পেশাগত চাপ, সংসারের দায়িত্ব, সময় মতো খাওয়াদাওয়া না করা—নিয়মিত এই অনিয়ম চলতে থাকলে একটা বয়সের পর শরীরে নানা রোগ বাসা বাঁধতে শুরু করে। তাই পুরুষ এবং মহিলা উভয়েরই নিজের শরীরের প্রতি বাড়তি নজর রাখা উচিত। মহিলারা নিজের প্রতি যত্ন নিলেও পুরুষেরা অনেক ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যকে অবহেলা করেন। তাতেই বাড়ে বিপদ। ৪০-এ পা দেওয়ার পরেও সতর্ক না হলে সমস্যা আরও বাড়ে। সময় থাকতে একটু সতর্ক হলেই কিন্তু অনেক বিপদ এড়ানো যায়। জেনে নিন ৪০-এর পর কোন ভুলগুলি করলে চলবে না।
১) ফাইবার কম খাওয়া: ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার ডায়াবিটিস ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। এ ছাড়া, পরিপাকক্রিয়া উন্নত করতেও ফাইবার দারুণ কার্যকর। মুসুর ডাল, শাক, বাদাম, ড্রাই ফ্রুটস, মটরশুঁটি, ওটসের মতো ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার ৪০ পেরোনোর পর প্রতি দিনের খাদ্যতালিকায় রাখা জরুরি।
২) প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া: প্রক্রিয়াজাত খাবারে রাসায়নিক ছাড়াও খুব বেশি মাত্রায় নুন থাকে, যা খাওয়া মোটেও ভাল নয়। ৪০-এর পর উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি এড়াতে কম সোডিয়াম যুক্ত খাবার বেশি করে খেতে হবে। কলা, পালংশাক ছাড়াও বেশ কিছু সব্জি ও ফলে সোডিয়ামের পরিমাণ কম। এই ধরনের খাবার শরীরে পটাশিয়ামের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে।
৩) ধূমপান: ধূমপানের অভ্যাস আছে? তা হলে এখনই বদল আনুন সেই অভ্যাসে। এতে কেবল ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে না, শরীরে একাধিক রোগ বাসা বাঁধে এই অভ্যাসের কারণে।
৪) শরীরচর্চা না করা: অনীহা থাকলেও ৪০-এর পর শরীরচর্চায় মন দিতে হবে। বিশেষ করে ‘স্ট্রেন্থ ট্রেনিং এক্সারসাইজ়’-এর উপর জোর দিতে হবে। কাজের মাঝে সময় না পেলে অন্তত দিনে আধ ঘণ্টা হাঁটলেও হবে। শারীরিক কসরতের মধ্যে থাকলে অনেক রোগের হাত থেকেই মুক্তি পেতে পারেন।
৫) কম ঘুম: ৪০-এর পরে ঘুমের সঙ্গে আপস নয়। এই পর্যায় ৭-৮ ঘণ্টার ঘুম জরুরি। তা না হলেই ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলত্বের মতো রোগের প্রকোপ বাড়বে। তাই রাত জেগে সমাজমাধ্যমে চ্যাট করা কিংবা ওয়েব সিরিজ় দেখা বন্ধ করতে হবে।
এ সব ছাড়াও সবচেয়ে বেশি জরুরি হল নির্দিষ্ট সময় অন্তর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানো। অনেকেরই অভ্যাস খুব বেশি শারীরিক সমস্যা হলে তবেই চিকিৎসকের কাছে যান তাঁরা। তবে কোনও রকম সমস্যা না থাকলে ৪০-এর পর বছরে অন্তত এক বার ‘ফুল বডি চেকআপ’ করানো জরুরি। রোগের আগাম ইঙ্গিত পাওয়া গেলে পরবর্তীকালে সমস্যার হাত থেকে নিস্তার পাওয়াও সহজ হয়।