কালীপুজোর বিসর্জনের সময়ে বাজছিল সাউন্ড বক্স। রাত হয়ে যাওয়ায় সাউন্ড বক্স বন্ধ করতে বললেন খোদ স্থানীয় থানার ওসি। অভিযোগ, পরে নিজেই সাউন্ড বক্স বন্ধ করে ক্লাব সদস্যদের হাতে বেধড়ক মার খেয়েছেন তিনি। তাঁকে মারধরে অভিযুক্তেরা গ্রেফতার হলেও বিকেলের মধ্যে জামিন পেয়েছে। ফলে বিজেপি জমানায় ত্রিপুরার আইনশৃঙ্খলা ও পুলিশের অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।
পুলিশ জানিয়েছে, গত কাল দক্ষিণ জেলার বিলোনিয়া থানায় ওরিয়েন্টাল ক্লাবের কালীপুজোর বিসর্জন ছিল। সেই বিসর্জনের শোভাযাত্রার সময়ে চলছিল জলসা। বাজানো হচ্ছিল ডি জে সাউন্ড বক্স। রাত হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় থানার ওসি শিবুরঞ্জন দে জলসা ও সাউন্ড বক্স বন্ধ করতে বলেন। উত্তেজিত হয়ে পড়ে ক্লাবের সদস্যেরা। তার পরে ওসি নিজেই অস্থায়ী মঞ্চে উঠে সাউন্ড বক্স বন্ধ করে দেন। অভিযোগ, তার পরেই ক্লাবের সদস্যেরা ওসি-কে টেনে মাটিতে ফেলে মারধর শুরু করে। এই ঘটনার ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে (আনন্দবাজার ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি)।
পরে খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের অধীনে বিরাট পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে ওসি-কে উদ্ধার করে।
রাজ্য পুলিশের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রাজদীপ দেব জানান, এই ঘটনায় পুলিশ বিলোনিয়া থানায় একটি মামলা করে (মামলা নম্বর ৬৩/২৫)। রাজদীপ জানান, পরে পুলিশ ঘটনায় অভিযুক্ত সাত জনকে গ্রেফতার করে। তাদের মধ্যে রয়েছে ক্লাব সভাপতি শ্রীবেশ সেন, ক্লাব সম্পাদক বিজয় বিশ্বাস, সুব্রত দেবনাথ, লিটন দেবনাথ, আদিত্য দত্ত, লিটন হাজারী, অলক বণিক। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৩২/১১৭(২)/১২১/(২)/৩২৪(২) /১৯১(২)/৩(৫) ধারা অনুযায়ী মামলা করা হয়েছে।
পরে তাদের বিলোনিয়া ফার্স্ট ক্লাস ম্যাজিস্ট্রেটের কোর্টে পেশ করা হয়। কিন্তু বিকেলে জামিন পায় অভিযুক্তেরা। সিপিএমের দক্ষিণ জেলার সম্পাদক তাপস দত্তের দাবি, ঘটনায় অভিযুক্তেরা সকলেই শাসক দলের মাতব্বর। পুলিশের উপরে ধারাবাহিক আক্রমণ তাদের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে।
কংগ্রেস নেতা সুদীপ রায়বর্মণের মতে, পুলিশ বিরোধীদের সামনে সিংহের মতো গর্জন করে। কিন্তু শাসক দল ও তার সহযোগী দলের সামনে তাদের ভূমিকা করুণ। এক জন পুলিশকর্মী দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আক্রান্ত হলেন। কিন্তু ধৃতেরা জামিন পেয়ে গেল। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘বিজেপির ডাবল ইঞ্জিন সরকার কিছু বলবে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে?’’ বিজেপি মুখপাত্র সুনীত সরকারের বক্তব্য, ‘‘আইন আইনের পথে চলবে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)