শুধু কর্নাটকেই নয়, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে হারাতে তাঁর নয়াদিল্লি কেন্দ্রে বৈধ ভোটারদের নাম কাটা হয়েছিল বলে আজ ফের অভিযোগে সরব হলেন আম আদমি দলের প্রাক্তন বিধায়ক সৌরভ ভরদ্বাজ। তাঁর কথায়, ‘‘রাহুল গতকাল যা বলেছেন, আপ নেতৃত্ব দিল্লি ভোটের আগে সেই একই অভিযোগ করেছিলেন। নয়াদিল্লি-সহ দিল্লির একাধিক কেন্দ্রে পরিকল্পিত ভাবে ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে সময়ে পাশে পাওয়া যায়নি কংগ্রেস-সহ অন্য বিরোধীদের।’’
এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচনে আপকে হারিয়ে ক্ষমতায় ফেরে বিজেপি। নয়াদিল্লি কেন্দ্রে বিজেপির প্রবেশ বর্মার কাছে ৪,০৮৯ ভোটে হেরে যান কেজরীওয়াল। সে সময়ে বৈধ ভোটারদের নাম বাদ পড়া নিয়ে সরব হয়েছিলেন আপ নেতৃত্ব। এখন রাহুল গান্ধী ভোট চুরি নিয়ে সরব হওয়ায় আজ ফের পুরনো অভিযোগ তুলেছেন সৌরভ। তাঁর কথায়, ‘‘গত বছর লোকসভা নির্বাচন থেকে বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যে নয়াদিল্লি কেন্দ্রের ভোটার ১.৪৮ লক্ষ থেকে কমে হয় ১.০৬ লক্ষ। তারপরেও বিধানসভা ভোটের আগে তালিকা থেকে আরও ৬,১৬৬টি নাম বাদ পড়ে। অজানতে নাম বাদ পড়াদের অধিকাংশই ওই কেন্দ্রের স্থায়ী বাসিন্দা।’’ সৌরভদের দাবি, কমিশন ওই নাম বাদ না দিলে, ভোটের ফল অন্যরকম হতে পারত।
সে সময়ে তালিকা থেকে স্থায়ী বাসিন্দাদের নাম বাদ পড়ার কারণ খতিয়ে দেখতে ফৌজদারি তদন্তের দাবি জানিয়ে তৎকালীন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমারকে চিঠি দিয়েছিলেন দিল্লির তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী অতিশী। তদন্তের অগ্রগতি জানতে গত মাসে তথ্যের অধিকার আইনে আবেদন করেন আপ নেতৃত্ব। সৌরভের দাবি, অতিশীর অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের হয়েছে কি না, বিষয়টি অন্য কোনও দফতরে পাঠানো হয়েছে কি না, কিংবা কারা বিষয়টি দেখছেন সে সম্পর্কে কিছুই জানায়নি কমিশন। সে সময়ে সহকারী নির্বাচন কমিশনার ছিলেন জ্ঞানেশ কুমার। যিনি বর্তমানে দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। সৌরভ আজ রাজীব ও জ্ঞানেশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘‘তদন্ত না করেই ফাইল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এটি সংগঠিত চক্র। যারা আমাদের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করারজন্য সক্রিয়।’’
সৌরভের অভিযোগের জবাবে আজ নির্বাচন কমিশন এ বছরের ১৩ জানুয়ারি তৎকালীন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অতিশীকে লেখা একটি চিঠি সমাজমাধ্যমে ভাগ করে নিয়েছে। যাতে বলা রয়েছে, গত ৮ জানুয়ারি আপের একটি প্রতিনিধি দল ভোটার তালিকায় নাম বাদ দেওয়া বা নাম জোড়া, আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনের মতো অভিযোগ জানিয়ে কমিশনের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। যার ভিত্তিতে দিল্লির নির্বাচন কমিশনারকে অভিযোগগুলি তদন্ত করে দেখতে বলে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। দিল্লির নির্বাচন কমিশনার গত ১০ জানুয়ারি রিপোর্ট দিয়ে জানান, যে পদক্ষেপগুলি করা হয়েছে তা কমিশনের নিয়ম মেনেই করা হয়েছে। কমিশনের দাবি, তালিকা প্রস্তুতির প্রতিটি পর্বে যথাসম্ভব স্বচ্ছতা বজায় রাখার চেষ্টা করা হয়। যাতে জনতা তালিকা খতিয়ে দেখতে পান এবং প্রয়োজনে নিজেদের আপত্তি জানাতে পারেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)