দৌঁড়ঝাপ করে ওজন কমানো সকলের পক্ষে সম্ভব নয়। হার্টের ব্যামো থাকলে সব রকম ব্যায়াম করাও সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে যোগাসন বিকল্প হতে পারে। হাঁটাহাঁটি বা দৌড়নো অথবা সাঁতার কাটার সময় না পেলে, নিয়ম করে ১৫-২০ মিনিটের যোগাসন অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারে। যদি ওজন বেড়ে গিয়ে থাকে, সেই সঙ্গে ডায়াবিটিসও ধরা পড়ে তা হলে, যোগাসনের এক বিশেষ পদ্ধতি অভ্যাস করলে সুফল পেতে পারেন। আসনটির নাম সুপ্ত কূর্মাসন। ভঙ্গিমা দেখে কঠিন মনে হতে পারে, তবে রোজ অভ্যাস করলে আয়ত্তে আসবে।
যোগাসন প্রশিক্ষকেরা বলেন, ‘স্লিপিং টরটয়েজ় পোজ়’। ভারতীয় যোগাসনের খুব প্রাচীন পদ্ধতি এটি। এই আসন অভ্যাস করলে হাত-পায়ের অসাড়তা দূর হয়, পেশির শক্তিও বাড়ে।
কী ভাবে করবেন?
১) যোগা ম্যাটের উপর সোজা হয়ে বসুন। পা দু’টি সামনের দিকে ছড়িয়ে দিন।
২) শ্বাস নিতে নিতে শরীরকে সামনের দিকে বাঁকিয়ে দিন।
৩) হাত দুটি শরীরের দু’পাশ দিয়ে পায়ের নীচে নিয়ে যান, কনুই মেঝেতে রাখুন।
৪) এ বার শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে মাথা মেঝেতে ঠেকানোর চেষ্টা করুন।
৫) এ বার দু’টি হাত দু’টি হাঁটুর তলা দিয়ে গলিয়ে দু’দিকে ছড়িয়ে দিন। ধীরে ধীরে হাঁটু দু’টি মাটির কাছাকাছি নামিয়ে আনতে চেষ্টা করুন। পুরো শরীরটাকেই সেই অনুযায়ী টেনে আনতে হবে।
৬) দু’দিকে প্রসারিত দু’টি হাতের উপর ছড়ানো থাকবে দু’টি পা।
আরও পড়ুন:
৭) সুপ্ত কূর্মাসনে চেষ্টা করতে হবে হাত দু’টি দু’পাশ থেকে ধীরে ধীরে পিছনের দিকে নিয়ে যেতে। শুরুতে তা হবে না, তবে ধীরে ধীরে অভ্যাস করলে রপ্ত হবে।
সুপ্ত কূর্মাসন করলে কী লাভ হবে?
সুপ্ত কূর্মাসন অভ্যাস করলে পেট, কোমর ও নিতম্বের মেদ কমবে।
কাঁধ ও দুই হাতের পেশির নমনীয়তা বাড়বে। কাঁধের ব্যথা কমবে।
পিঠ ও কোমরের ব্যথা কমাতেও এই আসন উপযোগী।
শ্বাসজনিত যে কোনও রোগে কূর্মাসন অভ্যাস করতে পারলে উপকার হবে।
ডায়াবিটিসের রোগীরা এই আসন অভ্যাস করলে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
এই আসন অভ্যাসে হজমের সমস্যাও কমবে।
কারা করবেন না?
ঘাড়, হ্যামস্ট্রিং, কাঁধে চোট, আঘাত লেগে থাকলে এই আসন করতে যাবেন না।
মেরুদণ্ডের অস্ত্রোপচার হলে আসনটি না করাই ভাল।
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় আসনটি করা যাবে না।
সায়াটিকা, হার্নিয়া, স্লিপ ডিস্কের সমস্যায় এই আসন করা নিষিদ্ধ।