ওজন কমানোর ওষুধ খেয়েছেন নাকি? অথবা অস্ত্রোপচার? সঙ্গীতশিল্পী আদনান সামির মতো প্রশ্নের মুখে পড়ছেন র্যাপশিল্পী বাদশা। কী ভাবে এ রকম বদল আনলেন নিজের শরীরে? সন্দেহের উদ্রেক ঘটেছে সাম্প্রতিক একটি ভিডিয়ো প্রকাশ পেতেই। অনুরাগীদের প্রশ্নবাণের পর ওজন কমানোর কৌশল জানিয়ে দিলেন র্যাপার।
কৃত্রিম উপায়ে নয়, বরং খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনেই ওজন কমিয়েছেন বাদশা। সহজ পথ অবলম্বন করেননি সঙ্গীতশিল্পী। বরং কৃচ্ছ্রসাধনের রাস্তাই বেছে নিয়েছিলেন। কারণ, স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত শিল্পীর রোগ আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করছিল। ফলে রাতে ঘুমোতে পারছিলেন না। শ্বাসকষ্ট বেড়েই যাচ্ছিল। এমনকি মঞ্চে ১৫ মিনিট অনুষ্ঠান করার পরই হাঁপিয়ে উঠছিলেন তিনি। নিজের স্বাস্থ্যের অবনতি হতে দেখে ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেন বাদশা। আর তাঁর ওজন ঝরানোর মূলমন্ত্র, খাবারের পরিমাণের বিষয়ে সতর্ক হওয়া। ইংরেজিতে এই নিয়মটিকে বলা হয় ‘পোর্শন কন্ট্রোল’। খুবই প্রচলিত এই শব্দবন্ধ। কিন্তু এই নিয়মটি আসলে কী?
খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনেই ওজন কমিয়েছেন বাদশা। ছবি: সংগৃহীত।
পোর্শন কন্ট্রোল করার অর্থ হল, খাওয়ার সময়ে কী খাচ্ছেন, কতটা খাচ্ছেন, সে বিষয়ে সতর্ক থাকা। যতখানি খিদে, ততখানি খাবার পেটে পুরে নেওয়া নয়। রোজ যত বার খাচ্ছেন, তত বারই নির্দিষ্ট পরিমাণ খাবার থালায় থাকতে হবে। পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী নিজের উপযুক্ত পরিমাণ জেনে নিতে হবে। বাদশাও ঠিক তা-ই করেছেন।
ওজন কমানোয় খাদ্যাভ্যাসে বদল বা ডায়েটের ভূমিকা ৭৫ শতাংশ এবং শরীরচর্চার ভূমিকা ২৫ শতাংশ। ফলে রোজ ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যায়াম করার পর যদি খিদের চোটে অনেকখানি খেয়ে নেন, তা হলে কোনও লাভই হবে না। মেপে খাওয়ার এই পন্থা বৈজ্ঞানিক ভাবে স্বীকৃত।
আরও পড়ুন:
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, মেপে খেতে গিয়ে বার বার খিদে পেয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে কী কর্তব্য?
অল্প অল্প পরিমাণে বার বার খাবার খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করলেই খিদে কম পাবে। প্রত্যেক বার খাওয়ার আধ ঘণ্টা আগে দু’গ্লাস জল খেয়ে নিতে হবে, যাতে খাওয়ার আগেই পেট খানিক ভরা থাকে। এর ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার সমস্যা থেকে রেহাই পেতে পারেন। আরও একটি কার্যকরী টোটকা হল খাবার খাওয়ার থালা-বাটি বদলে ফেলা। আগের থেকে ছোট থালা আর বাটি ব্যবহার করুন। তা ছাড়া বাইরে গিয়ে কোথাও খাবার অর্ডার করলে, অন্য কারও সঙ্গে ভাগ করে খান অথবা আধ প্লেট খাবার নিন। এই কয়েকটি টোটকায় খাওয়ার পরিমাণও কমানো যাবে, খিদের জ্বালাও কমবে। তা ছাড়া হঠাৎ হঠাৎ খিদে পেলে পুষ্টিবিদেরা গ্রিন টি খাওয়ার পরামর্শ দেন। এপিগ্যালোক্যাটেকিন গ্যালেট (ইজিসিজি) যৌগ থাকায় গ্রিন টি অ্যাডিপোনেক্টিন হরমোন নিঃসরণ করে। আর এটি অপ্রয়োজনীয় খিদেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। আর তাই ডায়েটের সময়ে খিদের জ্বালা শুরু হলে ইজিসিজি সমৃদ্ধ গ্রিন টি পান করতে পারেন।
এই সমস্ত কৌশল মেনে চললে ডায়েটের রাস্তা থেকে পা-ও হড়কাবে না, পোর্শন কন্ট্রোলেও বাধা পড়বে না। ফলে সহজে ওজন কমানোর লক্ষ্য পূরণ করা যাবে। ঠিক যেমন পেরেছেন র্যাপার বাদশা। শোনা যাচ্ছে, প্রায় ২০ কেজি ওজন কমিয়েছেন তিনি।