উপোস কী ভাবে করলে উপকার হবে? ছবি: ফ্রিপিক।
উপোস করা শরীরের জন্য ভাল না খারাপ, সে নিয়ে বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মতামত আছে। অনেকেই বলেন, সপ্তাহে অন্তত এক দিন পাকস্থলীকে বিশ্রাম দিলে হজমশক্তি বাড়ে ও শরীরও জমা করে রাখা ‘টক্সিন’ বা দূষিত পদার্থ বার করে দেওয়ার সুযোগ পায়। আর সপ্তাহে যদি দু’দিন উপোস করে থাকেন, তা হলে? এর উপকার নাকি অনেক। তবে নিয়ম মেনে করতে হবে। তা হলে তাড়াতাড়ি মেদ ঝরবে, শরীরও থাকবে সুস্থ ও চনমনে।
উপোস দু’ভাবে করা যেতে পারে— ১) সপ্তাহে দু’দিন পুরোপুরি না খেয়ে থাকা ২) ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং দ্বিতীয় ধরনের ডায়েটে দিনে ১৬ ঘণ্টা না খেয়ে থাকতে হবে। তবে অনেকেই ১২-১৪ ঘণ্টা দিয়ে শুরু করেন।
শরীরে কী কী বদল আসবে?
১) রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রিত হবে। ইনসুলিন হরমোনের ক্ষরণে ভারসাম্য থাকবে। টাইপ ২ ডায়াবিটিসের ঝুঁকি অনেক কমে যাবে।
২) শরীরে ক্যালোরি কম ঢুকবে, ফলে হজমশক্তি বাড়বে। দীর্ঘ সময়ে না খেয়ে থাকলে শরীর কিটোসিস মোডে চলে যায়। যার মানে শরীরে জমা থাকা স্নেহপদার্থ থেকেই মূলত শক্তি তৈরি করবে শরীর। তাই ওজনও কমবে চটপট।
৩) শরীরে শর্করার মাত্রা যে হেতু নিয়ন্ত্রিত হবে, তাই প্রদাহ কমবে। শরীরে অস্বস্তি কম হবে, গ্যাস-অম্বলের সমস্যাও কমবে। গলাবুক জ্বালা বা ‘অ্যাসিড রিফ্লাক্স’-এর সমস্যা থাকলে তা অনেকটাই কমে যাবে।
৪) দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকলে শরীরে ‘অটোফ্যাগি’-র প্রক্রিয়া শুরু হবে। মৃত ও ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলির জায়গায় নতুন কোষ তৈরি হবে। এই প্রক্রিয়া নিয়মমাফিক চললে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়বে। কোষের জীবনীকাল বেড়ে যাওয়ায়, ক্রনিক অসুখগুলির ঝুঁকিও কমবে।
৫) রক্তচাপ কমবে, শরীরে কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসিরাইডের মাত্রা বেশি থাকলে, তা-ও কমতে শুরু করবে। রক্ত সঞ্চালনের প্রক্রিয়া সঠিক ভাবে হবে, ফলের হার্টের স্বাস্থ্যও ভাল থাকবে।
৬) কিছু গবেষণা বলছে, প্রস্টেট ক্যানসার এবং কোলোন ক্যানসারের মতো রোগের আশঙ্কা কমে, যদি নিয়ম করে উপোস করা যায়।
৭) শরীর থেকে টক্সিন বা দূষিত পদার্থ বেরিয়ে গিয়ে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়ে। অনেক বেশি তরতাজা দেখায়। মানসিক স্বাস্থ্যও ভাল থাকে।
উপোস করতে হবে নিয়ম মেনে। উপোসের আগে পরে সব সময়েই হালকা খাবার খাওয়া দরকার। নিয়ম করে প্রচুর জল খাওয়া দরকার। উপোসের পরেই প্রচুর তেলমশলা দেওয়া খাবার বা ভারী খাবার খেয়ে ফেললে পেটের গোলমাল, বুক ধড়ফড় করা, বমি ভাব, মাথা ঘোরার মতো সমস্যা হতে পারে। অনেকেই উপোসের পর ফলের রস খাওয়ার কথা বলেন। তবে তা পরিমিত খেতে হবে। পাঁচ-সাত গ্লাস ফলের রস বেশি চিনি দিয়ে খেলে ফেললে উপকারের বদলে অপকারই হবে।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। নিম্ন রক্তচাপ, রক্তাল্পতা, হার্টের
রোগ, ডায়াবিটিস, কিডনির অসুখ থাকলে উপোস করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের জন্য কোনওরকম উপোসই চলবে
না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy