প্রতীকী চিত্র।
অশুভ গ্রহের প্রতিকারের জন্য অনেকেই গ্রহরত্ন ধারণ করেন। অধিকাংশ মানুষের ধারণা যে কোনও গ্রহের রত্ন ধারণেই গ্রহের সমস্ত অশুভত্ব নাশ হয়ে যায় এবং এই গ্রহ সব ক্ষেত্রেই শুভ ফল দান করতে শুরু করে। অনেক ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষের ধারণা শুভ গ্রহ যেমন বৃহস্পতি, শুক্র ইত্যাদি মানেই শুভ ফল দান করবে। শনি, রাহু মানেই অশুভ ফল দান করবে। এই ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় গ্রহ রত্ন ধারণ করেন। যার ফলে বিপরীত প্রতিক্রিয়ার কারণে বিভিন্ন সমস্যায় ভোগেন। ফল স্বরূপ জ্যোতিষের প্রতি বিতৃষ্ণা এবং ভুল ধারণার সৃষ্টি হয়।
প্রথমেই বলি গ্রহ রত্ন নির্বাচনের ক্ষেত্রে জন্মপত্রিকা বা হস্তরেখার সূক্ষ্ম বিচার প্রয়োজন। অভিজ্ঞতা এবং সঠিক জ্যোতিষশাস্ত্র জ্ঞান প্রয়োজন। জ্যোতিষশাস্ত্র মতে প্রধান নয়টি গ্রহকে দু’টি ভাগে ভাগ করা হয় শুভ এবং অশুভ গ্রহ। বৃহস্পতি, শুক্র শুভ গ্রহ চন্দ্র এবং বুধের শুভ অবস্থান হলে। না হলে অশুভ। শনি, মঙ্গল, রবি (যদিও রবি অশুভ নয়) রাহু এবং কেতুকে অশুভ গ্রহের পর্যায় রাখা হয়। সমস্ত রাশি বা লগ্নের (১২টি রাশি বা লগ্নের) ক্ষেত্রেই শুভ গ্রহ শুভ এবং অশুভ গ্রহ অশুভ ফল দাতা তা কিন্তু নয়। কোন রাশি বা লগ্নের ক্ষেত্রে শুভ গ্রহ যেমন বৃহস্পতি হতে পারে অশুভ, বা অশুভ গ্রহ যেমন শনি বা মঙ্গল হতে পারে শুভ ফলদাতা গ্রহ।
লগ্নপতি নবমপতি গ্রহ সর্বদা শুভ ফলদাতা। লগ্নপতি বা নবমপতি গ্রহের গ্রহরত্ন ধারণে কোনও বাধা নেই। পঞ্চমপতি শুভ হলেও পঞ্চমপতির রত্ন ধারণে সূক্ষ্ম বিচার প্রয়োজন। ষষ্ঠ, অষ্টম এবং দ্বাদশপতি গ্রহের প্রতিকারের ক্ষেত্রে বিকল্প পথই শ্রেয়, রত্ন ধারণ উচিত নয় (অভিজ্ঞ এবং শাস্ত্রজ্ঞ জ্যোতিষীর পরামর্শ ছাড়া)। যোগকারক গ্রহ সর্বদা শুভ ফলদাতা।
নয়টি গ্রহের সকলের সঙ্গে সকলের সম্পর্ক শুভ বা বন্ধুত্বের নয়। রত্ন ধারণের ক্ষেত্রে লগ্নপতির সঙ্গে বা যে যে গ্রহের রত্ন ধারণ করা হবে তাদের সম্পর্কের কথা বিবেচনা করা প্রয়োজন। স্থায়ী শত্রু গ্রহের রত্ন ধারণে বিপরীত ফলের আশঙ্কা থাকে (একাধিক রত্ন ধারণের ক্ষেত্রে)। যে গ্রহের দশা অন্তর্দশা চলছে সেই গ্রহের রত্ন ধারণের ক্ষেত্রে কখন ধারণ করা উচিত বা কত দিন ধারণ করতে হবে তা অভিজ্ঞ জ্যোতিষীর পরামর্শে করা উচিত।
লগ্নপতির শত্রু গ্রহের রত্ন ধারণ নির্দিষ্ট স্থানের ক্ষতি করতে পারে। যেমন পঞ্চমপতির গ্রহ যদি লগ্নপতির শত্রু গ্রহ হয় সে ক্ষেত্রে পঞ্চমপতি গ্রহের রত্ন ধারণে সন্তানের ক্ষতির সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে।
গ্রহরত্ন ধারণের ক্ষেত্রে সর্বদা অভিজ্ঞ এবং জ্ঞানী জ্যোতিষীর সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy