বিয়ের মাত্র ৪৫ দিনের মধ্যে স্বামীকে খুন করার অভিযোগ উঠল এক মহিলার বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় ওই মহিলা ছাড়াও আরও দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি বিহারের ঔরঙ্গাবাদের।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২৪ জুন নবিনগর থানা এলাকায় দুই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি প্রিয়াংশু সিংহকে গুলি করে খুন করেন বলে অভিযোগ। সেই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়। মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। হত্যারহস্য কিনারা করতে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে পুলিশ।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ঘটনার দিন উত্তরপ্রদেশের চান্দৌলিতে এক ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন প্রিয়াংশু। বাড়ি ফেরার পথে ঔরঙ্গাবাদের লেম্বোখাপ গ্রামের কাছে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় আততায়ীরা। রক্তাক্ত অবস্থায় প্রিয়াংশুকে দেখতে পেয়ে স্থানীয়েরা খবর দেন পুলিশকে। পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রিয়াংশুর হত্যার কিনারা করতে তাঁর পরিবারের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। সূত্রের খবর, জিজ্ঞাসাবাদ-পর্বের সময়েই বাড়ি ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করেন প্রিয়াংশুর স্ত্রী গুঞ্জা সিংহ। তখনই তাঁর উপর সন্দেহ পড়ে পুলিশের। তাঁকে আটক করে জেরা শুরু করেন বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) সদস্যেরা। জানতে পারেন, জীবন সিংহ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে গুঞ্জার। সম্পর্কে জীবন ওই মহিলার কাকা। বিয়ের পরেও সম্পর্ক ভাঙেনি দু’জনের। প্রিয়াংশুকে বিয়ে করার আগে আরও বেশ কয়েকটি প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছিলেন গুঞ্জা।
আরও পড়ুন:
পুলিশি জেরায় স্বামীকে খুনের পরিকল্পনা করার কথা স্বীকার করেন গুঞ্জা। পুলিশকে জানান, তাঁর কাকার নির্দেশেই ঝাড়খণ্ডের দুই ব্যক্তিকে খুন করার জন্য ভাড়া করেছিলেন। সেই সূত্র ধরে ঝাড়খণ্ডের গাডোয়ার থেকে দুই আততায়ীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতেরা জয়শঙ্কর চৌবে এবং মুকেশ শর্মা। পুলিশ আরও জানতে পারে, জীবনও ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। বিয়ের পরেও তাঁর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছিলেন গুঞ্জা। তাঁদের ফোন কলের রেকর্ড ঘেঁটে এই তথ্য উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ জানিয়েছে, বিয়ের পর জীবনের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে সমস্যা হচ্ছিল গুঞ্জার। তাঁদের সম্পর্ক ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে ছিলেন তিনি। সেই কারণেই দু’জনে মিলে প্রিয়াংশুকে খুনের পরিকল্পনা করেন। ভাড়া করা হয় ‘শুটার’। সেই টাকাও দেন জীবন। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেফতার করা হলেও অন্যতম অভিযুক্ত জীবন পলাতক।