ভিজে হাত নিয়ে অস্বস্তির অবকাশ নেই আর। প্রযুক্তির জেরে শৌচালয় ব্যবহারের পর হাত শুকোনো আর কোনও ব্যাপারই নয়। না প্রয়োজন টিস্যুর, না প্রয়োজন গামছার, আর না প্রয়োজন স্পর্শের। কোভিডের পর থেকে স্পর্শহীন যন্ত্রের জনপ্রিয়তা বেড়েছে অনেকগুণে। সেই তালিকায় হাত শুকোনোর যন্ত্রও এখন অফিসকাছারি বা পাবলিক টয়লেটে দেখতে পাওয়া যায়। সুবিধাজনক বটে। কিন্তু যতটা স্বাস্থ্যকর মনে হচ্ছে, ততখানি নয়।
জীববিজ্ঞানীদের মতে, এই যন্ত্রগুলিই জীবাণু ছড়ানোর অন্যতম উৎস! হাত শুকোনোর যন্ত্র জীবাণুকে বাতাসের সঙ্গে আরও বেশি পরিমাণে ছড়িয়ে দেয়। টয়লেট ফ্লাশ করার ফলে যে জীবাণুগুলি বাতাসে ভেসে বেড়ায়, সেগুলিকেও এই ড্রায়ার টেনে নিতে পারে। ফলে জীবাণু নতুন ভাবে ধোয়া হাতে এসে জমা হতে পারে। তা ছাড়াও শৌচালয়ের পরিবেশে, দেওয়ালে ও আশপাশের জিনিসপত্রে জীবাণু জমতে থাকে। গোটা পরিবেশে জীবাণুর সংখ্যা বাড়তে থাকে।
ইউনিভার্সিটি অফ কানেকটিকট এবং কুইনিপ্যাক ইউনিভার্সিটির গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যন্ত্র চালু থাকলে জীবাণুর পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। আর যন্ত্র বন্ধ থাকলে জীবাণু কম থাকে। এক গবেষণায় পরীক্ষা করে দেখানো হয়েছে, পাবলিক টয়লেটে যখন হাত শুকোনোর যন্ত্র চালু থাকে, তখন বাতাসে ও আশপাশের জায়গায় জীবাণুর সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়। যন্ত্র চালু থাকাকালীন সেই জায়গায় জীবাণুর পরিমাণ প্রায় ২৫০ গুণ পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছে। অন্য দিকে যন্ত্র বন্ধ থাকলে জীবাণুর পরিমাণ তুলনায় অনেক কম ছিল। এর মানে, এই যন্ত্রগুলি জীবাণু ছড়ানোর ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করে। হাত ধোয়ার পর কাগজের তোয়ালে দিয়ে ভাল করে হাত মুছে ফেলা সবচেয়ে ভাল উপায়।
সুবিধাজনক এবং স্বাস্থ্যকর উপায় কী তা হলে?
বাইরে বার হলে সঙ্গে ছোট একটা তোয়ালে বা টিস্যুর প্যাকেট রাখুন। হাত ধোয়ার পর ভাল করে শুকিয়ে নিন সেটি দিয়ে। পাবলিক টয়লেটে শুকোনোর যন্ত্র থাকলেও ব্যবহার কম করুন। হাত ধোয়া যেমন জরুরি, তেমনই হাত ভাল করে শুকোনোও সমান গুরুত্বপূর্ণ। ভিজে হাতে জীবাণু বেশি থাকে, যা রোগ ছড়াতে পারে। তাই হাত শুকোনোর সময় সতর্ক থাকুন।