Advertisement
E-Paper

দামি ফলের দরকার নেই, সহজলভ্য পেয়ারাতেই লুকিয়ে হাজারো সমস্যার সমাধান!

স্বাদের ব্যাপারে পেয়ারার জনপ্রিয়তা নিয়ে কথা হবে না। তবে পুষ্টিকর ফল হিসাবে পেয়ারা খাওয়ার কথা খুব বেশি বলতে শোনা যায় না।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২৫ ১৮:১০

ছবি : সংগৃহীত।

ফলের বাজারে এখন কিউয়ি থেকে শুরু করে অ্যাভোকাডো, ব্লুবেরি থেকে পিচ, ড্রাগন ফ্রুট অনেক কিছুই পাওয়া যায়। সেই সব ফলের নানা গুণগাণও সাতকাহন করে বলেন বহু পুষ্টিবিদ। কারণ তারকাদের খাবারের থালায় আকছার দেখা যায় ওই সব ফলের উপস্থিতি। কিন্তু জানেন কি, ভিন্‌দেশি ওই ফলগুলির সঙ্গে পুষ্টিগুণে সমানে সমানে টক্কর দিতে পারে পেয়ারা।

স্বাদের ব্যাপারে পেয়ারার জনপ্রিয়তা নিয়ে কথা হবে না। তবে পুষ্টিকর ফল হিসাবে পেয়ারা খাওয়ার কথা খুব বেশি বলতে শোনা যায় না। হয়তো তার কারণ, এ ফল দামে সস্তা। এ ফল কিনতে সুপারমার্কেটে যেতে হয় না। বাজারে, পাড়ার দোকানে এমনকি, কোনও কোনও বাড়ির বাগানেই পাওয়া যায়। গবেষণা বলছে, সহজলভ্য, সুস্বাদু পেয়ারা পুষ্টিগুণে সেই আপেলের থেকেও বেশি উপকারী, যে আপেল রোগ দূরে রাখার জন্য নিয়মিত খেতে বলেন চিকিৎসকেরা।

কী কী গুণ রয়েছে পেয়ারার?

১। রোগ প্রতিরোধ শক্তি

পেয়ারায় ভিটামিন সি রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। যার মাত্রা একটি আপেল বা একটি লেবুর থেকে অনেক বেশি। প্রতি ১০০ গ্রামে আপেলে ৩১ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে। আর পেয়ারায় প্রতি ১০০ গ্রামে থাকে ২২৮ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি। যা দৈনিক প্রয়োজনের অনেকটাই মিটিয়ে দেয়। আর এই পরিমাণ ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে সর্দি-কাশি, জ্বর, ঠান্ডা লাগার মতো সমস্যায় পেয়ারা দারুণ কাজ করে বলে জানাচ্ছে ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা।

২। পুষ্টিতে ভরপুর এবং মেদ ঝরাতে সহায়ক

এ ছাড়াও পেয়ারায় রয়েছে ভিটামিন এ, বি ১, বি ২, বি ৩, বি ৫, বি ৬, ই এবং ফোলেট। রয়েছে পটশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফাইবার এবং প্রোটিনও। আর এই সব কিছুই পাওয়া যাবে অত্যন্ত কম ক্যালোরির বিনিময়ে। কারণ ১০০ গ্রাম পেয়ারায় শরীরে মাত্র ৬৮ কিলোক্যালোরি যায়। ফলে এটি ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারী।

৩। ডায়াবিটিসেও বাধা নেই

স্বাদে মিষ্টি। অথচ পেয়ারার গ্লাইসেমিক সূচক অত্যন্ত কম। তাই এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। বিশেষ করে, ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য এই ফল অত্যন্ত উপকারী বলে জানাচ্ছে জাপানের ইয়াকুল্ট সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অফ মাইক্রোবায়োলজি। তারা পেয়ারা খাওয়ার পাশাপাশি রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে পেয়ারাপাতার চা খাওয়ার কথাও বলছে। যে চা খাওয়ার নিদান দিতে সম্প্রতি শোনা গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। তিনিও বলেছেন, ‘‘ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য পেয়ারাপাতার চা খুব উপকারী।’’

৪। অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে

বিজ্ঞান বলছে, মানবদেহের অধিকাংশ রোগের সূচনা হয় পেট থেকে। তাই অন্ত্র অর্থাৎ হজমের নানা প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যঙ্গ যদি ভাল থাকে, তবে অনেক রোগকে দূরে রাখা সম্ভব। ভারতীয় কৃষি গবেষণা সংক্রান্ত পরিষদ আইসিএআর-এর গবেষণায় বলা হচ্ছে, পেয়ারায় থাকা ফাইবার পেটের জন্য ভাল। অন্ত্রে থাকা যে সমস্ত ভাল ব্যাক্টেরিয়া হজমে সাহায্য করে, তাদের ভাল রাখে পেয়ারা। পাশাপাশি, খারাপ ব্যাক্টেরিয়াকেও দূর করতে পারে।

৫। হার্টের জন্য উপকারী

হার্ট ভাল রাখার জন্য যে তিনটি মূল জিনিস জরুরি, তা হল পটাশিয়াম, ফাইবার এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। যা রক্তে কোলেস্টেরল জমতে দেবে না। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখবে। ভাল রাখবে রক্ত সঞ্চালন। পেয়ারায় ওই সব ক’টি উপাদান রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে। একটি গবেষণায় হার্টের রোগীদের খাওয়ার আগে নিয়মিত একটি করে পাকা পেয়ারা খাওয়ানো হয়েছিল। ১২ সপ্তাহ পরে দেখা গিয়েছে, তাঁদের প্রত্যেকেরই রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলের মাত্রার উন্নতি হয়েছে।

৬। ত্বকের জন্য ভাল

যেহেতু পেয়ারায় প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে, তাই এটি কোলাজেন তৈরি করতে সাহায্য করে। যা ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ পড়তে দেয় না। এ ছাড়া পেয়ারাপাতার রস ব্রণ সারাতেও কাজে লাগে। পেয়ারা রোদ থেকে হওয়া ত্বকের ক্ষতি দূর করতেও সাহায্য করে।

৭। ঋতুকালীন যন্ত্রণা সামলাতে

ঋতুস্রাব চলাকালীন পেটে, কোমরে এবং পায়ের পেশিতে যন্ত্রণা হয় মহিলাদের। সেই যন্ত্রণা অনেক সময়েই সহ্যের বাইরে চলে যায়। অনেকেই বেদনানাশক ওষুধ খেয়ে ব্যথা কমান। তবে গবেষণা বলছে, আইবুপ্রোফেনের মতো ব্যথানাশক ওষুধকেও টেক্কা দিতে পারে পেয়ারাপাতার রস।

Guava Benefits
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy