আবহাওয়ার বদলের সময় ভাইরাল জ্বরে বেশি ভোগে শিশুরা। গত কয়েক মাসে জ্বর, সর্দি-কাশিতে ভুগেছেন অনেকেই। পরীক্ষা করিয়ে ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়া ধরা পড়ছে না। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, উপসর্গ দেখে বোঝা যাচ্ছে, ছোঁয়াচে অ্যাডিনোভাইরাস বা রেসপিরেটরি ভাইরাসের সংক্রমণেই জ্বর, হাত-পায়ে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট এবং পেটের সমস্যাও হচ্ছে কিছু ক্ষেত্রে। ইনফ্লুয়েঞ্জার উপসর্গও দেখা গিয়েছে অনেক শিশুর। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, জ্বর হলে ওষুধ যেমন খাবে, তেমনই পথ্যের উপরেও জোর দিতে হবে। বাবা-মায়েদের জেনে রাখা ভাল, এই সময়ে শিশুকে কী কী খাওয়াবেন ও কী নয়।
গরমের পরেই হঠাৎ করে বৃষ্টি, স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া অ্যাডিনোভাইরাস, রেসপিরেটরি ভাইরাসের বংশবৃদ্ধির জন্য আদর্শ। আবার টাইফয়েডের সংক্রমণও ঘটছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার। বাইরে যাওয়া মানেই কোল্ডড্রিংক, চিপ্স, আইসক্রিম, রঙিন ঠান্ডা পানীয়ের মতো বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়ার প্রবণতাও বাড়ছে শিশুদের মধ্যে। ফলে জ্বরের পাশাপাশি পেটখারাপের সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে।
দুর্বলতা কাটাতে কী কী খাবে শিশু?
তরল খাবার
জ্বর কমার পর শিশুর শরীরে জলশূন্যতা দেখা দিতে পারে। সে কারণে তরল খাবার খাওয়াতেই হবে, যেমন চিকেন স্যুপ, বিভিন্ন সব্জির পাতলা ঝোল, ডালের জল ইত্যাদি।
আরও পড়ুন:
ডাবের জল
প্রাকৃতিক ইলেক্ট্রোলাইট এবং খনিজ পদার্থ সমৃদ্ধ ডাব, যা দুর্বলতা কাটাতে সাহায্য করবে। ডাবের জল দিন কয়েক খেলে শরীরে জল ও খনিজের ভারসাম্যও বজায় থাকবে।
ফলের রস
তাজা ফলের রস, যেমন কমলা, আপেল, বেদানা বা পেঁপের রস ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ, যা শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।
আরও পড়ুন:
প্রোটিন খেতে হবে
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার, যেমন ডিমের সাদা অংশ, মাছ, মুরগির মাংস চর্বি বাদ দিয়ে, দুধ–দই ও নিরামিষের মধ্যে ছোলা, মুসুর ডাল, সয়াবিন ও নানা রকম বাদাম খেতে পারে।
সহজপাচ্য খাবার
ডালিয়ার খিচুড়ি, ওট্স, রাগি দিয়ে তৈরি খিচুড়ি শিশুর জন্য স্বাস্থ্যকর হবে। ভাতের সঙ্গে চিকেন স্ট্যু, পাতলা করে রান্না করা মাছের ঝোল খাওয়াতে পারেন। মধু প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক। গলা ব্যথা বা কাশি কমাতেও সাহায্য করে। ঈষদুষ্ণ জলের সঙ্গে মধু মিশিয়ে দেওয়া যেতে পারে।
কী কী খাওয়াবেন না?
তেল-মশলাযুক্ত খাবার, যেমন ভাজাভুজি, ফাস্টফুড, চপ, কাটলেট— এই ধরনের খাবার হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে এবং অসুস্থতা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার, যেমন, নরম পানীয়, চকোলেট, আইসক্রিম এড়িয়ে চলুন।
কেটে রাখা ফল বা কাঁচা আনাজ দিয়ে বানানো স্যালাড শিশুকে খাওয়াবেন না।
রাস্তায় বিক্রি হওয়া রঙিন শরবত, লস্যি, আখের রস বা কোনও ধরনের পানীয়ই দেওয়া চলবে না।
ফ্রিজে রেখে দেওয়া পাউরুটি, বাসি খাবার শিশুকে দেওয়া চলবে না।
চিপ্স, লজেন্স, ডায়েট সোডাও শিশুকে খাওয়ানো চলবে না।