বিয়ার স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর, না কি উপকারী? যুগ যুগ ধরে এই বিতর্ক চলে আসছে। নিয়মিত অ্যালকোহল খেলে লিভার ও কিডনিতে প্রভাব পড়ে, তা প্রমাণিত। তবে অনেকেই বলবেন, বিয়ারে অ্যালকোহলের মাত্রা কম, তাই বিয়ারই বেশি পছন্দের। ঘরোয়া পার্টি হোক বা বন্ধুদের আড্ডা, বিয়ার চাই-ই চাই। বিয়ারের অনেক উপকারিতা আছে, এমনও ভাবেন অনেকে। কিন্তু সম্প্রতি কিছু গবেষণায় উঠে এসেছে ভিন্ন মত। বিয়ারে লাভের চেয়ে ক্ষতির মাত্রাই বেশি।
বিয়ারে লাভ না ক্ষতি?
বিয়ারে অ্যালকোহলের পরিমাণ খুব কম থাকে, চিনির মাত্রা নেই বললেই চলে। আমেরিকার কৃষি দফতর (ইউএসডিএ) থেকে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, ৩৫৫ মিলিলিটার বিয়ারে ক্যালোরি থাকে ১৫৩, প্রোটিন ২ গ্রাম, অ্যালকোহল ১৪ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১৩ গ্রাম, ম্যাগনেশিয়াম ২১ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৫০ মিলিগ্রাম। তাই আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়, বিয়ারে তেমন ক্ষতি নেই। কিন্তু রোজ যদি বিয়ার খেতে শুরু করেন, তা হলে কী কী সমস্যা হবে, তা-ও জেনে রাখা ভাল।
লিভারের বারোটা বাজবে
রোজ বিয়ার খেলে লিভারের কোষের ক্ষয় কেউ ঠেকাতে পারবে না। ফ্যাটি লিভার ও তা থেকে ধীরে ধীরে লিভার ফাইব্রোসিস হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে। ‘জার্নাল অফ হেপাটোলজি’-তে বিষয়টি নিয়ে একটি গবেষণাপত্রও প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, বিয়ার মাঝেমধ্যে খেলে তেমন ক্ষতি নেই। কিন্তু প্রায়ই খেতে থাকলে লিভারের রোগ হবেই।
আরও পড়ুন:
বেহাল দশা হবে পেটের
বিয়ার খেলে হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়, এমন ধারণা ভ্রান্ত। ‘গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি’ জার্নালে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, বিয়ার রোজ খেতে থাকলে অন্ত্রের উপকারী ব্যাক্টেরিয়াদের বংশ নাশ হবে। আর এরা সংখ্যায় কমলে তখন হজমশক্তিও দুর্বল হবে। ফলে গ্যাস, প্রদাহ বা ক্রনিক ইনফ্ল্যামেশনের সমস্যা দেখা দেবে। ডায়েরিয়াও ভোগাবে।
ওজন বাড়বে
ওজন বৃদ্ধি কেউ ঠেকাতে পারবে না। বিয়ারে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি এবং কার্বোহাইড্রেট থাকে, যা দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করতে পারে। বেশি বিয়ার খেলে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
জলের ঘাটতি হবে শরীরে
বিয়ার বেশি খেলে শরীরে থেকে প্রচুর জল ও খনিজ লবণ বেরিয়ে যায়, ফলে জলের ঘাটতি দেখা দেবে।
ক্ষতি হবে মস্তিষ্কের
বিয়ার খেলে ‘ব্রেন ফগ’ হতে পারে? ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ হাইরিস্ক বিহেভিয়র অ্যান্ড অ্যাডিকশন’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র অনুসারে, রোজ যদি বিয়ার খাওয়া কেউ শুরু করেন এবং অত্যধিক পরিমাণে খান, তা হলে মস্তিষ্কে প্রভাব পড়তে পারে। এতে ঘন ঘন মেজাজ বদলাবে, ছোটখাটো বিষয়ে ভুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেবে। আচমকা ভাবনাচিন্তা শ্লথ হয়ে যাওয়া, মনোযোগের অভাব, স্মৃতিলোপের মতো নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।