র্যাশ তো অনেক রকম হয়। তাই বলে ‘ডিজ়নি র্যাশ’। ডিজ়নির নাম শুনলেই মাথার দু’পাশে দু’টো গোল গোল কান, কালো গোল্লার মতো আস্ত একটা নাক, আকর্ণ বিস্তৃত হাসির ছোট্ট একটা ইঁদুরের মুখই মনে পড়ে। যাকে দেখলেই নস্টালজিয়ার দুনিয়া থেকে উঁকি দেয় সেই সব দুষ্টু মিষ্টি স্মৃতি। প্রচণ্ড ছটফটে সে অতি আদরের মিকি মাউস। তার সঙ্গে যদিও ত্বকের এমন সমস্যার কোনও যোগসূত্র নেই, তবে তার মতো দুরন্তপনা করলে আর নিয়ম না মানলে এমন সমস্যা হতে পারে বইকি। কার্টুন চরিত্রেরা বাস্তবে নেই, যদি থাকত, তা হলে সর্বসময়ে এমন ছোটাছুটি, লাফালাফির জন্য তাদের ত্বকেও হয়তো এমন সমস্যা হত। তাই নাম রাখা হয়েছে ডিজনি র্যাশ।
বিষয়টি কী?
দৌড়োদৌড়ি বেশি করলে বা শরীরচর্চার পরে ঘাম জমে ত্বকে একরকম লালচে র্যাশ হয়। এই র্যাশ ছোঁয়াচে নয়, বিপজ্জনকও নয়। পায়ের নীচের অংশে, গোড়ালি বা পায়ের পাতায় লাল ছোপ ছোপ মতো র্যাশ বা ফোস্কা পড়ে। একে চিকিৎসার পরিভাষায় বলা হয় ‘এক্সারসাইজ়-ইনডিউসড ভ্যাসকুলাইটিস’ (ইআইভি)। খুব বেশি হাঁটাহাঁটি করলে বা দৌড়লো, অথবা পায়ের ব্যায়াম অনেক ক্ষণ ধরে করলে সূক্ষ্ম রক্তজালিকাগুলি ছিঁড়ে যায়। তখন প্রদাহ বাড়ে আর সে থেকেই র্যাশ হয় পায়ে। তবে এই র্যাশ বেশি দিন থাকে না। দিন দশেক পরে নিজে থেকেই কমতে থাকে।
আরও পড়ুন:
ভ্যাপসা গরমে ‘ডিজনি র্যাশ’ হয় অনেকেরই। আবার বর্ষার দিনে আর্দ্র আবহাওয়াতেও এমন র্যাশ হতে দেখা যায়। বিশেষ করে পঞ্চাশোর্ধ্ব মহিলা বা পুরুষরাই বেশি ভোগেন। দীর্ঘ সময়ে মোজা পরে থাকলে বা সিন্থেটিক, জর্জেটের পোশাক বেশি পরলে তা থেকে পায়ের কাফ মাসলের কাছে, পায়ের পাতায় র্যাশ হতে পারে। অনেক সময়ে কালশিটে পরার মতো লালচে-বেগুনি ছোপও দেখা যায় পায়ে। শুধু র্যাশ নয়, এ ক্ষেত্রে পায়ের গোড়ালি ফুলতে দেখা যায়, র্যাশের জায়গায় ব্যথাও হয়।
ডিজ়নি র্যাশ। ছবি: ফ্রিপিক।
সারবে কী ভাবে?
শরীরচর্চা করার অভ্যাস নেই যাঁদের, তাঁরা যদি হঠাৎ করেই খুব বেশি হাঁটাহাঁটি বা দৌড়োদৌড়ি শুরু করেন, রক্ত পায়ের রক্তনালিতে চাপ পড়ে প্রদাহ শুরু হতে পারে। তাই শরীরচর্চা করুন, তবে ধীরেসুস্থে। একটানা না হেঁটে বিরতি নিয়ে হাঁটুন। পায়ে ঘাম জমতে দেওয়া যাবে না।
পোশাকের ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। সুতির ও আরামদায়ক পোশাক পরাই জরুরি। গরমের সময়ে পায়ের কাফ মাসল অবধি ঢাকা মোজা না পরাই ভাল।
পর্যাপ্ত জল পান করতে হবে। অতিরিক্ত লবণাক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন, এতে শরীরে খনিজ উপাদানগুলির মাত্রার তারতম্য হয়। সে থেকে ত্বকের সমস্যা হতে পারে।
ভেরিকোজ ভেনের সমস্যা থাকলে বেশি ক্ষণ হাঁটাচলা, দৌড়নো বা দাঁড়িয়ে থাকলে শিরা ফুলে যায়। কিছু ক্ষেত্রে পায়ের শিরা ফুলে গিয়ে গাঢ় নীলচে রঙের রেখা চামড়ার উপরে ফুটে ওঠে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় এই রোগকে বলা হয় ভেরিকোজ ভেন। এই সমস্যা থাকলে পায়ের রক্ত সঞ্চালন ঠিকমতো হয় না, তখন ডিজ়নি র্যাশের সমস্যা হতে পারে।