হিন্দু ধর্মে পালন করা পবিত্র ব্রতগুলির মধ্যে একাদশী অন্যতম। অনেক বাড়িতেই এই ব্রত পালন করা হয়। সাধারণত স্বামী বিয়োগের পর মহিলারা, উপনয়ন হওয়ার পর কিশোরেরা এবং মাতৃ বা পিতৃ বিয়োগের পর সন্তানেরা এই ব্রত পালন করে থাকেন। এ ছাড়া প্রভু বিষ্ণুর ভক্তেরাও তাঁদের ইষ্টদেবতাকে তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে একাদশী তিথি পালন করে থাকেন। এই ব্রত পালনের নানা নিয়ম রয়েছে। সেগুলি সঠিক ভাবে মানতে পারলে তবে গিয়েই ভাল ফল লাভ করা যায়, নচেৎ নয়। আমাদের প্রতি দিনের জীবনে অজান্তে করে ফেলা নানা পাপ থেকে মুক্তি দেয় এই ব্রত। ৬ জুন পড়েছে নির্জলা একাদশীর উপবাস। নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে এই একাদশীর ব্রত পালন করতে গেলে সারা দিন নির্জলা উপবাস রাখতে হবে। কিন্তু শুধু উপবাস রাখলেই হবে না, আরও কিছু নিয়ম মানতে হবে। জেনে নিন সেগুলি কী কী।
আরও পড়ুন:
নির্জলা একাদশী:
২২ জ্যৈষ্ঠ, ৬ জুন, শুক্রবার।
একাদশী তিথি আরম্ভ—
২১ জ্যৈষ্ঠ, ৫ জুন, বৃহস্পতিবার।
সময়: রাত ২টো ১৮ মিনিট।
একাদশী তিথি শেষ—
২২ জ্যৈষ্ঠ, ৬ জুন, শুক্রবার।
সময়: ভোর ৪টে ৪৯ মিনিট।
আরও পড়ুন:
একাদশী ব্রত পালনের নিয়ম:
১. যে কোনও একাদশী তিথিতেই তুলসীপাতা ছেঁড়া যাবে না। প্রয়োজনে আগের দিন তুলসীপাতা তুলে রাখতে হবে, তবে একাদশীর তিথি এক বার লেগে গেলে তুলসীগাছে আর হাত দেওয়া যাবে না, পাতাও কোনও মতে ছেঁড়া যাবে না।
২. একাদশীর ব্রত যাঁরা পালন করেন, তাঁরা সে দিন সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে স্নান করে নেবেন। কিন্তু সাবান বা শ্যাম্পু ব্যবহার করা যাবে না। কেবল জল দিয়ে স্নান করতে হবে।
৩. এই দিন মাজন ব্যবহার করা যাবে না। নিমের দাতন দিয়ে দাঁত মাজতে পারলে খুব ভাল হয়।
৪. চুল, নখ, দাড়ি প্রভৃতি এই দিন কাটা যাবে না।
আরও পড়ুন:
৫. একাদশীর দিন ভাত খাওয়া যাবে না। চালের তৈরি কোনও জিনিস খাওয়া থেকে এই দিন বিরত থাকতে হবে। বদলে গমের তৈরি জিনিস, যেমন ডালিয়া, রুটি প্রভৃতি খাওয়া যেতে পারে। ফলমূল, সাবুও খাওয়া যেতে পারে। অতিরিক্ত তেল-মশলাযুক্ত খাবার এই দিন খাওয়া যাবে না। ইষ্টদেবতাকে খেতে দেওয়ার পরই আপনি খাবার গ্রহণ করতে পারবেন।
৬. এই দিন কারও ব্যাপারে খারাপ কথা বলা যাবে না, কারও খারাপ চাইতে পারবেন না। তা হলে ব্রত পালন বিফলে যাবে, কোনও ভাল ফল পাবেন না।
৭. এই দিন গরিব-দুঃখীদের ও ব্রাহ্মণদের সাধ্যমতো দান করতে পারলে খুব ভাল হয়।