বর্ষার সময়ে জ্বরজারি যেমন বেশি হয়, তেমনই বমি, পেটের সমস্যা লেগেই থাকে। অনেকে ভাবেন, গরমের দিনেই বুঝি ডিহাইড্রেশন হয়, অর্থাৎ শরীর জলশূন্য হয়ে পড়ে। তা নয়। বর্ষার সময়ে এই সমস্যা আরও বাড়ে। সে কারণে চিকিৎসকেরা পর্যাপ্ত পরিমাণে জল ও তরল খাবার খেতে বলেন। আবহাওয়ার এই ভোলবদলের সময়ে শরীর সুস্থ রাখতে হলে শুধু জল নয়, রোজ খেতে হবে ইলেকট্রোলাইট পানীয়। তা হলে শরীরে খনিজ উপাদানগুলির ভারসাম্যও বজায় থাকবে।
ইলেকট্রোলাইট কী?
জলে মিশে থাকা কিছু খনিজ আয়নই হল ইলেকট্রোলাইট। নুন-চিনির যে জল খাওয়া হয়, তা-ও কিন্তু একপ্রকার ইলেকট্রোলাইট পানীয়। সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্লোরাইড, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ইত্যাদি খনিজ লবণ জলে মিশে থাকলে, তাকে ইলেকট্রোলাইট পানীয় বলা হয়। শরীরে এই খনিজ পদার্থগুলোর ভারসাম্য বজায় রাখা সুস্থ থাকার পক্ষে খুবই জরুরি।
শরীরে প্রধানত চারটি কাজের জন্য এই ইলেকট্রোলাইট প্রয়োজন— ১) পেশির শক্তি বৃদ্ধি, পেশির সঙ্কোচন ও প্রসারণে সাহায্য করা, ২) শরীরে জল ও খনিজ লবণের ভারসাম্য ধরে রাখা, ৩) রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং ৪) শরীরে পিএইচ ব্যালান্স , অর্থাৎ, অম্ল ও ক্ষারের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।
আরও পড়ুন:
ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় থাকলে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা হবে না। অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম, ব্যায়াম, পেটখারাপ, বমি, জ্বর ইত্যাদি কারণে শরীরে থেকে যখন জল বেরিয়ে যায়, তখন এই ইলেকট্রোলাইট পানীয়গুলি খেলে উপকার মেলে।
কী কী ইলেকট্রোলাইট পানীয় বাড়িতে বানাবেন?
লেবু-মধুর ইলেকট্রোলাইট
খুবই সাধারণ ঘরোয়া উপায়ে এই পানীয় বানানো যায়। জ্বর বা পেটখারাপের সমস্যা হলে এক গ্লাস জলে একটি গোটা পাতিলেবু ও মধু মিশিয়ে নিন, তাতে মেশান এক চিমটে ব্ল্যাক সল্ট। এই পানীয় দিনে দু’বার খেলে শরীরে জলশূন্যতা হবে না।
লেবু-মধুর ইলেকট্রোলাইট। ছবি: এআই।
নারকেলের জলের ইলেকট্রোলাইট মিক্স
নারকেলের জলের ইলেকট্রোলাইট মিক্স। ছবি: এআই।
নারকেলের জলে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম থাকে। নারকেলের জলের সঙ্গে অর্ধেকটা পাতিলেবু ও এক চিমটে সৈন্ধব লবণ বা পিঙ্ক সল্ট মিশিয়ে খেলে তা এনার্জি ড্রিঙ্কের কাজ করবে। ভারী ব্যায়ামের পরে শরীর থেকে ঘামের সঙ্গে অনেকটাই খনিজ লবণ বেরিয়ে যায়। সেই সময়ে বাজারচলতি এনার্জি ড্রিঙ্কের বদলে এই পানীয় খেলে উপকার বেশি হবে।
অ্যাপল সাইডার ভিনিগার হাইড্রেশন টনিক
অ্যাপল সাইডার ভিনিগার হাইড্রেশন টনিক। ছবি: ফ্রিপিক।
অ্যাপল সাইডার ভিনিগার শরীরে পিএইচের ভারসাম্য ধরে রাখতে বড় ভূমিকা নেয়। এক গ্লাস জলে এক চামচ অ্যাপল সাইডার ভিনিগার, এক চামচ লেবুর রস, ১ চামচ মধু ও আধ চামচ পিঙ্ক সল্ট মিশিয়ে খেলে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা দূর হবে। এটি ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি এনার্জি ড্রিঙ্ক। ভাইরাল জ্বরে দুর্বল হয়ে পড়লে এটি খেলে উপকার পেতে পারেন।