মাথাব্যথা বা মাইগ্রেনের সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। স্ক্রিনটাইম যত বাড়ছে, ততই মাথা যন্ত্রণার সমস্যা ভোগাচ্ছে। সারা দিন ল্যাপটপ-কম্পিউটারে ঘাড় গুঁজে কাজ, বাড়ি ফিরেও মোবাইলে স্ক্রল করা চলছে। একটানা স্ক্রিনের দিকে চোখ আর মনে পাহাড়প্রমাণ চিন্তাভাবনা, মাথাব্যথার সমস্যা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। তার উপর ভুলভাল খাওয়ার অভ্যাস, নেশা তো আছেই।
ফোটোফোবিয়ার সমস্যাও যে হচ্ছে না তা নয়। অনেকেই বলেন, একটু আলো চোখে পড়লেই মাথা যেন ছিঁড়ে যায়, গা গোলাতে থাকে। কানে কোনও শব্দ নেওয়াই যায় না। এই ব্যথা যখন-তখন আসে আর একটানা চলতে থাকে। এর থেকে মাইগ্রেনের লক্ষণও দেখা দেয় অনেকের। বেশির ভাগেরই অভ্যাস হল, মাথাব্যথা হলেই ব্যথানাশক কোনও ওষুধ খেয়ে ফেলা বা বাম লাগানো। এতে সমস্যা সাময়িক ভাবে কমে মাত্র, উপশম হয় না। আর ব্যথানাশক ওষুধের নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা তো কমবেশি সকলেরই জানা। তা হলে উপায়? মাথাব্যথার সমস্যা থেকে রেহাই মিলবে কী ভাবে?
মাথাব্যথা বা মাইগ্রেনের যন্ত্রণা কমাতে পারে ম্যাগনেশিয়াম। ম্যাগনেশিয়াম অক্সাইড দিয়ে তৈরি ওষুধ মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে দেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু ওষুধ হিসেবে না খেয়ে যদি রোজের খাবার থেকেই ম্যাগনেশিয়াম পাওয়া যায়, তা হলে ফল হয় অনেক বেশি। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভয়ও থাকে না। আপেল, আনারস, কলা, পেঁপে, খেজুরে প্রচুর পরিমাণে থাকে। ১০০ গ্রামের মতো খেজুর থেকে ৫৪ মিলিগ্রামে মতো ম্যাগনেশিয়াম পাওয়া সম্ভব। এই খেজুর দিয়েই যদি স্বাস্থ্যকর পানীয় তৈরি করে নেওয়া যায়, তা হলে রোজের মাথাব্যথার সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।
আরও পড়ুন:
রাগি ও খেজুরের স্মুদি
প্রোটিন, ফাইবারে সমৃদ্ধ রাগি শরীরের প্রদাহ কমাতে পারে। মাথাব্যথা হোক বা ঋতুস্রাবের যন্ত্রণা, রাগি রোজের ডায়েটে রাখলে ব্যথা-বেদনা থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে। রাগির সঙ্গে যদি খেজুরের মিলমিশ হয়, তা হলে উপকার হবে আরও বেশি। ভিটামিন বি৬, কে, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং ফাইবারের গুণে ভরপুর খেজুর শরীরের জন্য খুবই ভাল।
কী ভাবে বানাবেন স্মুদি?
উপকরণ
২ গ্রাম রাগির আটা
১ কাপ দুধ (কাঠবাদামের দুধ বা সয়া মিল্কও হতে পারে)
৩টি খেজুর
আধ চা-চামচ ছোট এলাচের গুঁড়ো
প্রণালী
দুধ গরম করে তাতে রাগির আটা দিয়ে ফোটাতে থাকুন। গরুর দুধে অ্যালার্জি হলে উদ্ভিজ্জ দুধও ব্যবহার করতে পারেন। কাঠবাদামের দুধ বা সয়া মিল্ক ভাল বিকল্প হতে পারে। ৫-১০ মিনিটের মতো ফুটিয়ে থকথকে মিশ্রণ তৈরি হলে নামিয়ে নিয়ে ঠান্ডা হতে দিন। এর পর এর সঙ্গে খেজুর মিশিয়ে ভাল করে ব্লেন্ড করে নিন। উপর থেকে এলাচের গুঁড়ো ছড়িয়ে নিন।
এই পানীয় রোজ খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে। সর্দিকাশি বা অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে, তা-ও দূর হবে।