Advertisement
E-Paper

‘ঈশ্বরের কাজ’! প্রতিশোধ নিতে মন্দিরে মন্দিরে চুরি এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির, দানবাক্স ভেঙে লুট করতেন টাকা

ছত্তীসগঢ়ের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি দুর্গ শহরে নিজের ঘাঁটি তৈরি করেছিলেন। গত এক দশক ধরে শহরের বিভিন্ন মন্দিরে চুরি করতেন তিনি। তবে কোনও গয়না নিতেন না, লুট করতেন শুধু নগদ।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২৫ ১৪:২৬
A HIV-infected man in Chhattisgarh targeted temple and steal money from there

—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

রাতের অন্ধকারে মন্দিরে ঢুকতেন। মুখ ঢাকা কাপড়ে। সন্তর্পণে পৌঁছে যেতেন মন্দিরের দানবাক্সের কাছে। তার পর সকলের নজর এড়িয়ে দানবাক্সের তালা ভেঙে লুটপাট চালাতেন। গয়না বা সোনার অলঙ্কারের দিকে কোনও ঝোঁক ছিল না তাঁর। চুরি করতেন শুধু টাকা। অবশেষে ধরা পড়ার পর তাঁর কৃতকর্মের জন্য আপসোস নেই বছর পঁয়তাল্লিশের ওই ব্যক্তির। তাঁর স্পষ্ট জবাব, ঈশ্বরের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতেই মন্দিরে চুরি করতেন। প্রতিশোধের কারণ শুনে হতবাক হয়ে যায় পুলিশও! ওই ব্যক্তির দাবি, তিনি এইচআইভি আক্রান্ত। আর তাঁর এই দুর্দশার জন্য ঈশ্বরই দায়ী!

ছত্তীসগঢ়ের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি দুর্গ শহরে নিজের ঘাঁটি তৈরি করেছিলেন। গত এক দশক ধরে শহরের বিভিন্ন মন্দিরে চুরি করতেন তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, ২০১২ সালে হামলার অভিযোগ সংক্রান্ত এক মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। জেলে থাকাকালীনই তাঁর শরীরের বাসা বাঁধে এইচআইভি ভাইরাস। এক বছর কারাগারে কাটিয়ে বার হওয়ার পরেও সমাজের মানিয়ে নিতে পারছিলেন না অভিযুক্ত। রোগের জন্য সমাজে অনেকেই তাঁর সঙ্গে দূরত্ব রাখতেন। কাজও ছিল না তেমন। বেকার ওই ব্যক্তি তাঁর পরিস্থিতির জন্য ঈশ্বরকে দায়ী করেন। ঠিক করেন, মন্দিরে মন্দিরে চুরি করবেন।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত চুরির কথা স্বীকার করেছেন। জানিয়েছেন, দুর্গ শহর এবং তার উপকণ্ঠে কমপক্ষে ১০টি মন্দিরে লুটপাট চালিয়েছেন তিনি। তবে তদন্তকারীদের অনুমান, আরও অনেকগুলি চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন অভিযুক্ত। প্রায় এক দশক ধরে সকলের চোখে ধুলো দিয়ে মন্দিরে মন্দিরে চুরি করতেন তিনি। তবে গত ২৩ অগস্ট দুর্গ শহরের উপকণ্ঠে এক জৈন মন্দিরে চুরি করতে গিয়েই ধরা পড়ে যান অভিযুক্ত।

মন্দিরের তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকেছিলেন অভিযুক্ত। তার পরে দানবাক্স খুলে টাকা নিয়ে চম্পট দেন। তবে পুলিশ তদন্তে নেমে পরের দিনই আটক করে অভিযুক্তকে। তার পর গ্রেফতারের পর আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেন। অভিযুক্ত পুলিশকে জানিয়েছেন, এইচআইভি আক্রান্ত হওয়ার পরই ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন তিনি। দুর্গের পুলিশ সুপার বিজয় আগরওয়াল ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’কে জানিয়েছেন, ঈশ্বরের বিরুদ্ধে ক্ষোভপ্রকাশ করতেই অভিযুক্ত মন্দিরে চুরি করতেন। চুরির টাকা দিয়ে তিনি একার সংসার চালাতেন।

চুরির টাকা দিয়ে একটি বাইকও কিনেছিলেন অভিযুক্ত, দাবি পুলিশের। বাইক কেনার আগে শুধু দুর্গ শহরের মন্দিরে চুরি করতেন। ইদানীং সেই জাল আরও বিস্তৃত করেন অভিযুক্ত। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, চুরির জন্য প্রথমে কোনও একটি মন্দির বেছে নিতেন। তার পর দিনরাত চলত ‘রেইকি’। তার পর সব আটঘাট বেঁধে চুরির দিন ঠিক করতেন অভিযুক্ত। পুলিশ জানিয়েছে, কেউ যাতে তাঁকে ধরতে না পারেন, সেই জন্য কখনও গয়না চুরি করতেন না অভিযুক্ত। সিসিটিভিতে যাতে ধরা না পড়েন সেই জন্য মূলত অলিগলি ব্যবহার করতেন। তবে শেষরক্ষা হল না। ধরা পড়ে গেলেন। তবে অভিযুক্তের মানসিক স্থিতিশীলতা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে পুলিশের।

Chhattisgarh Theft temple
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy