নিজে ফরেন্সিক নিয়ে পড়াশোনা করছেন। প্রেমিককে খুনের পর দেহ লোপাট করতে সেই জ্ঞানই কাজে লাগিয়েছিলেন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী! তেল, ঘি, মদ ঢেলে জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন দেহ। ভেবেছিলেন, পুলিশ তাঁর খোঁজ পাবে না। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। দিল্লিতে ইউপিএসসি পরীক্ষার্থী যুবক-হত্যার তিন সপ্তাহ পর অবশেষে ২১ বছর বয়সি একত্রবাস সঙ্গীকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
চলতি মাসের শুরুতে দিল্লির গান্ধী বিহারের ফ্ল্যাটে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় রামকেশ মীনার দেহ। ৩২ বছর বয়সি ওই যুবক ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। অমৃতা চৌহান নামে ২১ বছরের এক যুবতীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল রামকেশের। দু’জনে লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অমৃতা ফরেন্সিক সায়েন্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। সেই জ্ঞান কাজে লাগিয়েই প্রেমিকের দেহ লোপাট করেন তিনি। জানা গিয়েছে, অমৃতাকে এই কাজে সহায়তা করেছিলেন তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক সুমিত কাশ্যপ এবং সন্দীপ কুমার নামে আরও এক যুবক। তিন জনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন:
জানা গিয়েছে, অমৃতা-সহ তিন জনই উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদের বাসিন্দা। সুমিত ও সন্দীপের সঙ্গে মিলে রামকেশকে খুনের পরিকল্পনা করেন অমৃতা। পরে এটিকে দুর্ঘটনা প্রমাণ করতে দেহে তেল, ঘি, মদ ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৬ অক্টোবর বাতানুকূল যন্ত্র বিস্ফোরণের খবর পেয়ে রামকেশের বাড়িতে পৌঁছোন পুলিশ ও দমকলকর্মীরা। আগুন নেভার পর তাঁরা অ্যাপার্টমেন্টের ভিতরে রামকেশের দগ্ধ দেহ দেখতে পান। শুরুতে দুর্ঘটনা মনে হলেও তদন্তে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ৫ অক্টোবর রাতে দুই মুখোশধারী ব্যক্তি ওই ফ্ল্যাটে প্রবেশ করছেন। রাত ৩টে নাগাদ, অর্থাৎ আগুন লাগার কিছু ক্ষণ আগে অমৃতাকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে যেতে দেখা যায় তাঁদের। এর পরেই অমৃতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধরা হয় বাকি দু’জনকেও।
পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে খুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন অভিযুক্তেরা। জানা গিয়েছে, প্রথমে তিন জন মিলে রামকেশকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন। তার পর দেহে তেল, ঘি এবং মদ ঢেলে দেওয়া হয়। সব শেষে একটি গ্যাস সিলিন্ডারের ভাল্ভ খুলে দিয়ে রামকেশের ল্যাপটপ, হার্ডডিস্ক এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যান তাঁরা। খোলা গ্যাস সিলিন্ডার থেকেই বিস্ফোরণটি ঘটে। আগুন ধরে যায় গোটা অ্যাপার্টমেন্টে। ইতিমধ্যে খোয়া যাওয়া জিনিসপত্রও উদ্ধার করেছে পুলিশ। কেন এমন ঘটালেন ওই যুবতী, তা জানতে তদন্ত চলছে।