অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, আমাদের অনেক শক্তিশালী দেবতা আছেন। সূর্য আমাদের আলো দেন, বরুণদেব জল বর্ষণ করেন। জীবের প্রাণ রক্ষার্থে পবনদেব আছেন, তবুও সবার আগে কেন গণেশের পুজো করা হয়? পৌরাণিক কথা অনুযায়ী, প্রাচীনকালে একবার দেবতাদের সভা হয়েছিল এবং প্রসঙ্গ উঠেছিল কে শ্রেষ্ঠ? সকল দেবতাই নিজেকে শ্রেষ্ঠ মনে করছিলেন। এই ভাবে নিষ্পত্তি হচ্ছিল না। অতএব ঠিক হল, যে দেবতা ত্রিলোক পরিক্রমা করে এই স্থানে প্রথমে পৌঁছবেন, তিনিই শ্রেষ্ঠ এবং তাঁর পুজো প্রথম করা হবে।
এই শুনে সকল দেবতা নিজ নিজ বাহনে চড়ে ত্রিলোক পরিক্রমা করতে চলে গেলেন। কিন্তু ভারী শরীরের গণেশ নিজ বাহন মুষিক-সহ রয়ে গেলেন অনেক পিছনে। কিন্তু তিনি সাহস হারালেন না। তিনি ওখান থেকে মাতা-পিতা (শিব-পার্বতী) যেখানে ছিলেন সেখানে গেলেন। পিতা-মাতাকে তিন বার পরিক্রমা করে ফিরে এলেন। সবার আগে কার্তিক ময়ূরে চড়ে ত্রিলোক পরিক্রমা করে এসে গণেশকে বসে বসে লাড্ডু খেতে দেখে ভীষণ ক্রুদ্ধ হলেন এবং প্রহার করে গণেশের একটি দাঁত ভেঙে দিলেন। তখন থেকে গণেশ একদন্ত। এর পর গণেশ সকল দেবতার সামনে যুক্তি দিলেন, ত্রিলোকের সকল সুখ সম্পদ মাতা-পিতার চরণে বিরাজমান। মাতা-পিতার চরণের সেবাই সর্বোত্তম। যাঁরা এঁদের চরণ ছেড়ে ত্রিলোক ভ্রমণ করেন, তাঁদের সকল পরিশ্রম ব্যর্থ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: রাশির কোন অবস্থানে বিবাহে বিলম্ব হয়
ভগবান গণেশের বিশাল মস্তক আমাদের লাভদায়ী বিচার গ্রহণ করার প্রেরণা দেয়। গণেশের বড় বড় কান আমাদের উত্তম বিচার শোনার প্রেরণা দেয়। লম্বা শুঁড় আমাদের বিপদের সঙ্কেত বোঝার ক্ষমতা দেয়। এক দাঁত বচনশুদ্ধতা এবং ছোট চোখ মগ্নতার সঙ্কেত দেয়। মোটা পেট পাচনশক্তি এবং সহনশীলতার প্রতিক। বিঘ্নের বিনাশ হেতু হাতে পরশু এবং মানব কল্যাণ্যের জন্য বরদমুদ্রা ধারণ করে আছেন গণেশ। এই সকল গুণ অন্য দেবতাদের নেই। সেই থেকে গণেশ অগ্রপূজ্য হয়ে উঠলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy