Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

অনাহারে নয়, ৩ শিশুর মৃত্যু বিষে, দাবি নয়া রিপোর্টে

তদন্তের দায়িত্ব পান সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট (প্রীত বিহার) অরুণ গুপ্ত। মৃত শিশুদের ঘরে কিছু ওষুধ পাওয়ায় আলাদা করে তদন্ত শুরু করেন তিনি।

অনমিত্র সেনগুপ্ত
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৮ ০৩:৫৯
Share: Save:

অনাহার না বিষক্রিয়া! দিল্লির মান্ডাবলীতে তিন শিশুর মৃত্যু ঘিরে নতুন রহস্য ঘনাচ্ছে।

ময়না-তদন্তের ভিত্তিতে দিল্লি পুলিশ জানিয়েছিল, অনাহার ও অপুষ্টি ওই শিশুকন্যাদের মৃত্যুর কারণ। নিশ্চিত হতে দ্বিতীয় বার ময়না-তদন্তও করা হয়। ইতিমধ্যে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেয় অরবিন্দ কেজরীবালের সরকার। তদন্তের দায়িত্ব পান সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট (প্রীত বিহার) অরুণ গুপ্ত। মৃত শিশুদের ঘরে কিছু ওষুধ পাওয়ায় আলাদা করে তদন্ত শুরু করেন তিনি।

তাঁর রিপোর্টে বিষক্রিয়ার সম্ভাবনা তুলে ধরা হয়েছে। অভিযোগের তির বাবা মঙ্গলের দিকে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২৩ জুলাই তিন বোনেরই পেট খারাপের পাশাপাশি বমি হতে থাকে। শরীরে জলের অভাব দেখা যায়। ওই দিন রাতে অসুস্থ তিন বোনকে তাদের বাবা গরম জলে কোনও ওষুধ মিশিয়ে খাইয়েছিলেন। ম্যাজিস্ট্রেটের সন্দেহ, ওই ওষুধ খাওয়ানোর পরের দিন সকালেই তিন বোন মারা যায়।

ঘটনাচক্রে সে দিন সকাল থেকেই মঙ্গল নিখোঁজ। কী ওষুধ খাওয়ানো হয়েছিল, মঙ্গল নিখোঁজ কেন— তা তদন্ত করে দেখার সুপারিশ করেছেন ম্যাজিস্ট্রেট। সূত্রের খবর, মঙ্গলের বন্ধু নারায়ণকে জেরা করেই ওষুধ খাওয়ানোর বিষয়টি জানা গিয়েছে। তবে প্রশ্ন উঠেছে, সরকারের ভাবমূর্তি বাঁচাতে ম্যাজিস্ট্রেট এই রিপোর্ট দেননি তো? বিষক্রিয়া মৃত্যুর কারণ হলে হাঁপ ছেড়ে বাঁচবে রাজ্য সরকার। অনাহারে মৃত্যুর দায় ঝেড়ে ফেলা যাবে।

দিল্লির আদালতে মৃত শিশুদের মা বীণাদেবী। ছবি: পিটিআই

ওই রিপোর্ট আসার আগে মৃতদের পরিবার রেশনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিল বলে কেন্দ্রকে জানিয়েছিল দিল্লি সরকার। চিঠিতে খাদ্য মন্ত্রককে জানানো হয়, ওই পরিবারটি অন্য রাজ্য থেকে আসায় তাদের রেশন কার্ড ছিল না। কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান পাল্টা বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশ, বিহার বা পশ্চিমবঙ্গের বহু লোক কাজের সূত্রে দিল্লিতে থাকেন। তার মানে এই নয় যে, তাঁরা রেশন পাবেন না।’’ আপের দাবি, তাঁদের ঘরে রেশন পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্প কেন্দ্রের গড়িমসিতেই আটকে আছে। রামবিলাসের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘যাঁদের রেশন কার্ডই নেই, তাঁদের ঘরে কী ভাবে রেশন পৌঁছে দেবেন?’’

আরও পড়ুন: অনাহারে শিশু মরে, নেতারা সস্তায় জিভে জল আহারে

রেশন কার্ড ঘিরে উঠেছে দুর্নীতির অভিযোগও। মান্ডাবলীর পণ্ডিত চকের দোতলা বাড়িটির ভাড়াটে তিরিশটি পরিবারের প্রায় কারও রেশন কার্ড নেই। এক ভাড়াটে অশোক কুমার বলেন, ‘‘রেশন কার্ড বানাতে ৫০০ টাকা ঘুষ চেয়েছিল। কোথা থেকে দেব?’’ অনেকে অগ্রিম টাকা দিয়েও রেশন কার্ড পাননি দেখে পিছিয়ে যান সরিতা দেবী বা দীপকের মতো অনেকে। ফলে গুদামে খাদ্যশস্য পচলেও সরিতাদের ঘরে পৌঁছয় না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Starvation Delhi Death দিল্লি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE