Advertisement
E-Paper

অ্যালার্ম বাজলেই ধড়মড় করে ওঠেন, বিছানা থেকে নামার পরেই মাথা ঘোরে, কী বিপদ ঘনাচ্ছে?

সাম্প্রতিক কিছু গবেষণা জানিয়েছে, সকালের দিকেই নাকি হার্ট অ্যাটাক বেশি হচ্ছে। প্রবীণেরা তো বটেই, কমবয়সিরাও এর শিকার।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২৫ ১১:৩৮
Why most of the Heart Attacks are happening in the morning, what are the symptoms

সকালের দিকে হার্ট অ্যাটাক বেশি হয় কেন? ছবি: ফ্রিপিক।

সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে ভাল লাগে না ঠিকই। তবে সকালের দিকে শরীরের কিছু লক্ষণ খেয়াল করা খুবই জরুরি। অনেকেই অ্যালার্ম বাজলেই ধড়মড় করে ওঠেন। তার পরই ছুটোছুটি শুরু হয়। বিছানা থেকে নেমেই বাথরুমে চলে যাওয়া, কোনও রকমে স্নান সেরেই জলখাবার খাওয়া, তার পর হুড়োহুড়ি করে অফিসের জন্য বেরিয়ে যাওয়া। এমন রুটিন যাঁরা দিনের পর দিন মেনে চলছেন, তাঁদের একটু সাবধানে থাকতে হবে বইকি। কারণ, সকালের দিকে অত্যধিক উত্তেজনা রক্তচাপ আচমকা বাড়িয়ে দিতে পারে। আর সাম্প্রতিক কিছু গবেষণা জানিয়েছে, সকালের দিকেই নাকি হার্ট অ্যাটাক বেশি হচ্ছে। প্রবীণেরা তো বটেই, কমবয়সিরাও এর শিকার।

‘আমেরিকান জার্নাল অফ হাইপারটেনশন’-এ একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে দিন কয়েক আগে। সেখানে গবেষকেরা লিখেছেন, বেশির ভাগ হার্ট অ্যাটাকই নাকি হয় ভোর ৬টা থেকে দুপুর ১ টা বা ২ টোর মধ্যে। এর কারণ অনেক।

কী কী সেই কারণ?

স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে

সকালের দিকে কর্টিসোল, অ্যাড্রেনালিন, নরঅ্যাড্রেনালিনের মতো স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে। এর প্রভাবে হার্টে রক্ত সঞ্চালনের প্রক্রিয়া ধীরে হয়। যদি সকালের দিকে অত্যধিক দুশ্চিন্তা বা উদ্বেগে ভোগেন, তা হলে হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে গিয়ে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে। ফলে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়বে।

রক্ত জমাট বাঁধার আশঙ্কা

হার্টের রোগ রয়েছে বা কিডনির অসুখে ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের রক্ত জমাট বাঁধার লক্ষণ দেখা দিতে পারে সকালের দিকেই। বিশেষ কিছু ওষুধের কারণেও তা হতে পারে। সে কারণে সকালের দিকে খুব বেশি হুড়োহুড়ি করা বা তেলমশলা দেওয়া খাবার বেশি খেয়ে ফেলা ঠিক নয়।

অ্যালার্ম বাজলেই দৌড়দৌড়ি শুরু

বিছানা থেকে ধড়মড় করে ওঠেই দৌড়দৌড়ি শুরু করে দিলে রক্তচাপের তারতম্য হবে। এই বিষয়ে হার্টের চিকিৎসক দিলীপ কুমার জানান, ঘুমোনোর সময়ে শরীর বিশ্রামে থাকে, তাই ওই সময়ে হৃৎস্পন্দনের হার কম থাকে। ঘুম থেকে ওঠার পরে আগে শরীরকে কিছুটা সইয়ে নিতে হয়, যাতে হৃৎস্পন্দন আবার স্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছয়। সে কারণে বলা হয়, বিছানা থেকে হুড়োহুড়ো করে না নেমে আগে দুই পা মাটিতে রাখতে। এতে মাটির সঙ্গে শরীরের সংযোগ তৈরি হয়। রক্ত সঞ্চালন ঠিকমতো হয়, শরীরের তাপমাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকে। এর পর ধীরে ধীরে দিনের কাজ শুরু করতে হয়।

সকালে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে

রাতে টানা ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম জরুরি। কম ঘুমের কারণে নানা সমস্যা হতে পারে শরীরে। বেশি রাত অবধি জেগে থেকে সকালের দিকে ঘুমোনো, আবার অ্যালার্ম বাজার সঙ্গে সঙ্গেই উঠে পড়ার অভ্যাস বিপদ ডেকে আনতে পারে।

সকালে ঘুম থেকে উঠেই আগে এক গ্লাস জল বা ডিটক্স পানীয় খেতে হবে। সারা রাত শরীরে জলের ঘাটতি হয়, ফলে সকালের দিকে ডিহাইড্রেশন বা জলশূন্যতার সমস্যা হতে পারে। হার্ট অ্যাটাক হওয়ার এটিও একটি কারণ।

ঘুম থেকে ওঠার পরে অন্তত আধ ঘণ্টা শরীর ধাতস্থ হওয়ার সময় দিন। ধীরে ধীরে দিন শুরু করুন। ঘুম থেকে উঠেই স্নানে যাবেন না, বরং আগে ‘ওয়ার্ম আপ’ করে নিন। হাঁটাহাঁটি, স্পট জগিং বা যে কোনও যোগাসন করে নিলে শরীর সতেজ হয়। রক্ত চলাচল ঠিক মতো হয় এবং শরীরের তাপমাত্রার হেরফেরও হয় না।

সকালের দিকেই প্রাণায়াম বা শ্বাসের ব্যায়াম করা খুব জরুরি। এতে অক্সিজেন সমৃদ্ধ বাতাস ঢোকে ফুসফুসে, ফলে শ্বাস-প্রশ্বাসের গতিও ঠিক থাকে।

রাতের দিকে হালকা খাবার ও সকালে ভারী জলখাবার খেলে শরীর ঠিক থাকবে। সকালের জলখাবারে অল্প কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট রাখতেই হবে। সেই সঙ্গে ফাইবারের জন্য দানাশস্য, যেমন ওট্‌স, ডালিয়া বা কিনোয়া থাকলে খুব ভাল হয়।

Heart Attack Risk Heart Disease
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy