদের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায়। তাই ঘুমোনোর অন্তত ৬ ঘণ্টা আগে ক্যাফিন বন্ধ করা উচিত।