Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Samantha Prabhu

মায়োসাইটিসে আক্রান্ত সামান্থা প্রভু! এই রোগ কি প্রাণঘাতী হতে পারে? কী বলছেন চিকিৎসক?

মায়োসাইটিস নামের একটি রোগে আক্রান্ত তিনি। ইনস্টাগ্রামে ছবি প্রকাশ করে নিজেই জানালেন অভিনেত্রী সামান্থা রুথ প্রভু। কতটা মারাত্মক হতে পারে এই রোগ? আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন চিকিৎসক।

সামান্থা জানিয়েছেন, মায়োসাইটিস নামের একটি রোগ বাসা বেঁধেছে শরীরে।

সামান্থা জানিয়েছেন, মায়োসাইটিস নামের একটি রোগ বাসা বেঁধেছে শরীরে। —ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২২ ১০:৪৮
Share: Save:

শনিবার ইনস্টাগ্রামে নিজের বাম হাতের রক্তনালিতে ওষুধের নল লাগানো একটি ছবি প্রকাশ করেন অভিনেত্রী সামান্থা রুথ প্রভু। জানান, মায়োসাইটিস নামের একটি রোগ বাসা বেঁধেছে শরীরে। ছবি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই উদ্বেগ দেখা দিয়েছে সামান্থার সহকর্মী এবং অনুরাগীদের একাংশের মধ্যে। নিজের পোস্টে অভিনেত্রী লিখেছেন, “কয়েক মাস আগে আমার একটি অটো ইমিউন রোগ ধরা পড়ে। রোগটির নাম মায়োসাইটিস। ভেবেছিলাম, সুস্থ হওয়ার পরেই সে কথা জানাব। কিন্তু যা ভেবেছিলাম, সুস্থ হতে তার তুলনায় বেশি সময় লাগছে।” সত্যিই কতটা উদ্বেগের সামান্থার এই রোগ?

প্রথমেই জানা দরকার, কাকে বলে ‘অটো ইমিউন’ রোগ। আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ করার যে ব্যবস্থা, তাকেই ‘ইমিউনিটি’ বা ‘অনাক্রম্যতা’ বলে। বাইরে থেকে কোনও বিজাতীয় পদার্থ কিংবা জীবাণু দেহে প্রবেশ করলে সেই প্রতিরোধ ব্যবস্থা সক্রিয় হয়ে ওঠে। আক্রমণ করে ওই জীবাণুকে। কখনও কখনও সেই প্রক্রিয়াটিতেই গোলমাল দেখা দেয়। নিজদেহের কোনও অঙ্গকেই দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভুল করে শত্রু ভেবে বসে। করে আক্রমণ। ফলে বাইরে থেকে আসা কোনও রোগজীবাণু নয়, শরীর নিজেই নিজের ক্ষতি করতে থাকে।

এনআরএস হাসপাতালের চিকিৎসক সৌরভ দাস বলেন, “‘মায়ো’ শব্দের অর্থ পেশি আর ‘আইটিস’ মানে প্রদাহ। কাজেই সোজা ভাষায় বলতে গেলে মায়োসাইটিস হল পেশির প্রদাহ। অটো ইমিউন মায়োসাইটিসে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভুলবশত দেহেরই সুস্থ সবল পেশিকে আক্রমণ করে। ফলে এই বিরল সমস্যায় পেশি দুর্বল হয়ে যায়।”

কোন কোন লক্ষণে চেনা যায় রোগ?

প্রথম প্রথম দেহের বিভিন্ন অঙ্গে শুরু হয় ব্যথা। হাত, পা, ঘাড়ের পেশিতে যন্ত্রণা হয়। তবে যে কোনও পেশিতেই বাসা বাঁধতে পারে এই রোগ। পেশি এতই দুর্বল হয়ে যায় যে, রোগী মাঝেমধ্যেই পড়ে যেতে পারেন। একটানা দাঁড়িয়ে থাকলে কিংবা দীর্ঘ ক্ষণ বসে থাকলে ক্লান্ত লাগে শরীর। চিকিৎসক বলেন, “ধরুন, রোগী বেশ কিছুক্ষণ চেয়ারে বসে আছেন, যেই উঠতে যাবেন মনে হবে শরীর আর দিচ্ছে না।” যদি খাদ্যনালির পেশি কিংবা ডায়াফ্রাম পেশিতে এই সমস্যা হয়, তবে খাবার খেতে বা শ্বাস নিতেও সমস্যা হতে পারে। ঠিক মতো চিকিৎসা না হলে, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা থেকে মৃত্যুর আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না, মত চিকিৎসকের।

চিকিৎসা কী?

চিকিৎসক জানান, মূলত ইমিউনো সাপ্রেসিভ ও স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা হয় এই রোগের। তবে রোগের প্রকারভেদ রয়েছে। রোগের প্রকৃতি এবং রোগী চিকিৎসায় কতটা সাড়া দিচ্ছেন, তার উপর নির্ভর করছে অনেক কিছুই। কখনও কখনও সারা জীবনও ওষুধ খেতে হতে পারে রোগীকে। সামান্থা অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁর চিকিৎসকেরা যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী যে, তিনি সেরে উঠবেন। শারীরিক ও মানসিক ভাবে তাঁর মধ্যে প্রবল টানাপড়েন চলছে। তবু অসুস্থতার দিনগুলি তিনি পেরিয়ে যেতে পারবেন বলেই বিশ্বাস তাঁর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Samantha Prabhu Disease
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE