নভেম্বরের শেষ থেকে জানুয়ারি অবধি শহরজুড়ে উৎসবের মরসুমই থাকবে। পার্টি, ঘুরতে যাওয়া, রাত জেগে আড্ডার আসরে মদ্যপান হবেই। অনেকেই বলবেন, পরিমিত মদ্যপানে তেমন ক্ষতির আশঙ্কা নেই। তবে চিকিৎসকেরা বলেন অন্য কথা। মদে খুব চট করে আসক্তি তৈরি হয়ে যায়। তাই অনেকেই মাত্রা ঠিক রাখতে পারেন না৷ আরও বড় কথা, মদে যে সব উপকার হয় বলে মনে করা হয়, সেই সব উপকার পাওয়ার বিকল্প পথও আছে৷
মদ্যপানে শরীরের ভিতরে গরম ভাব এলেও, তা কিন্তু রক্তনালির সঙ্কোচন ও প্রসারণ-এর পথকে রুদ্ধ করে। এতে শরীরের অভ্যন্তরে তাপমাত্রায় দ্রুত পরিবর্তন ঘটে। ফলে হাইপোথার্মিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
নিয়মিত মদ্যপান করলে রক্তচাপ ও রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ বাড়তে পারে৷ ক্যালোরি বেড়ে যায়৷ ওজন বাড়ে৷ বাড়ে ডায়াবিটিসের আশঙ্কা৷ ইস্কিমিক হৃদ্রোগের আশঙ্কাও বাড়ে৷ তাই মদ্যপানের বিকল্প হিসেবে এমন কিছু উষ্ণ পানীয় যদি পান করেন যা মনও ভরাবে আবার স্বাস্থ্যরক্ষাও করবে, তা হলে কেমন হয়?
মদ নয়, ভরসা রাখুন পাঁচ উষ্ণ পানীয়ে
বাদামের দুধ
কাঠবাদাম সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন। সকালে ভেজা বাদাম বেটে নিয়ে মিহি মিশ্রণ তৈরি করে ফেলুন। এর পর সেই মিশ্রণ দুধের সঙ্গে মিশিয়ে কম আঁচে ফুটতে দিন। মেশান অল্প দারচিনি, এলাচের গুঁড়ো ও সামান্য কেশর। মিশ্রণ ফুটে ঘন হয়ে এলে নামিয়ে নিন। উপরে পেস্তা ও আরও কিছুটা বাদামের কুচি ছড়িয়ে পরিবেশন করুন। বাদাম দুধ শীতকালের উপাদেয় পানীয় যা শরীর গরম রাখবে ও স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী।
শীতের দিনের উষ্ণ পানীয় যা সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর। ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।
অশ্বগন্ধা চা
রোজ সকালে বা বিকেলে এক কাপ অশ্বগন্ধার চা খেতে পারেন। এক কাপ ফুটন্ত জলে এক চা-চামচ অশ্বগন্ধা মূলের গুঁড়ো দিয়ে ঢাকা দিয়ে রাখুন মিনিট ১০-১৫। ছেঁকে লেবুর রস ও মধু দিয়ে খান। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি প্রদাহের প্রবণতা কমবে। অশ্বগন্ধার জীবাণুনাশক গুণও আছে। কমবে মানসিক চাপ-অবসাদ ও বয়সজনিত ক্ষয়-ক্ষতির হার।
আরও পড়ুন:
কাশ্মীরি কাওয়া
কাওয়া হল কাশ্মীরি চা। কাঠবাদাম, কেশর, গ্রিন টি-র মিশ্রণে তৈরি এই পানীয় কাশ্মীরে বেশ জনপ্রিয়। সুস্বাদু এই চা শুধু গা গরম রাখতে সাহায্য করে না, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে। একটি পাত্রে জল ফুটতে দিন। তাতে একে একে মেশান দারচিনি, ছোট এলাচ, গ্রিন টি, এক চামচ গোলাপের শুকনো পাপড়ি ও সামান্য কেশর। জল ফুটে গেলে গ্রিন টি দিয়ে আঁচ বন্ধ করে দিন। এ বার কাচের পাত্রে কাঠবাদামের কুচি, কেশর ও মধু মিশিয়ে খেয়ে নিন।
হলুদ-দারচিনির চা
আধ চামচ কাঁচা হলুদ বাটা ও সিকি চামচ গোলমরিচের গুঁড়োতে ফুটন্ত জল মেশান। এতে মেশান একটা গোটা লেবুর রস আর দেড় চামচ মধু। তাতে দিন সামান্য দারচিনির গুঁড়ো। সকাল-বিকেল খেলে শীতের অসুখবিসুখ নিয়ে আর ভাবতে হবে না।
উষ্ণ অ্যাপল সাইডার ভিনিগার
মদ্যপানের ইচ্ছা কমাবে উষ্ণ অ্যাপল সাইডার ভিনিগার। শরীর থেকে টক্সিনও দূর করবে। এক কাপ জলে এক ইঞ্চির মতো দারচিনির স্টিক, ২-৩টি লবঙ্গ মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। তাতে দু’চামচ অ্যাপল সাইডার ভিনিগার মিশিয়ে নিলেই হবে। এই পানীয় সর্দি-কাশি, অ্যালার্জির সমস্যাও দূর করবে