মাস খানেক আগেও সকাল সাড়ে ১১টায় ব্যস্তসমস্ত হয়ে কাজ করতেন। অথচ গত কয়েক দিনে হচ্ছে ঠিক তার উল্টোটা। কাজ করতে করতে ঝিমিয়ে পড়ছেন। চোখ জুড়িয়ে আসছে। বাড়িতে থাকলে মনে হচ্ছে, খানিক গড়িয়ে নিয়ে তার পরে বাকি কাজ করবেন। অফিসে থাকলে তেমন সুযোগ নেই। কিন্তু কাজের গতি কমছে। দিনের শেষে কাজ গোছাতে হিমশিম খাচ্ছেন। এর কোনওটিই নভেম্বরের এই সময়ে অস্বাভাবিক নয়। এক চিকিৎসক জানাচ্ছেন, শীতে দিনের বেলায় ওই ঝিমুনি ভাব আসে কয়েকটি বিশেষ কারণে। তবে তা থেকে মুক্তি পাওয়াও অসম্ভব নয়।
লন্ডন নিবাসী ওই চিকিৎসকের নাম কর্ণ রাজন। ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেল্থ স্কিম অনুমোদিত মেডিসিনের চিকিৎসক কর্ণ বলছেন, শীতে সূর্যের রশ্মি সরাসরি আসে না। ভৌগলিক কারণেই তা তেরছা ভাবে আসে পৃথিবীতে। যে কারণে তাপমাত্রা কমে। গরম গিয়ে ঠান্ডা ভাব আসে আবহাওয়ায়। আর শীতে এই সূর্যের চড়া রোদের অভাবেই দেহঘড়ির রুটিনও একটু উল্টেপাল্টে যায়। ঘুম ভাঙা এবং ঘুমোতে যাওয়ার যে নিয়ম শরীর সচরাচর মেনে চলে, তা আর নিয়মমাফিক হয় না। এ ছাড়াও রোদের অভাবে শরীরে মেলাটোনিন নামে এক ধরনের হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যার ফলে ঝিমুনি বোধ হতে পারে। ঘুম পেতে পারে।
স্বস্তির বিষয় হল এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, তার জন্য দৈনন্দিন অভ্যাসে কয়েকটি ছোটখাট বদল আনতে হবে।
১। প্রতি দিন ঘুম থেকে ওঠার পরে ঘরের জানলা খুলে পর্দা সরিয়ে দিন যাতে বাইরের আলো বা রোদ ঘরের ভিতরে ঢোকে।
২। ঘুম থেকে ওঠার পরে ১ ঘণ্টার মধ্যে ছাদে, বারান্দায় বা বাগানে মিনিট ১৫-এর জন্য হলেও খানিকটা হেঁটে নিন বা শরীরচর্চা করুন।
৩। শীতে শরীরচর্চা করা আরও বেশি করে জরুরি। কারণ তাতে শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয়। মেজাজও ভাল থাকে।
৪। বেশি করে প্রোটিন, শাকসব্জি আর ডাল, বীজ, বাদাম ইত্যাদি খান।
৫। সুযোগ পেলেই শরীরে সূর্যের আলো লাগতে দিন। তাতে শরীরে মেলাটোনিনের উৎপাদনও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
৬। রাতে একটু আগে ঘুমোন। ঘুমনোর সময় প্রতি দিন একই রাখার চেষ্টা করুন। তাতে দেহঘড়ির রুটিন বজায় থাকবে। সকালে ঘুম পাওয়ার মতো সমস্যাও কমবে।