কার্বোহাইড্রেট, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, প্রোটিনের পাশাপাশি শরীর সুস্থ রাখতে ভিটামিনও জরুরি। তবে আপনার শরীরে ভিটামিনের চাহিদা কতটা, তা চিকিৎসকই বলতে পারবেন। রোজের খাওয়াদাওয়া থেকেই ভিটামিন শরীরে প্রবেশ করলে তা সবচেয়ে ভাল। কিন্তু এখনকার যা খাদ্যাভ্যাস, তাতে ভিটামিন তো বটেই, শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদানগুলিরও ঘাটতি হচ্ছে। সে কারণেই মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট অথবা বিভিন্ন রকম সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার অভ্যাস বাড়ছে। মাথা ব্যথা, মাথা ঘোরা, অতিরিক্ত ক্লান্তি ভাব থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়েই মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট কিনে খেয়ে ফেলেন অনেকেই। ডোজ় না জেনেই রোজ একটি করে ট্যাবলেট খেয়ে যান। এতে শরীরের ক্লান্তি ভাব কমে ঠিকই, কিন্তু অন্য সমস্যাও মাথাচাড়া দিতে থাকে। দিনের পর দিন মাল্টিভিটামিন খেয়ে যাচ্ছেন যাঁরা, তাঁদের জেনে রাখা ভাল ভিটামিন ট্যাবলেটের অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আছে। রোজ খেতে থাকলে তা লিভারের জটিল রোগের কারণ হয়ে উঠতে পারে।
মাল্টিভিটামিন সাপ্লিমেন্ট কী ভাবে ক্ষতি করে লিভারের?
ভিটামিন এ, ডি, ই ও কে হল ফ্যাট-সলিউবল ভিটামিন, অর্থাৎ এগুলি চর্বিতে দ্রবণীয়। এই ভিটামিনগুলির মাত্রা বেশি হলে সেগুলি লিভারে গিয়ে জমা হতে থাকে। দিনের পর দিন অতিরিক্ত ভিটামিন এ বা ডি লিভারে জমতে থাকলে তা থেকে লিভারের কোষের ক্ষয় শুরু হয়। বিষক্রিয়াও হতে পারে। এর ফলে লিভারের আকার বেড়ে যায়, তাতে প্রদাহ শুরু হয়। এমনকি, এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় লিভারে ক্ষত বা সিরোসিস অথবা অন্য কোনও জটিল রোগও হতে পারে।
কিছু ভিটামিন, যেমন নিয়াসিন (ভিটামিন বি৩) কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ঠিকই, কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে লিভারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। যদিও এটি একটি জল-দ্রবণীয় ভিটামিন, তবে অতিরিক্ত পরিমাণে নিলে তা লিভারের উৎসেচকগুলির মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। এতে লিভারের নানা রকম অসুখ দেখা দিতে পারে। সে কারণেই যে কোনও ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া একান্ত জরুরি।
আরও পড়ুন:
লিভারের কী কী ক্ষতি হতে পারে?
১) হজম প্রক্রিয়া দুর্বল হয়ে পড়বে। যা খাবেন ঠিক মতো হজম হবে না। ফলে অম্বলের সমস্যা বৃদ্ধি পাবে।
২) পেটের উপরে ডান দিকে ব্যথা হতে পারে। কিছু খেলেই পেট ফাঁপা, পেট ফুলে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেবে।
৩) যে সব সাপ্লিমেন্টে ভিটামিন এ ও আয়রনের মাত্রা বেশি, সেগুলি দিনের পর দিন উচ্চ মাত্রায় খেয়ে গেলে লিভারে বিষক্রিয়া হতে পারে। ফলে লিভারের স্বাভাবিক কাজ করার ক্ষমতা ব্যাহত হবে, রক্তে বিলিরুবিন জমা হয়ে জন্ডিসের লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
৪) শরীরের ভিতর রক্তক্ষরণ হতে পারে। নাক দিয়ে রক্ত পড়া, মাড়ি দিয়ে রক্তপাতের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।