Advertisement
E-Paper

১০ হাজার ভুয়ো ভোটার কার্ড আটক

একে অপরের দিকে আঙুল তুলল দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি ও কংগ্রেস। আসরে নামলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৮ ০৩:৫৮
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বিধানসভা ভোটের বাকি আর ঠিক তিন দিন। মধ্যরাতে খাস রাজধানী বেঙ্গালুরুর এক ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ১০ হাজার ভুয়ো ভোটার কার্ড বাজেয়াপ্ত হওয়ায় কার্যত কেঁপে উঠল কর্নাটক। একে অপরের দিকে আঙুল তুলল দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি ও কংগ্রেস। আসরে নামলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।

গত কাল মাঝরাতে এক সাংবাদিক বৈঠক করেন কর্নাটকের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সঞ্জীব কুমার। তিনি জানান, বেঙ্গালুরুর রাজরাজেশ্বরী বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত জালাহাল্লি এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ১০ হাজার ভুয়ো ভোটার কার্ড, ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য ব্যবহৃত ফর্ম ও ফর্মের ‘কাউন্টারফয়েল’ পাওয়া গিয়েছে। তবে ওই ‘কাউন্টারফয়েল’-এর রং নির্বাচন কমিশনের ‘কাউন্টারফয়েল’-এর মতো নয়। বাজেয়াপ্ত হয়েছে কম্পিউটার, ছাপার মেশিনও। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের তরফে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ফ্ল্যাটটির মালিক মঞ্জুলা নানজামারি ও সেটি রাকেশ নামে এক ব্যক্তিকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে।

আলাদা সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর দাবি করেন, রাজরাজেশ্বরী আসনের বর্তমান বিধায়ক মুনিরাথা নায়ডুই এই চক্রের পাণ্ডা। ওই ফ্ল্যাটের মালিক মঞ্জুলা নানজামারি মুনিরাথা নায়ডুর ঘনিষ্ঠ। তিনি ওই বিধায়কের হয়ে প্রচারও করেছেন। বিজেপি কর্মী রাকেশ এই চক্রের কথা পুলিশকে জানিয়েছেন। জাভড়েকর দাবি করেন, ‘‘কংগ্রেসের এটাই আদর্শ। যদি ভোটারেরা ভোট না দেয়, তাহলে ভুয়ো ভোটার তৈরি করো।’’

জবাব দিতে দেরি করেনি কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা দাবি করেন, ফ্ল্যাটের মালিক মঞ্জুলা ও তাঁর ‘ছেলে’ রাকেশ বিজেপি কর্মী। মঞ্জুলা বিজেপির পুরপ্রতিনিধি ছিলেন। রাকেশও বিজেপির টিকিটে পুরনির্বাচনে লড়েছেন। বিজেপি কর্মীর ফ্ল্যাট থেকে বিজেপি কর্মীরাই ভুয়ো ভোটার কার্ড উদ্ধার করেছেন। পুরো ঘটনাটাই সাজানো।

এর মধ্যে মঞ্জুলার নাগাল পায় স‌ংবাদমাধ্যম। তিনি ও তাঁর ছেলে শ্রীধর দাবি করেন, রাকেশ তাঁদের আত্মীয়। কিন্তু পারিবারিক কারণে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। ওই ফ্ল্যাটের ভাড়াটে রাকেশ নয়। ভাড়াটেদের আসল নাম রঙ্গরাজু ও রেখা। তাঁরা ৫ এপ্রিল থেকে ওই ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছেন। তবে নিজের বিজেপি-যোগের কথা স্বীকার করে নেন মঞ্জুলা। জানান, ১৯৯৭ থেকে ২০০২ পর্যন্ত পুরপ্রতিনিধি ছিলেন। বিজেপি তাঁকে সমর্থন করেছিল।

মঞ্জুলা বিজেপি-যোগের কথা মেনে নেওয়ায় একটু অস্বস্তিতে প়ড়ে নরেন্দ্র মোদীর দল। তবে দলের তরফে দাবি করা হয়েছে, তিনি এক সময়ে বিজেপির সঙ্গে থাকলেও এখন কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত। রাকেশও এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, মঞ্জুলা তাঁর আত্মীয় হলেও তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক নেই। ওই ফ্ল্যাটের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ নেই। বিষয়টি নিয়ে দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের তরফেও সওয়াল করেছে দু’দল। তাতে কংগ্রেসের তরফে যেমন হাজির ছিলেন আনন্দ শর্মার মতো প্রবীণ নেতারা, তেমনই বিজেপির প্রতিনিধিত্ব করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, জে পি নড্ডারা। বিজেপির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছেন আনন্দ শর্মারা। অন্য দিকে স্মৃতি ইরানিদের আর্জি, রাজরাজেশ্বরী কেন্দ্রে ভোট বাতিল করুক কমিশন। এই ঘটনার জেরে উপ নির্বাচন কমিশনার চন্দ্রভূষণ কুমারকে ‘বিশেষ পর্যবেক্ষক’ হিসেবে কর্নাটকে পাঠাচ্ছে কমিশন।

আজ বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেসকে নিশানা করেন নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। চিকমাগালুরে এক সভায় মোদী বলেন, ‘‘কী ভাবে ভুয়ো ভোটার কার্ড তৈরি হচ্ছিল তা আপনারা জানেন। ভোটের দিন কংগ্রেসকে ক্ষমা করবেন না।’’ টুইটারে অমিত শাহের দাবি, ‘‘কংগ্রেসের সবই ভুয়ো। ভুয়ো ভোটার, উন্নয়নের ভুয়ো দাবি, সামাজিক ন্যায়ের প্রতি নিষ্ঠার ভুয়ো দাবি।’’

Voter card Fake
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy