রক্তে সোডিয়াম বেশি থাকা যেমন ঠিক নয়, তেমনই কোনও কারণে রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা অস্বাভাবিক ভাবে কমে যাওয়াও স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। এই সমস্যাকে বলা হয় ‘হাইপোনেট্রিমিয়া’। শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা অতিরিক্ত কমে গেলে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। দেহকোষের বাইরে থাকে সোডিয়াম। তাই শরীরে সোডিয়ামের ঘাটতি হলে কোষগুলি ফুলে যায়, তখনই হয় বিপত্তি।
রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা কমে যায় কেন?
১) সোডিয়াম থাকে দেহকোষের বাইরে অর্থাৎ প্লাজমার মধ্যে। প্লাজ়মা বেড়ে গেলে সোডিয়ামের মাত্রা কমে যায়। হার্ট ফেলিয়োর, কিডনি ফেলিয়োর আর লিভার ফেলিয়োরের সময় শরীরে প্লাজ়মার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। এই সময় শরীরে জলের মাত্রা বেড়ে গিয়ে, শরীর ফুলে যায়।
২) ডায়েরিয়া হলে শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা কমে য়েতে পারে। কোনও কারণে দিনে একাধিক বার বমি হলেও শরীরে সোডিয়াম কমে যেতে পারে। এ ছাড়া উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খেলেও শরীরে সোডয়ামের মাত্রা কমে যেতে পারে।
৩) কখনও কখনও শরীরে জলের মাত্রা ঠিক থাকলেও সোডিয়ামের মাত্রা কমে যেতে পারে। বিশেষ করে হরমোনাল ডিজ়অর্ডারের ক্ষেত্রে এই সমস্যা হতে পারে। যেমন থাইরয়েডের সমস্যা, কর্টিসল হরমোনের সমস্যা বা শরীরে এডিএইচ হরমোন ওঠানামা করলেও সোডিয়ামের মাত্রা কমে যেতে পারে।
আরও পড়ুন:
কোন উপসর্গ দেখে সতর্ক হবেন?
শরীরে সোডিয়াম কমার মাত্রাকে দু’ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। অ্যাকিউড আর ক্রনিক। অ্যাকিউটের ক্ষেত্রে দু’তিন দিনের মাথায় শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা অনেকটা কমে যায়। আর ক্রনিকের ক্ষেত্রে প্রায় ছ’মাস ধরে রোগীর শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা অল্প অল্প করে কমতে থাকে।
অ্যাকিউটের সময় চলাফেরা কালীন অবস্থায় মাথা ঘুরে যেতে পারে, শরীরে ক্লান্তি আসে। এ ছাড়া রোগীর ভাবনাচিন্তায় বিভ্রান্তি দেখা দিতে পারে। সোডিয়ামের মাত্রা অনেকটা কমে গেলে খিঁচুনিও হতে পারে। ক্রনিকের ক্ষেত্রে উপসর্গগুলি চট করে ধরা যায় না। শরীরে ক্লান্তি, মাথা ঝিমঝিম করা, রক্তচাপ খানিকটা কমে যাওয়ার মতো উপসর্গগুলি দেখা যায়। এ ক্ষেত্রেও সোডিয়ামের মাত্রা অনেকটা কমে গেলে খিঁচুনির সমস্যা দেখা দিতে পারে।