রোগা হতে কেউ জিমে যান, কেউ আবার মেদ ঝরানোর জন্য নেটমাধ্যমের উপর নির্ভর করেই ডায়েট করতে শুরু করেন। আর ডায়েট মানেই সকাল সকাল খালি পেটে গরম জলে লেবু-মধু দিয়ে তো খেতেই হবে! অনেকের ধারণা, এই পানীয় খেলেই শরীরের আনাচকানাচে জমে থাকা মেদ গলে যাবে।
পুষ্টিবিদ অন্যনা ভৌমিকের মতে, ঘরোয়া কোনও পানীয়ই ফ্যাট গলাতে পারে না। সকালে লেবু-জল খেলেই যে মেদ গলে যাবে, এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। শরীরচর্চা না করে, খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম করার পর, এই পন্থা বছরের পর বছর ধরে মেনে চললেও কিন্তু মেদ গলবে না। শরীরের চারপাশে যে মেদ জমা হয়, তার মাত্রা কমানো যায় এক মাত্র নিয়ম মেনে জীবনযাপন করলে। এর জন্য স্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া আর রোজ শরীরচর্চা করতে হবে। ঘরোয়া পানীয়ের উপর ভরসা করলে চলবে না।
তাই বলে কি লেবু জল খাওয়া উচিত নয়?
রোজকার ডায়েটে লেবু রাখা ভীষণ জরুরি। লেবুতে থাকে ভিটামিন সি, যা শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, শরীর চাঙ্গা রাখে, ত্বক ও চুলের জেল্লা বৃদ্ধি করে। সকালে উঠে নিয়ম করে লেবু জল খেতেই পারেন। তবে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে খেলে তবেই হবে কাজ।
১) খুব বেশি গরম জলে লেবু মিশিয়ে খেলে তাতে থাকা ভিটামিন সি নষ্ট হয়ে যায়। লেবুর অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ও অ্যান্টি-ইমফ্লেমেটরি গুণও নষ্ট হয়ে য়ায়। তাই কোনও লাভ হয় না। তাই লেবু জল খেতে হলে ঘরের তাপমাত্রায় রাখা জলে মিশিয়ে খান।
২) অনেকেই লেবু জল খাওয়ার সময় বাজার থেকে কিনে আনা বোতলের লেবুর রস ব্যবহার করেন। এই প্রকার লেবুর রসে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক মেশানো থাকে। তাই আসল লেবুর কোনও পুষ্টিগুণই পাওয়া যায় না।
৩) লেবু জলে মধু মেশানোর সময়েও সতর্ক থাকতে হবে। অনেকেই লেবুর টক ভাব কাটাতে খুব বেশি মধু দিয়ে ফেলেন। খুব বেশি মধু খেয়ে ফেললে শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা অল্প সময়ে অনেকটা বেড়ে যায়। এই অভ্যাস শরীরে প্রদাহের মাত্রাও বাড়িয়ে তোলে। তাই লেবুজলের কোনও ভাল গুণই শরীর লাভ করতে পারে না।