বিয়েবাড়ি বা নিমন্ত্রণ বাড়িতে ভূরিভোজের পরে জল পিপাসা বেশি পায়। বাড়িতেও দেখবেন, কষা মাংস বা রসিয়ে মাছের কোনও পদ খাওয়ার পরে পিপাসা বেশিই পায়। এক প্যাকেট চিপ্স বা আস্ত একটা বার্গার খাওয়ার পরে, খালি মনে হয় ঢকঢক করে জল খাই। ভাজাভুজি বা নোনতা খাবার বেশি খেলে শরীরে জলের ঘাটতি হয়। এমনটাই জানাচ্ছেন গবেষকেরা। ‘জার্নাল অফ ক্লিনিকাল ইনভেস্টিগেশন’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, নোনতা খাবার বেশি খেলে শরীরে সোডিয়ামের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায় যা কোষ থেকে জল টেনে নেয়। ফলে বারে বারেই জল পিপাসা পেতে থাকে।
নোনতা খাবার খেলে পিপাসা বেশি পায় কেন?
সারা দিনে নুন কতটা খাবেন, তার হিসেব আছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব বলছে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দিনে ৫ গ্রামের বেশি নুন খাওয়া কোনও মতেই ঠিক নয়। যদি এর বেশি নুন শরীরে ঢোকে, তা হলে সোডিয়ামের ঘনত্ব বৃদ্ধি পাবে। তখন শরীরে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বিগড়ে যাবে। রক্তে সোডিয়ামের ঘনত্ব বাড়লে ‘অসমোসিস’ প্রক্রিয়ায় কোষের ভিতর থেকে জল বেরিয়ে যেতে থাকবে। ফলে শরীরে জলের ঘাটতি হবে।
নোনতা খাবার বেশি খেলে রক্তে ইউরিয়ার মাত্রাও বৃদ্ধি পায়। এতেও জলশূন্যতার সমস্যা দেখা দেয়। ইউরিয়া বাড়লে কিডনির কার্যকারিতা কমতে থাকে। কিডনি শরীরের বর্জ্য পদার্থ, যেমন ইউরিয়া, শরীর থেকে বার করে দেয়। কিন্তু কিডনির সক্রিয়তা কমলে রক্তে দূষিত পদার্থের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে। ইউরিয়ার মাত্রা বাড়লে শরীরে জল ও ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বিগড়ে যায়, তখন ডিহাইড্রেশন বা জলশূন্যতার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আরও পড়ুন:
তাই নুন খাওয়ার পরিমাণ কমাতে হবে। খাওয়ার পাতে কাঁচা নুন নিয়ে বসবেন না। প্যাকেটজাত খাবার এড়িয়ে চলুন। যেকোনও প্যাকেটজাত বা প্রক্রিয়াজাত খাবারে সোডিয়ামের মাত্রা থাকে অত্যন্ত বেশি। পাউরুটি, কেক, বিস্কিট, মাখন, সসেজ, বেকন, সালামি, চিপস, ভুজিয়া, ফ্রোজেন ফুড, ক্যানড স্যুপের মতো খাবারে সোডিয়াম বেশি থাকে। সয় সস, টম্যাটো সস, চিলি সস, কাসুন্দি, মেয়োনিজ় এ সবেও নুনের পরিমাণ বেশি থাকে। তাই এগুলি খাওয়াও কমাতে হবে। রেস্তোরাঁর খাবার, জাঙ্ক ফুডে সোডিয়ামের মাত্রা অত্যন্ত বেশি থাকে। তাই বাইরে থেকে খাবার না আনিয়ে বাড়িতেই খাবার বানিয়ে নিন। এতে নুনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।