ছত্তীসগঢ়ের বস্তার অঞ্চলে আত্মসমর্পণ করলেন ৩০ জন মাওবাদী। তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করছে ছত্তীসগঢ় সরকার। বুধবার এমনটাই জানিয়েছেন সেই রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী বিজয় শর্মা। বস্তার অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ে ধারাবাহিক ভাবে মাওবাদীদমন অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। সমান্তরাল ভাবে মাওবাদীদের আত্মসমর্পণেরও সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে বুধবার ছত্তীসগঢ়ের উপমুখ্যমন্ত্রী জানান, বিজাপুর জেলা থেকে ৩০ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছেন।
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে উপমুখ্যমন্ত্রী বিজয় বলেন, “সরকারের পুনর্বাসন নীতি, আধিকারিকদের সাহসিকতা এবং সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পের জন্যই মাওবাদীরা আত্মসমর্পণ করেছেন।” গত সপ্তাহে বস্তারেরই নারায়ণপুর জেলায় দুই মহিলা-সহ আট জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেন। তাঁদের মাথার মোট দাম ছিল ৩০ লক্ষ টাকা। তার আগে গত জুলাইয়ের শেষের দিকে বস্তারের পাঁচ জেলা মিলিয়ে ৬৬ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেন। ওই ৬৬ জনের মধ্যে ৪৯ জনের মাথার উপর মোট দাম ছিল ২ কোটি ২৭ লক্ষ টাকা।
আরও পড়ুন:
মাওবাদীদের হিংসার পথ থেকে সরিয়ে সমাজের মূল স্রোতে ফেরানোর জন্য দীর্ঘ দিন ধরেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ছত্তীসগঢ় সরকার। গত বছর সেই লক্ষ্যে ছত্তীসগঢ় পুলিশ ‘নিয়া নার নিয়া পুলিশ’ (আমাদের গ্রাম, আমাদের পুলিশ) প্রচার কর্মসূচি শুরু করেছিল। তার আগে ২০২০ সালের জুনে শুরু হয়েছিল ‘লোন ভারাতু’ (গোন্ড ভাষায় যার অর্থ ‘তোমার বাড়ি ফিরে যাও’) পুনর্বাসন কর্মসূচি।
ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাই গত মার্চে ‘নকশাল আত্মসমর্পণ এবং আক্রান্তদের পুনর্বাসন নীতি ২০২৫’ ঘোষণা করেছেন। আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের পুনর্বাসন, চাকরি, আর্থিক সহায়তা এবং আইনি সুরক্ষা প্রদান করার মতো নানা বিষয় রয়েছে ওই প্রকল্পে। নতুন আত্মসমর্পণ নীতিতে মাওবাদী সংগঠনের রাজ্য কমিটি, আঞ্চলিক কমিটি, কেন্দ্রীয় কমিটি এবং পলিটব্যুরোর সদস্যদের মতো উচ্চপদস্থ ক্যাডারদের পাঁচ লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়া হচ্ছে। অন্য দিকে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়ে দিয়েছেন, ২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে মাওবাদীদের নির্মূল করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। সেই মতো মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে ধারাবাহিক অভিযান চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। এই আবহে সাম্প্রতিক সময়ে আত্মসমর্পণের ঢল নেমেছে বস্তারের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে।