নতুন জামাকাপড় কেনার পরই গায়ে চাপিয়ে নেন? অথবা আঁটছে কি না দেখার জন্য দীর্ঘ ক্ষণ গায়ে রাখেন? এই অভ্যাসে শরীরে এবং ত্বকে নানাবিধ প্রভাব পড়ছে। দোকান থেকে কিনে আনুন বা অনলাইনে কেনার পর কেতাদুরস্ত বাক্সে করে বাড়ি আসুক, সব পোশাকের ক্ষেত্রেই এক নিয়ম মেনে চলা উচিত। গায়ে চাপানোর আগে ধুয়ে নেওয়া উচিত সমস্ত ধরনের কাপড়। লিনেন বুঝে ঠান্ডা জল ও গরম জলের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কিন্তু সাবান জলে এক বার জামা ধুয়ে নিতেই হবে।
নতুন জামা বহু হাত হয়ে আপনার কাছে এসেছে। বহু পথ পেরোতে হয়েছে তাকে। ফলে নতুন কাপড়ে রাসায়নিক ( যেমন রঞ্জক, ফর্মালডিহাইড), ময়লা, জীবাণু এবং কীটপতঙ্গের বাসা খুঁজে পাওয়া আশ্চর্যজনক নয়। তা থেকে ত্বকে জ্বালা, ফুস্কুড়ি এবং সংক্রমণ হতে পারে। রাসায়নিকের অংশ কাপড়ের ভিতরেই থেকে যায়, যা ত্বকের সংস্পর্শে এসে চুলকানি, লালচে দাগ, র্যাশ কিংবা অ্যালার্জির মতো সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই পোশাকের সঙ্গে অন্তর্বাসও ভাল করে ধুয়ে নেওয়া উচিত।
এই নিয়ম পালন না করলে নানাবিধ অসুখের কবলে পড়তে পারেন। মুম্বইয়ের ফিজ়িয়োথেরাপিস্ট এবং পুষ্টিবিদ রেবেকা পিন্টো ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিয়োয় বলছেন, ‘‘অনলাইনে যে সব জামা আপনি কিনছেন, সেগুলির অধিকাংশই কেউ না কেউ পরেছেন। পরে ফেরত দিয়েছেন। অথবা দোকানে রাখা জামাও এক বার পরে নিয়ে পরীক্ষা করে নেন সকলে। এমনই এক জনের খবর দেখেছিলাম, যিনি অনলাইনে কেনা পোশাক পরে ভয়ঙ্কর ত্বকের সংক্রমণ বাঁধিয়ে ফেলেছিলেন। মোলাস্কাম কনটেজিওসাম ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন।’’
নতুন জামা না ধুয়ে পরবেন না। ছবি: সংগৃহীত।
পুষ্টিবিদ-এর সংযোজন, ‘‘ত্বক থেকে ত্বকে এই ভাইরাস সঞ্চারিত হয় অথবা সংক্রমিত পোশাক থেকেও অন্যের শরীরে পৌঁছে যেতে পারে। না ধোয়া জামাকাপড় থেকে এই রোগের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। দীর্ঘ দিন ধরে এই জামাগুলি গুদামে বন্ধ থাকায় তাতে ছত্রাক থেকে ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে।’’
শিশুদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি আরও বেশি। শিশুদের ত্বক অত্যন্ত নরম হওয়ায় নতুন কাপড়ে থাকা রাসায়নিক বা জীবাণু খুব দ্রুত তীব্র র্যাশ, ঘা বা সংক্রমণের কারণ হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে এই সংক্রমণ গুরুতর হতে পারে। শিশুদের জামাকাপড়, তোয়ালে বা বিছানার চাদর ব্যবহারের আগে অবশ্যই ধুয়ে নেওয়া প্রয়োজন।
এ সমস্ত কারণ ছাড়াও অনেক কাপড় প্রথম ধোয়াতেই রং ছাড়ে। পরে একসঙ্গে ধুলে অন্য পোশাকের রং নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আগে ধুয়ে নিলে এই ঝামেলা এড়ানো যায় এবং কাপড় পরার সময় স্বস্তিও পাওয়া যায়।