ডায়াবিটিস ধরা পড়া মানেই রাশ টানতে হয় খাওয়াদাওয়ায়। মিষ্টি তো বটেই, সেই সঙ্গে বাইরের প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়াও একেবারেই বন্ধ। একমাত্র খাওয়াদাওয়ার সঠিক নিয়ম মেনে চললে তবেই ডায়াবিটিস বশে রাখা সম্ভব। তবে যে কোনও অসুস্থতাই হোক, নিয়ম করে ফল খেতে বলেন চিকিৎসকরা। ডায়াবিটিস রোগীর ক্ষেত্রে ফল খাওয়াতেও সতর্কতা মেনে চলা জরুরি। সুগার থাকলে সব ফল খাওয়া যায় না। ডায়াবিটিস থাকলেও পেয়ারা কিন্তু নিশ্চিন্তে খাওয়া যেতে পারে। ফাইবার, ভিটামিন সি, অ্যান্টি অক্সিড্যান্টে ভরপুর পেয়ারার গ্লাইসেমিড ইনডেক্সও কিন্তু কম।
বাজারে দু’ধরনের পেয়ারা পাওয়া যায়। এক প্রজাতির পেয়ারার ভিতরটা সাদা হয়। এই পেয়ারাই বেশি দেখতে পাওয়া যায় বাজারে। আর এক ধরনের পেয়ারার ভিতরটা হয় গোলাপি রঙের। ডায়াবেটিকদের জন্য কোনটি খাওয়া বেশি স্বাস্থ্যকর?
দেখতে এক রকম হলেও দু’ধরনের পেয়ারার মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। লাল, গোলাপি রঙের পেয়ারার মধ্যে ‘লাইকোপেন’ নামক একটি উপাদান রয়েছে। যেটি সাধারণ পেয়ারায় নেই। এই ‘লাইকোপেন’ আসলে বিটা-ক্যারোটিন। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে সমৃদ্ধ গোলাপি বা লাল পেয়ারা হার্ট এবং ত্বকের জন্য ভাল।
আবার, সাদা পেয়ারায় লাইকোপেন না থাকলেও ভিটামিন সি এবং ফাইবারের পরিমাণ বেশি। সাদা পেয়ারায় ফাইবারের পরিমাণ বেশি। ফাইবার রক্তে গ্লুকোজের শোষণকে ধীর করে, পেট ভরাতে সাহায্য করে এবং হজমেও সাহায্য করে। ফাইবার অন্ত্রের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে এবং এলডিএল কোলেস্টেরল কমাতেও সাহায্য করে। শরীরে ফাইবারের পর্যাপ্ত জোগান থাকলে ভুলভাল খাওয়ার ইচ্ছেও কমে। ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য তাই ফাইবার বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সবচেয়ে ভাল হয় যদি খোসা সমেত একটি গোটা পেয়ারা রোজ খাওয়া যেতে পারে। চিকিৎসক শুভম সাহা বলেন, ‘‘শুধু পেয়ারাই নয়, ফাইবার সমৃদ্ধ যে কোনও ফলই ডায়াবেটিকদের জন্য ভাল। ফাইবার আসলে ছাঁকনির মতো কাজ করে। খাবারে থাকা শর্করাকে কিছুটা হলেও ছেঁকে দেয়, তার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা চট করে বাড়তে পারে না। যে সব খাবার খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ আচমকা বেড়ে যায় না, সেই সব খাবারকে বলা হয় ‘লো গ্লাইসেমিক ফুড’। পেয়ারাও তারই মধ্যে একটি। সাদা বা গোলাপি— দুই ধরনের পেয়ারাই খাওয়া যেতে পারে। তবে খুব বেশি পাকা পেয়ারার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কিঞ্চিৎ বেশি। কারণ এতে রস এবং মিষ্টত্ব দুই-ই বেশি থাকে।’’