অনেক সময় জন্মপত্রিকায় নানা বিষয়ে প্রতিশ্রুতি থাকলেও সেই কাজে ব্যর্থ হতে দেখা যায়। যেমন, নির্দিষ্ট একটি সময়ে বিয়ে বা সন্তান প্রাপ্তির কথা লেখা থাকলেও কোনওটাই হয় না। এটি কাজ, শিক্ষা ইত্যাদি যে কোনও বিষয়ের ক্ষেত্রেই হতে পারে। প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও ব্যর্থ হওয়ার কারণ হল জন্মপত্রিকায় থাকা বিভিন্ন দোষ। বিভিন্ন দোষের কারণেই এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। তেমনই একটি ভয়ঙ্কর দোষ হল পিতৃদোষ।
আরও পড়ুন:
পিতৃদোষ কী?
পূর্বজন্মে পিতা বা পিতৃতুল্য ব্যক্তির দ্বারা অভিশাপ পেলে পিতৃদোষ সৃষ্টি হয়। পিতৃদোষ যে কেবল পূর্বজন্মেরই হয় তা নয়। পূর্ববর্তী কয়েক জন্মের দোষও হতে পারে। পিতৃদোষ বিভিন্ন বিষয়ে অশুভ ফল দান করলেও, পঞ্চম স্থানে এটি অধিক অশুভ ফল দান করে। পঞ্চম স্থান হল সন্তানসুখের স্থান। উক্ত ঘরে পিতৃদোষ থাকলে সন্তানসুখ থেকে বঞ্চিত হন অনেকে। কখনও সন্তানহীনতা হতে দেখা যায়, কখনও আবার সন্তান বিপথগামী হয়। সন্তান বিভিন্ন ভাবে অসামাজিক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে, বাবা-মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয় না অথবা তাঁদের অবাধ্য হতে দেখা যায়। এ ছাড়াও পিতৃদোষ থাকলে কাজ, পড়াশোনা ইত্যাদি বিষয়েও অশুভ ফলপ্রাপ্তি হয়।
আরও পড়ুন:
জন্মকুণ্ডলীতে পিতৃদোষ রয়েছে কি না কী ভাবে বুঝবেন?
জন্মকুণ্ডলীর পঞ্চম এবং দশম স্থান কোনও পাপ গ্রহের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করলে বুঝতে হবে যে পিতৃদোষ রয়েছে। রবির সঙ্গে কোনও অশুভ গ্রহের সম্পর্ক হলে, বিশেষত শনি বা রাহুর সম্পর্ক হলেও সেটি পিতৃদোষ নির্দেশ করে। লগ্ন দুর্বল হলে পিতৃদোষ বিশেষ অশুভ ফল দান করে। জন্মকুণ্ডলীতে পিতৃদোষ থাকলে যত শীঘ্র সম্ভব পিতৃদোষের প্রতিকার করা উচিত।
আরও পড়ুন:
পিতৃ দোষের প্রতিকার:
- তীর্থস্থানে (গয়া, ইলহাবাদ, হরিদ্বার, ত্রিবেণী ইত্যাদি), বিশেষত যে স্থানে শ্রাদ্ধকর্ম হয়, সেখানে গিয়ে পিতৃপুরুষের উদ্দেশে শ্রাদ্ধকর্ম করতে পারলে উপকার পাওয়া যায়। পাশাপাশি বিশেষ অমাবস্যা তিথিতে দান-সহ ব্রাহ্মন ভোজন করাতে হবে।
- অপর কোনও ব্যক্তির বিয়েতে অর্থ দান করলেও শুভ ফলপ্রাপ্তি হয়। কোনও ব্রাহ্মণকে অথবা মন্দিরে গিয়ে শুদ্ধ মনে গোদান করতে পারেন। অর্থ দানও করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন:
- বাবা-মা এবং পরিবারের বয়স্ক সদস্যদের প্রতি বিশেষ যত্নবান হতে হবে। তাঁদের প্রতি সকল কর্তব্য পালনের সঙ্গে তাঁদের যথাযত সন্মান করা বাঞ্ছনীয়।
- পিতৃপক্ষে, বিশেষত পিতৃপক্ষের অমাবস্যা তিথিতে তর্পণ করতে হবে (পিতার অবর্তমানে)। পিতার বর্তমানে পিতৃপুরুষকে জল দান করা যায়। সেক্ষেত্রে ব্রাহ্মণ বা পণ্ডিতের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। জন্মকুণ্ডলীতে পিতৃদোষ নির্দেশ করলে অভিজ্ঞ জ্যোতিষীর পরামর্শ নেওয়া জরুরি।